পিবিএ, রংপুর: কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক সরকারি ও বেসরকারি কলেজে উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে যে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন তার প্রতিবাদ এবং জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ তে অন্তর্ভুক্ত করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজ সমূহে বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত অনার্স ও মাস্টার্স কোর্সে শিক্ষকগণকে এমপিও প্রদানের দাবিতে মানববন্ধন ও রংপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক পরিষদ রংপুর জেলা কমিটি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর প্রেস ক্লাবের সামনে শত শত শিক্ষক এই কর্মসচীতে অংশ নেন।
সংগঠনটির রংপুর জেলা কমিটির সভাপতি আবু সাঈদ এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক, রাহাত পারভীন, মীরবাগ কলেজের রফিকুজ্জামান, সরওয়ার আলম হিরা, মাহিগঞ্জ কলেজের শেখ ওয়াজেদুর রহমান রাজু, শাফিউল ইসলাম, মাওলানা কেরামত আলী কলেজের শিক্ষক এরশাদুল হকসহ অনেকেই।
বক্তারা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি বর্তমান শিক্ষা বান্ধব সরকারের একজন যোগ্য,দক্ষ ও সাহসী প্রধানমন্ত্রী। আপনার দূরদর্শী সিদ্ধান্তে শিক্ষাক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে জটিলতা নিরসন করে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার লক্ষ্যে আপনার পরিকল্পনা সর্বমহলে প্রশংসনীয়।
তারা বলেন, উচ্চ শিক্ষার প্রসার ও সর্বজনীন করার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সরকারের অনুমোদন ক্রমে ১৯৯৩ সাল থেকে বেরসরকারি কলেজ সমূহে অধিভুক্তির মাধ্যমে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স পরিচালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে দেশে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মোট ২৯৩টি কলেজ জাতীয়করণ ও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অবশিষ্ট্য বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স শ্রেণিতে প্রায় তিন শিক্ষক কর্মরত আছেন। যেখানে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের প্রায় ৩,৫০,০০০ (তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষায় অধ্যায়ন করছে।
বক্তারা বলেন, গত ১৮ মার্চ কৃষিমন্ত্রী দেশে সরকারি-বেসরকারি কলেজে উচ্চশিক্ষা/অনার্স-মাস্টার্স কোর্স সম্পর্কে যে নেতিবাচক বক্তব্য দিয়েছেন তা অভনিপ্রেত, অনাকাক্সিক্ষত, দু:খজনক ও বিব্রতকর। তাঁর বক্তব্যে সমগ্র শিক্ষক সমাজ, পেশাজীবী ও আপামর জনতা মর্মাহত হয়েছেন। আমরা তাঁর বক্তব্যের তিব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। আশাকরি তিনি তাঁর বক্তব্য প্রত্যাহার করবেন এবং ভবিষ্যতে মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্বশীল বক্তব্য প্রদান করবেন।
তারা বলেন, বেসরকারি মাদ্রাসা সমূহে ফাজিল শ্রেণি/অনার্স, কামিল শ্রেণি/মাস্টার্স সমমানের শিক্ষকগণ এমপিওভুক্ত হতে পারেন কিন্তু আমরা বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স শ্রেণির শিক্ষকগণ জনবল কাঠামো না থাকায় এমপিওভুক্ত হতে পারছিনা, যা সত্যিই বেদনাদায়ক ও কষ্টকর। অথচ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে শিক্ষা বিষয়ক পরিচালক, জনাব আবুল কালাম শামছুদ্দিন স্বাক্ষরিত পরিচয়পত্রযারস্মরকনং-০৩.০৭৪.৩৭০৪৮.০০.০০১.২০১৫-১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫। যাতে অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি করণে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শিক্ষা সচিবকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে কিন্তু তা আজও বাস্তবায়ন করা হয়নি।
তাই আমরা, বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষকগণকে জনবল কাঠামোতে অর্ন্তভুক্ত করে এমপিও প্রদানের জন্য আগামী বাজেটে অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা করে আপনার মহৎ হৃদয়ের এবং “মাদার অফ হিউম্যানিটি” হিসেবে শিক্ষক সমাজের নিকট আজীবন উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে থাকবেন।
পরে তারা রংপুর জেলা প্রশাসক এনামুল হাবীব এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাবরে স্মারকলিপি প্রধান করেন ।
পিবিএ/হক