পিবিএ ডেস্ক: ক্যালিফোর্নিয়ার ফোর্ট ব্র্যাগের কাছে ম্যাক্যারিচার স্টেট পার্কে এক অদ্ভুত সমুদ্র সৈকত রয়েছে। গ্লাস বিচ নামে পরিচিত এই সমুদ্র সৈকত। এখানে গেলে আপনার মন ভরে যাবে নানা রঙের স্বচ্ছ পাথর দেখে। রঙিন পাথরগুলোর উপর সূর্যের আলো পড়ে চিকচিক করে আলোর প্রতিফলন এক স্বর্গীয় দৃশ্যের অবতারনা করে। যা দেখে আপনার চোখ ভরে যাবে।
বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ফোর্ট ব্র্যাগের বাসিন্দারা তাদের গৃহস্থালির আবর্জনা আর ইউনিয়ন লুম্বার কোম্পানির পরিত্যক্ত বস্তুসামগ্রি সৈকত ধারে ফেলে রাখে। এগুলোর মাঝে ছিলো কাঁচ, গৃহসরঞ্জাম আর পরিত্যক্ত যন্ত্রপাতিসহ নানা বর্জ। এরপর তারা এগুলোতে আগুন জ্বালিয়ে দেয় বর্জের পরিমান কমিয়ে ফেলতে।
বর্তমানে প্রচুর পর্যটক এই সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে যান। তবে সৈকত থেকে কোনো পাথর বা গ্লাসের টুকরা নেয়া সম্পূর্ণরূপে নিষেধ। গ্রীষ্মে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটকের ভিড় থাকে সৈকতে। প্রতিবছর এখানে গ্লাস ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করা হয়। পাওয়া যায় কাঁচের তৈরি নানা রকম আকর্ষণীয় পন্য।
১৯৯৮ সালে এই সমুদ্র সৈকত ব্যাক্তিমালিকানায় না রেখে জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয়। তবে তার আগে পাঁচ বছর ধরে এর উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করা হয়। ২০০২ সালের অক্টোবরে এই সৈকতকে ম্যাক্যারিচার স্টেট পার্কের আওতাভুক্ত করা হয়।
এই সব ময়লা আবর্জনা সমুদ্র সৈকতের পরিবেশ নষ্ট করে ফেলছে দেখে ১৯৬৭ সালে ক্যালিফোরনিয়া স্ট্যাট ওয়াটার রিসোর্সেস কন্ট্রোল বোর্ড এবং শহরের নেতারা এই অঞ্চলে মানুষ প্রবেশ ও ময়লা ফেলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতি সারিয়ে নিতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে শহর কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পর সমুদ্রের ঢেউ পরিষ্কার করে দেয় সৈকতকে আর জমে থাকা কাচের টুকরা, আর আর বর্জগুলো পুড়ে সংকুচিত হয়ে নানা রকম পাথরের মতো হয়ে গিয়েছিলো। ঢেউয়ে আঘাতে সেগুলোও মসৃণ হয়ে যায়। এখন দেখলে মনে হয় সমুদ্রতটে পড়ে আছে ছোট ছোট রঙিন সব পাথর, উজ্জ্বল ও স্বচ্ছ।
পিবিএ/ইকে