পিবিএ,রংপুর: রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার কাফ্রিখাল গ্রামের স্বামী ওয়াসিম মিয়ার দেয়া আগুনে দগ্ধ গৃহবধু তন্বী আখতার চারদিন পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। রোববার সকালে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে তিনি মারা যান।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক ডা. রুপশ্রী পালবৌ জানান, মিঠাপুকুরের ওয়াহেদুজ্জামান ওয়াসিমের স্ত্রী তন্বী আখতার(২২) কে গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। তার শরীরের শতভাগ পুড়ে গিয়েছিল। প্রয়োজনীয় সকল চিকিৎসা দেয়ার পরেও থাকে বাঁচানো গেলে না।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কাফ্রিখাল গ্রামের আবুল হোসেনের পুত্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ওয়াহেদুজ্জামান ওয়াসিম মিয়ার সাথে ৬ বছর আগে খোর্দ্দ মহদীপুর গ্রামের আবদুর রশিদের মেয়ে তন্নী আখতারের (২৪) প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে হয়। তাদের ৩ বছর বয়সি তামিম নামের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে তন্নীকে নির্যাতন করে আসছে স্বামী ও শ^শুড়বাড়ির লোকজন। সম্প্রতি ওয়াসিম এক লাখ টাকা আনার চাপ দেয় তন্নীকে। কিন্তু তন্বী টাকা আনতে না পারায় গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তন্নীকে বেধড়ক মারপিট করে। এরপর তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় স্বামী ও শ^শুর বাড়ির লোকজন। আশপাশের লোজন মুমূর্ষ অবস্থায় তন্নীকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করে। এসময় তার শিশু পুত্রও অগ্নিদগ্ধ হয়।
তন্বীর মা শাহনাজ জানান, ছয় বছর আগে তার মেয়ে পালিয়ে গিয়ে ওয়াহেদুজ্জামান ওয়াসিমকে বিয়ে করে। এরপর থেকে মেয়ের ওপর যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক নির্যাতন করতো। বৃহস্পতিবার গায়ে আগুন দিয়ে তাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। চারদিন পর আমার মেয়ে মারা গেলো। তিনি বলেন আমি জামাই ও তার পরিবারের লোকজনের ফাঁসি চাই।
তন্বীর শাশুড়ি রওশন আরা জানান, পারিবারিক কলহের জেরে আমার ছেলের বৌ শরীরের ডিজেল দিয়ে আগুন দিয়েছে।
মিঠাপুকুর থানার ওসি জাফর আলী বিশ্বাস জানান, এ ঘটনায় তন্বীর চাচা আবদুল মতিন বাদি হয়ে মিঠাপুকুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় পারিবারিক কলহের জেরে তন্বীর শরীরে আগুন দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। শুক্রবার সকালে ওয়াসিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পিবিএ/এসআই/হক