যে আট কারণে বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদ

পিবিএ ডেস্কঃ আজকালকার দিনে প্রেমিক-প্রেমিকা বা স্বামী-স্ত্রীয়ের মধ্যে প্রেম যতটাই বেশি, বিচ্ছেদও ঠিক ততটাই। আইনত বিয়ের সংখ্যার চেয়েও বেড়ে গিয়েছে আইনত বিচ্ছেদের সংখ্যা। হুট করে যেমন প্রেম আসে তেমনই প্রেমে উদাসীনতা আসতেও সময় লাগে না। সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বেশিরভাগ দম্পতির মধ্যেই বিয়ের আগে যতটা প্রেম ছিল বিয়ের পর তার সিংহভাগ থাকছে না। কাজের চাপে এসেছে যৌনজীবনের প্রতি অনীহা। এছাড়াও আজকাল কেউই আপসে রাজি নন। অতএব পান থেকে চুন খসলেই সোজা বিচ্ছেদ। এই প্রজন্মে বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে মূল কারণগুলি হল-

ভালোবাসার অভাবঃ ৫০ শতাংশ ডিভোর্সের ক্ষেত্রে মূল কারণ হল ভালোবাসার অভাব। সবটা বাইরে থেকে দেখনদারি দিয়ে হয় না। বেশিরভাগ সময় যুগলের মধ্যে এই টানটাই থাকছে না। আদালতে গিয়ে তাঁরা বলছেন স্বামীর প্রতি বা স্ত্রীয়ের প্রতি কারোর কোনও রকম ফিলিংস নেই। ফলে বছরের পর বছর এক ছাদের নীচে থাকা সম্ভব নয়।

নিজেদের মধ্যে ভুলবোঝাবুঝিঃ ৫০ শতাংশ ডিত্ভোর্স হয় নিজেদের জেদ আর ভুল বোঝাবুঝিতে। কেউ যখন মুখোমুখি পরস্পরের সঙ্গে কথা বলতে না চান বা নিজের জেদ ধরে বসে থাকেন তখন সেই সমস্যা সমাধান হওয়ার নয়। দুজনেই দুজনের ভুল ধরতে ব্যস্ত। শোধরাতে নয়।

সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধা নেইঃ একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা না থাকলে, সহানুভূতি না থাকলে সেই সম্পর্কের কোনও জোর থাকে না। এমনকী প্রয়োজনে সহানুভূতিরও প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের মতে ভালোবাসার থেকেও জটিল এবং কঠিন হল সম্মান।

মনের মিলঃ দুজন মানুষ কখনই এক হন না। কেউ পোলাও ভালোবাসেন তো কেউ বিরিয়ানি। কিন্তু নিজের মধ্যে কিছুটা সামঞ্জস্য অবশ্যই থাকা প্রয়োজন। মূল্যবোধ এতদিন এক ছিল, হঠাৎ আজ আলাদা এরকম হলে খুব মুশকিল।

শারীরিক দুর্বলতাঃ বিয়ের পরে সঙ্গীর শারীরিক দুর্বলতা প্রকাশ পেলে সেখান থেকেই সমস্যা দেখা দেয়। অ্যারেঞ্জ ম্যারেজের ক্ষেত্রে অন্য একটা সমস্যাও থাকে। একেবারে অপরিচিত একজন মানুষের সঙ্গে কিছু প্রাথমিক অস্বস্তি থাকা একেবারে স্বাভাবিক। কিন্তু এই বিষয়টিই অনেক সময়ে দম্পতিদের মধ্যে ব্যবধান তৈরি করে দেয়।

প্রত্যাশা পূরণের অভাবঃ প্রত্যেকটি ছেলে বা মেয়ের মনেই আদর্শ স্ত্রী বা স্বামী সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি থাকে বিয়ের আগে থেকেই। বিয়ের পর সেই ধারণার সঙ্গে বাস্তবের স্ত্রী বা স্বামীটির মিল পাওয়া যায় না অধিকাংশ ক্ষেত্রেই। সেখান থেকেই তৈরি হয় প্রত্যাশা অপূর্ণ থাকার একটি হতাশা।

ধৈর্যের অভাবঃ বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বিয়ের পর স্বামীর অথবা স্ত্রীর কোনো একটি বিশেষ অভ্যাস বা জীবনযাপনের কোনো একটি দিক অন্যজনের বিরক্তির কারণ হচ্ছে। স্বামী হয়তো অফিস বেরনোর আগে ভিজা তোয়ালেটা রেখে যাচ্ছেন বিছানার উপর, সেটা স্ত্রীর পছন্দ নয়। আবার স্ত্রী হয়তো প্রতিদিন বাথরুমে সুইচটা অফ করতে ভুলে যাচ্ছেন, সেটা পছন্দ নয় স্বামীর। সেই নিয়েই বেঁধে যাচ্ছে ঝগড়া।

ক্যারিয়ার নিয়ে সমস্যাঃ বিয়ের পর ক্যারিয়ার আর পারিবারিক দায়িত্বের মধ্যে অনেক ক্ষেত্রেই দ্বন্দ্ব বেঁধে যায়। বিয়ের পর স্বামী আশা করেন, স্ত্রী চাকরি ছেড়ে পরিবারকে সময় দেবেন। স্ত্রী-ও আশা করেন স্বামীর কাছে তার অফিসের থেকে বেশি প্রাধান্য পাবেন তিনি নিজে। সেই আশা পূরণ না হলেই দেখা দেয় সমস্যা

ডিভোর্স মোটেই সোজা ব্যাপার নয়। হেসে পুরোটা সামলে দেওয়া যাবে এমনটাও ভাবা ভুল। যে মানুষটার সঙ্গে এতদিন ঘর করলেন তাঁর সঙ্গে প্রচুর খারাপ স্মৃতি, কিন্তু ভালোলাগার কিছু মুহূর্তও অবশ্যই থাকে। তাই একবার ভাবুন। নিজের জন্য, পরিবারের জন্য। কারণ কোন সম্পর্কের ইতি কাগজে কলমে হতে পারে, জীবনের খাতায় নয়।

পিবিএ/এমআর

আরও পড়ুন...