রাজধানীর মৌচাক মার্কেটের একটি দোকানের ৫৯ ভরি সোনা চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক দোকান কর্মচারীসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গ্রেফতার চারজনের মধ্যে হিমেল মিয়া (২০) মৌচাক মার্কেটের আসিফ জুয়েলার্স নামের ওই গয়নার দোকানের কর্মচারী ছিলেন। বাকি তিনজন হলেন, ফারজানা আক্তার ইতি (২৭) তার স্বামী মাশফিক আলম (২৮) এবং ইতির বাবা আব্দুল জব্বার (৭০)।
সিআইডি বলছে, সোনা বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে আইফোন, জামাকাপড় কেনে চোর চক্র। এছাড়া বাসার ডিপ ফ্রিজ থেকে ১৯ ভরি সোনা, স্বর্ণ বিক্রির ৪ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
রোববার (১০ নভেম্বর) সিআইডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিআইজি এস এন মো. নজরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, অন্যদিনের মতো গত ৩০ অক্টোবর হিমেল কারখানায় যান স্বর্ণ আনতে। ৫৯ ভরি স্বর্ণের কয়েকটি বার নেওয়ার পর আর দোকানে যাননি তিনি। পরে মোবাইল বন্ধ পেয়ে সন্দেহ হলে রমনা থানায় অভিযোগ করেন আলিম উদ্দিন। ওই অভিযোগের বিষয়টি সিআইডিকেও জানান দোকান মালিক।
পরে সিআইডি তদন্ত করতে গিয়ে হিমেলের পূর্ব পরিচিত ইতি নামের এক নারীর সন্ধান পায়। সেই নারীর স্বামী মাশফিকও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তথ্য মেলায় তাকে গ্রেফতারে অভিযান শুরু হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার রাতে কক্সবাজার থেকে মাশফিককে গ্রেফতার করে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রাজধানীর রামপুরা মৌলভীটেকের বাসা থেকে ইতিকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ময়মনসিংহ থেকে গ্রেফতার করা হয় ইতির বাবাকে।
পরে ইতির বাবার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী হিমেলকে শনিবার গ্রেফতার করা হয় বলে জানান ডিআইজি নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, হিমেল জিজ্ঞাসাবাদে বলেছে, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ৫৯ ভরি স্বর্ণ চুরি করার পর ৩৩ ভরি স্বর্ণ নিজের কাছে রেখে ইতি ও তার স্বামীকে বলেন ২৫ ভরি তিনি চুরি করতে পেরেছেন।
পরে ইতির বাবা জানান, হিমেলকে গৌরীপুর এলাকায় তার ভাতিজার বাসায় লুকিয়ে রাখা হয়েছে। সিআইডি সেখান থেকে হিমেলকে গ্রেফতার করে।
ডিআইজি নজরুল ইসলাম বলেন, স্বর্ণ পাওয়ার পর তারা কিছু অংশ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে আইফোন, জামাকাপড় কেনেন। নগদ টাকাও কাছে রাখেন। পরে ইতির বাসার ডিপ ফ্রিজ থেকে ১৯ ভরি স্বর্ণ, স্বর্ণ বিক্রির ৪ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
তার স্বামীর কাছ থেকে ২৭ হাজার টাকা ও প্রায় ৬৩ হাজার টাকার একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। আর হিমেলের কাছ থেকে ৩৩ ভরির একটি স্বর্ণের বার এবং স্বর্ণ বিক্রির টাকায় কেনা প্রায় সোয়া লাখ টাকা দামের আইফোন জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান সিআইডি কর্মকর্তা নজরুল।