আইএস নিয়ে যে কথাগুলো সাক্ষাৎকারে বললেন শামিমা

পিবিএ ডেস্ক: পুত্রসন্তান জন্ম দেয়ার ঠিক কয়েক ঘণ্টার মধ্যে টেলিভিশন চ্যানেল স্কাই নিউজকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আইএসে যোগ দেয়া বৃটিশ যুবতী শামিমা বেগম। শনিবার তিনি সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে ওই পুত্রের মা হন। ওই সাক্ষাৎকারে শামিমা বলেছেন, তিনি আশা করেন বৃটিশ জনগণ তার প্রতি সহানুভূতি দেখাবে। কারণ, তিনি ২০১৫ সালে যখন বৃটেন থেকে পালিয়ে সিরিয়া গিয়েছিলেন তখন জানতেন না, সেখানে জীবন কেমন। তাকে ঘিরে বৃটেনে এখন জোরালো বিতর্ক। সেই শামিমা স্কাই নিউজকে যে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তা এখানে তুলে ধরা হলো:

প্রশ্ন: আইসিসের (আইএস) কোন বিষয়টি আপনাকে আকৃষ্ট করেছিল?
শামিমা: তারা আমাকে দেখিয়েছিল, তুমি কিভাবে যাবে। যাওয়ার পর তারাই আমার দেখাশোনা করবে। সেখানে আমি আমার নিজের একটি পরিবার পাবো।

আমি যা খুশি তাই করতে পারবো। আমাকে থাকতে হবে ইসলামিক আইনের অধীনে।

প্রশ্ন: যখন আপনি সিরিয়ার উদ্দেশে দেশ ছাড়লেন তখন আইসিস সেখানে কি করছিল তা কি জানতেন? তারা তো শিরশ্ছেদ করছিল?

শামিমা: এসব বিষয়ে আমি জানতাম। প্রথমে এটা মেনে নিয়েছিলাম। দেশ ছাড়ার ঠিক আগে আমি ধার্মিক হতে শুরু করেছিলাম। আমি শুনেছি, ইসলামে এটা (শিরোচ্ছেদ) অনুমোদিত।

প্রশ্ন: আপনার নাগরিকত্ব নিয়ে যে লড়াই চলছে সে বিষয়ে আপনার অনুভূতি কি?

শামিমা: আমি যে অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি তাতে মনে করি আমার প্রতি সহানুভূতি দেখানো উচিত বহু মানুষের। আমি তো জানতাম না কিসের ভিতর যাচ্ছি। আশা করি আমার ও আমার শিশু সন্তানটির জন্য আমাদের ফিরতে দেয়া হবে। এই শরণার্থী শিবিরে আমি চিরদিন থাকতে পারবো না।

প্রশ্ন: কিন্তু বৃটিশ সরকার ও নিরাপত্তা সার্ভিসগুলো মনে করছে আপনি অত্যন্ত বিপজ্জনক।

শামিমা: আমি যে বিপজ্জনক হবো এমন কোনোই প্রমাণ নেই তাদের কাছে। চারটি বছর আমি শুধুই একজন গৃহবধূ (হাউজওয়াইফ) ছিলাম। আমি এ সময়ে শুধুই ঘরের ভিতরে অবস্থান করেছি। আমার স্বামী ও পরে আমাদের সন্তানের দেখাশোনা করেছি। বিপজ্জনক বা ডেঞ্জারাস কিছুই আমি করিনি। আমি কখনো প্রপাগান্ডা চালাইনি। কখনো লোকজনকে সিরিয়া আসতে উৎসাহিত করিনি।

প্রশ্ন: আপনার পরিবার একটি আপিল করেছে। তাদের জন্য কি আপনার কোনো বার্তা আছে?

শামিমা: না। কিছুই বলার নেই। শুধু বলি, আমাকে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন। এই শরণার্থী শিবিরে আমি আমার শিশুটিকে বড় করতে চাই না। আমার ভয় হয়, সে এখানেই মারা যাবে।

প্রশ্ন: বৃটেনে ফিরে গেলে আপনি ও আপনার শিশুর জীবন কেমন হবে?

শামিমা: আমি জানি না সেখানে গেলে কেমন হবে আমার জীবন। আমি এটা জানি, বৃটেনে ফিরে গেলে আমার ওপর প্রচুর বিধিনিষেধ আসবে। আমি জানি না, তারা (সরকার) আমার সন্তানকে আমার কাছ থেকে নিয়ে নেবে কিনা। এটাই আমার সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার। আমি তো সিরিয়া ছাড়বো শুধু তার (সন্তান) জন্য। আমি শুধু তাকে একটি উন্নত জীবন দিতে চাই।

পিবিএ/এমটি/জেডআই

আরও পড়ুন...