পিবিএ,রাবি (রাজশাহী) প্রতিনিধি: প্রায় ৩৪ বছর ধরে অনিশ্চয়তা নিয়ে দাড়িয়ে আছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) । নির্বাচন নিয়ে কথা উঠলে বারবারই বাড়ছে ধোঁয়াশা। এদিকে রাকসু না থাকায় ভবন রয়েছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সেগুলোর ব্যানারে আবৃত ।
রাকসু ভবনে জায়গা করে নেয়া সংগঠনগুলো হলো বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটি, অনুশীলন নাট্যদল, তীর্থক নাটক, সমকাল নাট্যচক্র, উদীচী, স্বনন, অরনি সাংস্কৃতিক সংসদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ড্রামা সোসাইটি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এডুকেশন ক্লাব ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি ।
দীর্ঘদিন অচলাবস্থায় পড়ে থেকে মুছে গিয়েছে ভবনের রাকসু নামটাও ,খসে খসে পড়ছে পলেস্তারা আর যেন শূন্য চোখে তাকিয়ে বলছে,
তোমরা রচিলে যারে
নানা অলংকারে
তারে তো চিনি নে আমি,
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান বলেন, “শিক্ষার্থীরা সবসময়ই রাকসু চেয়েছে, এখনও চায়। রাকসু নির্বাচন হলে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি তৈরি হবে, তাদের অধিকার নিয়ে কথা বলার সুযোগ তৈরি হবে। ফলে প্রশাসনকে তখন জবাবদিহিতার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। জবাবদিহিতার যে অনভ্যাস, সেটা চালু রাখতেই সম্ভবত প্রশাসন চায় না রাকসু নির্বাচন হোক।”
এদিকে রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর জানান, ছাত্র সংগঠনগুলো অনেকদিন ধরেই রাকসু সচলের দাবি জানিয়েছে কিন্তু প্রসাশন এব্যাপারে কোনো আগ্রহ দেখায়নি। অথচ রাকসু ফি প্রতি বছর নেয়া হচ্ছে এবং কোন খাতে ব্যায় করা হচ্ছে তা তারা জানাচ্ছেন না। রাকসুর নামে যে ফি’ টা নেয়া হচ্ছে তা শিক্ষার্থীদের কল্যাণে ব্যয় করার কথা ছিল এবং শুধু রাকসু নেতৃবৃন্দ এই টাকা ব্যবহার করতে পারে তবে প্রসাশন এই নিয়মগুলো মানছেন না। রাকসু অচল থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক চর্চা ও আন্দোলনগুলো বন্ধ হয়ে ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর একক আধিপত্য তৈরি হয়।
তিনি আরো বলেন, “প্রসাশন চায় না শিক্ষার্থীরা রাকসু সম্পর্কে জানুক শিক্ষার্থীরা এটাকে সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে জানছে। ভবনে কোনো নেমপ্লেট নেই । ভবনের ভিতরে নেতৃবৃন্দের তালিকা ও যেসব ডকুমেন্ট থাকার কথা ছিল সেগুলোও নেই প্রসাশন চায় রাকসু শব্দটিই মুছে যাক কিন্তু তারা প্রতি মাসে ফি নিচ্ছে বলে সেটি পারছে না। সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ টিএসসিসির দাবি আসছিলো অনেকদিন ধরেই রাকসু সচল হলে এই সংগঠনগুলোর নিজস্ব জায়গা হবে।”
এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য ড. সুলতান উল ইসলাম বলেন, “যে ফি আমরা রাকসু থেকে পাই তা সেই কোষাগারেই জমা থাকে এবং শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সহযোগিতায় দিয়ে থাকি।
এছাড়াও তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে অচল থাকা রাকসুকে সচল করতে হলে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে পরামর্শের মাধ্যমে একটা পর্যায়ে আসতে হবে। রাকসু কার্যকর করার জন্য প্রশাসন সবসময় সচেষ্ট ও আন্তরিক। প্রসাশন চায় রাকসু নির্বাচনটা হোক। রাকসু নির্বাচন না হওয়ায় যেমন বিশ্ববিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি দেশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কারণ এখান থেকেই তো ভবিষ্যতের নেতৃত্ব বের হবে।
১৯৬২ সালে রাকসু যাত্রা শুরু করে। এ পর্যন্ত ১৪ বার রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৯০ সালের পর থেকে সংগঠনটির সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।