যে কারণে শরীরে অস্বাভাবিক লোম হয়

পিবিএ ডেস্ক: চিকিৎসকের কাছে মাঝে মাঝেই অনিয়মিত মাসিক, স্থূলতা আর শরীরের বিভিন্ন স্থানে অস্বাভাবিক হারে লোম বেড়ে যাওয়ার সমস্যা নিয়ে কিছু তরুণী বা কিশোরী আসে সমাধান চাইতে। এ সমস্যাটিকে চিকিৎসা শাস্ত্রের ভাষায় বলে পলিসিস্টিক ওভারীয়ান সিনড্রোম বা সংক্ষেপে পিসিও।

সবরকম বৈশিষ্ট্য সব পলিসিস্টিক রোগীর থাকে না। স্টেইন ও লেভেন্থাল ১৯৩৫ সালে সর্বপ্রথম এই সমস্যার কারণ ও প্রতিকার নিয়ে কাজ করেছেন বলে অনেকদিন পর্যন্ত এটা স্টেইন লেভেন্থাল সিনড্রোম নামেই পরিচিত ছিল।

বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী পলিসিস্টিক ওভারীর রোগীরা চারটি ভাগে ভাগ করা যায়ঃ

ফেনোটাইপ এ, ফেনোটাইপ বি, ফেনোটাইপ সি ও ফেনোটাইপ ডি।

পলিসিস্টিক ওভারী রোগীদের মেটাবলিক ও হরমোনজনিত আরও কিছু সমস্যা হতে পারে। যেমনঃ

১.স্থূলতা বা ওজন বেশি থাকা, কোলেস্টেরল-এর মাত্রা বেশি থাকা।

২. ইনসুলিন হরমোন ঠিকমতো কাজ করতে পারে না তাই ইনসুলিনের আধিক্য থাকা সত্ত্বেও রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া।

৩. থাইরয়েড ও প্রোলেকটিন হরমোনের তারতম্য।

৪. রক্তে ভিটামিন ডি ও ইনোসিটোল নামের উপাদান কমে যাওয়া।

চিকিৎসাঃ

পলিসিস্টিক ওভারীর চিকিৎসার জন্য কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হয়। যেমনঃ হরমোন, গাইনী, চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ও পুষ্টিবিদ এদের সবার সম্মিলিত মতামতেই এই ধরনের রোগীরা ভালো ফলাফল পেতে পারেন।

১. নিয়মিত হাঁটা, ওজন কমানো, উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার পরিহার ও টেনশনমুক্ত জীবনযাপন করতে হবে।২. যার এন্ড্রোজেন হরমোন বেশি আছে,তাদের সিপ্রোটেরন এসিটেট ও স্পাইরোনোলেকটন জাতীয় ওষুধ ভালো কাজ করবে।

৩. মেটফরমিন জাতীয় ওষুধ ইনসুলিনকে কাজ করতে সাহায্য করে ও ওজন কমায়।

৪. নিয়মিতভাবে মাসিক হওয়ার জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ভালো কাজ করে। এ ছাড়া আরও অনেক উপকার আছে পিলের।

৫. থাইরয়েড বা প্রোলেকটিন হরমোনের ওষুধ খেতে হবে প্রয়োজন বোধে।

৬. ভিটামিন ডি ও ইনোসিটোলের ঘাটতি পূরণ।

৭. যারা প্রেগন্যান্সি নিতে চান তাদের ডিম্বাণু তৈরি হওয়ার জন্য ওষুধ ও প্রয়োজনে ইনজেকশন দিতে হবে। ওষুধে কাজ না করলে ল্যাপারোস্কোপি করে ড্রিলিং করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। পলিসিস্টিক ওভারী রোগীদের অনেকদিন পর্যন্ত ডিম্বাণু তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ভালো থাকে।

ভবিষ্যতের জন্য ঝুঁকিঃ

১. পরবর্তী জীবনে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি থাকে।

২. দীর্ঘ সময় মাসিক বন্ধ ও স্থূলতার সমস্যা থাকলে পরবর্তী জীবনে জরায়ুর ক্যান্সার হতে পারে।

পিবিএ/ইকে

আরও পড়ুন...