পিবিএ ডেস্ক: চিকিৎসকদের পেশাগত দিকগুলো তদারকি করে বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল বা বিএমডিসি।
বিএমডিসির চিকিৎসক নীতিমালায় চিকিৎসক ও রোগীদের সম্পর্কের কিছু নীতিমালা থাকলেও, যৌন হয়রানি বা নিপীড়নের ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোন নীতিমালা এখনো নেই।
কাউন্সিলের রেজিস্টার ডা. মোঃ জাহেদুল হক বসুনিয়া বিবিসি বাংলাকে বলছেন, “যৌন অসদাচরণের ব্যাপারে এখনো বিএমডিসির কোন নীতিমালা নেই।”
”এ ধরণের কোন অভিযোগ এখনো আমাদের কাছে আসেনি। তবে বর্তমান পরিস্থিতি দেখে নিজেদের তাগিদ থেকেই গত ২৫ তারিখে যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা ঠিক করবে, এ ধরণের পরিস্থিতি মোকাবেলায় কী করা হবে, কিভাবে করা হবে,” বলছেন মি. বসুনিয়া।
কিন্তু যেখানে শুধুমাত্র ডাক্তার ও রোগী থাকেন, সেখানে যখন এ ধরণের অপরাধের ঘটনা ঘটে, সেটা কিভাবে প্রমাণ করা হবে, কোন প্রক্রিয়ায় তদন্ত হবে, মানসিক বিশেষজ্ঞ থাকবে কিনা – সেসব এই কমিটি ঠিক করবে।
মি. বসুনিয়া বলছেন, ”অনেক সময় রোগীদের এমন সমস্যা থাকতে পারে যেখানে চিকিৎসককে হয়তো তাদের স্পর্শকাতর স্থান দেখতে বা স্পর্শ করতে হতে পারে। কিন্তু সেটা যাতে কোনক্রমেই যৌন হয়রানি বা অশালীন না হয়, শুধুমাত্র চিকিৎসার প্রয়োজনেই হয়, সেটা নিশ্চিত করার নির্দেশনাও তৈরি করতে হবে আমাদের।”
সেই নীতিমালা হলেও তখন তার আলোকে ব্যবস্থা নিতে পারবে কাউন্সিল।
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত তাদের কাছে যেসব অভিযোগ এসেছে, সেগুলো ভুল চিকিৎসা সংক্রান্ত। সেসব ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হয়ে থাকে।
বাংলাদেশের বিএমডিসির নীতিমালা কী আছে?
বাংলাদেশে চিকিৎসকদের তদারকি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের চিকিৎসকদের আচরণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, চিকিৎসক ও রোগীদের পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস রক্ষার ওপর চিকিৎসক পেশা অনেকাংশে নির্ভরশীল, সুতরাং সেখানে পেশাদারী সম্পর্ক রক্ষা করতে হবে।
এই সম্পর্ক যাতে কোনক্রমেই নষ্ট না হয়, সে বিষয়ে চিকিৎসকদের সতর্ক থাকতে হবে।
কোড অব প্রফেশনাল কন্ডাক্ট, এটিকেট এন্ড এথিকসের ৫.১.৩ এ বলা হয়েছে, রোগীদের গোপনীয় তথ্য প্রকাশ করা, অর্থনৈতিক বা অন্য কোনরকমের সুবিধা আদায় করা বা রোগী বা রোগীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কোনরকম রোমান্টিক বা যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা এই নীতি ভঙ্গের কারণ হবে।
এখানে আরো বলা হয়েছে, যে রোগী বা তার কোন স্বজনের সঙ্গে চিকিৎসকের পেশাদারী সম্পর্ক রয়েছে, তার সঙ্গে যেকোন ধরণের যৌন আচরণ অসদাচরণ বলে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে কাউন্সিল কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
অনেক সময় কাছাকাছি কাজ করার কারণে চিকিৎসক ও রোগীদের মধ্যে নির্ভরশীলতা তৈরি হতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে চিকিৎসককে সতর্ক থাকতে হবে, যেন সেটা অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ বা আস্থা ভঙ্গের পর্যায়ে না যায়। এ ধরণের কোন অভিযোগ যাতে না ওঠে, সেজন্য চিকিৎসকদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে।
কোন নারী রোগীকে যখন একজন পুরুষ চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন, সেখানে একজন নারী বা পুরুষ নার্সের উপস্থিতি থাকতে হবে।
কিন্তু এসব ভঙ্গ হলে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে, তা পরিষ্কার করা হয়নি এই নির্দেশনায়।
তবে ধর্ষণ বা গুরুতর অসদাচরণের জন্য প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ রয়েছে। থানা বা আদালতে মামলা করার মাধ্যমে ভুক্তভোগীরা প্রতিকার পেতে পারেন।
সূত্র: বিবিসি
পিবিএ/এএইচ