পিবিএ ডেস্ক: দয়াময় প্রভুর বিশেষ কল্যাণে রমজানের প্রথম দশক অতিবাহিত করে প্রবেশ করতে যাচ্ছি দ্বিতীয় দশকে। রমজান মাসের অন্যতম নেয়ামত হচ্ছে গোনাহ মাফ ও আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমাপ্রাপ্তি। জানি না প্রথম দশকে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে আমরা কতটা আল্লাহ তাআলার রহমত লাভ করতে পেরেছি। এখন উচিত হবে রমজানের অবশিষ্ট দিনগুলোতে অনেক বেশি ইবাদত, বেশি বেশি তওবা, ইসতেগফার এবং দোয়ায় রত হওয়া।
কেননা রমজান এমন একটি মাস যে মাসে আল্লাহ বান্দার ক্ষমা প্রার্থনার অপেক্ষায় থাকেন। এ মাস মহান রাব্বুল আলামিনের কাছ থেকে চেয়ে নেয়ার মাস। এ পবিত্র মাসে যে যত বেশি চাইতে পারে, আল্লাহ তাআলা তাকে তত বেশি দান করেন।
আল্লাহ তাআলা চান তার বান্দারা যেন তাদের দোষত্রুটির জন্য প্রথমে পরিপূর্ণভাবে তওবা করে। পরিপূর্ণ তওবার পর যেই বান্দা আল্লাহর দরবারে দোয়া করে, তবেই তিনি তার দোয়া গ্রহণ করে নেন।
তাই তো আল্লাহ তাআলা মুমিন বান্দাকে তওবাতুননাসুহা শিক্ষা দেন। এর ফলে আল্লাহ তাআলা তাদের গোনাহ মাফ করেন এবং তার সন্তুষ্টির জান্নাতে স্থান দেন। যাদের তওবা তিনি গ্রহণ করে নেবেন তাদের সামনে ও পেছনে নূর থাকবে আর তারা এ জন্য দোয়া করবে-
رَبَّنَا أَتْمِمْ لَنَا نُورَنَا وَاغْفِرْ لَنَا إِنَّكَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
উচ্চারণ : ‘রাব্বানা আতমিম লানা নূরানা ওয়াগফির লানা ইন্নাকা আলা কুল্লি শায়ইন কাদির।’
অর্থ: ‘হে আমাদের পভু! আমাদের জন্য আমাদের জ্যোতিকে পূর্ণ কর আর আমাদেরকে ক্ষমা কর। নিশ্চয় তুমি সব কিছুর ওপর সর্বশক্তিমান।’ (সুরা তাহরিম : আয়াত ৮)
পবিত্র কুরআনে এমন অনেক দোয়া রয়েছে যেগুলো পাঠ করে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে পারি। এখানে মাত্র কয়েকটি দোয়ার উল্লেখ করছি যা রমজানের এ দিনগুলোতে আমরা উঠতে-বসতে সবসময় করতে পারি এবং সন্তানদেরকে মুখস্ত করাতে পারি-
– رَبَّنَا اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ الْحِسَابُ
উচ্চারণ : ‘রাব্বানাগফিরলি ওয়ালি ওয়ালিদাইয়্যা ওয়ালিল মুমিনিনা ইয়াউমা ইয়াকুমুল হিসাব’
অর্থ: হে আমাদের পালনকর্তা! আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং সব মুমিনকে ক্ষমা কর, যেদিন হিসাব কায়েম হবে।’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৪১)
– رَّبَّنَا عَلَيْكَ تَوَكَّلْنَا وَإِلَيْكَ أَنَبْنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ – رَبَّنَا لَا تَجْعَلْنَا فِتْنَةً لِّلَّذِينَ كَفَرُوا وَاغْفِرْ لَنَا رَبَّنَا إِنَّكَ أَنتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
উচ্চারণ : ‘রাব্বানা আলায়কা তাওয়াক্কালনা ওয়া ইলায়কা আনাবনা ওয়া ইলায়কাল মাসির, রাব্বানা লা তাজ আলনা ফিতনাতাল লিল্লাযিনা কাফারু ওয়াগফির লানা রাব্বানা ইন্নাকা আনতাল আযিযুল হাকিম।’
অর্থ : হে আমাদের প্রভু-প্রতিপালক! তোমার ওপর আমরা ভরসা করছি ও তোমারই সমীপে আমরা ঝুঁকেছি এবং তোমার দিকে আমাদের শেষ প্রত্যাবর্তন হবে। হে আমাদের প্রভু-প্রতিপালক! যারা অস্বীকার করেছে তুমি আমাদেরকে তাদের জন্য পরীক্ষার কারণ করো না এবং তুমি আমাদেরকে ক্ষমা কর, হে আমাদের প্রভু! নিশ্চয় তুমিই মহাপরাক্রমশালী, পরম প্রজ্ঞাময়। (সুরা মুমতাহানা: আয়াত ৪-৫)
– وَقِهِمُ السَّيِّئَاتِ وَمَن تَقِ السَّيِّئَاتِ يَوْمَئِذٍ فَقَدْ رَحِمْتَهُ وَذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
উচ্চারণ : ‘ওয়াকিহিমুস সাইয়্যিআতি ওয়া মান তাকিস সাইয়্যিআতি ইয়াওমায়িযিন ফাকাদ রাহিমতাহু ওয়া যালিকা হুয়াল ফাওযুল আযিম’
অর্থ : আর তুমি তাদেরকে সর্বপ্রকার অনিষ্ট থেকে রক্ষা কর। প্রকৃতপক্ষে তুমি সেদিনের অনিষ্টসমূহ থেকে যাকে রক্ষা করবে তার প্রতি অবশ্যই কৃপা করবে। আর এটাই তো প্রকৃতপক্ষে মহা সফলতা। (সুরা আল মুমিন: আয়াত ৯)
হে দয়াময় প্রভু! রমজানের কল্যাণে আমাদের দোয়া গ্রহণ করে আমাদেরকে ক্ষমা কর। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে অধিক হারে দোয়া করার এবং এই দোয়াগুলোর তাৎপর্য অনুবাধনের শক্তি দান করুন। আমিন।
পিবিএ/এমএসএম