পিবিএ,ঢাকা: র্যাব-২ মঙ্গলবার (৪ মে) মোহাম্মদপুরের বসিলা মধ্যপাড়া এলাকা থেকে সন্দেহভাজন মাদক পাচারকারী চক্রের সদস্য ক। মোঃ তারিকুল ইসলাম (২৩), পিতা-মোঃ আরকান মাল, খ। মোঃ সিনবাদ (২৩), পিতা-মোঃ শাহাদৎ হোসেন, গ। মোঃ মিম মিয়া (২২), পিতা-মোঃ আজগর আলী, ঘ। মোঃ ইমন (১৯), পিতা-মৃত আল আমিন এবং ঙ। মোঃ মনির (২৮), পিতা- মোঃ মানিককে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশীকালে তারা জানায় যে মূলতঃ ভাসমান বেদে দলের ছদ্মবেশ ধারণ করে তারা মাদক পাচার করে থাকে। এসময়ে তারা সাথে থাকা বহনযোগ্য রান্না করার টিনের চুলার ভিতরে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে আনা ইয়াবার কথা স্বীকার করে এবং রান্না করার চুলার নীচের অংশ কেটে তার ভিতর থেকে মোট ৭৭,০০০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। এসময় তাদের নিকট থেকে ছদ্মবেশ ধারণের সরঞ্জামাদি, রান্নার হাড়ি-পাতিল, বালতি, বহনযোগ্য ডিসপ্লে র্যাক এবং নানান ধরণের ইমিটেশন অলংকার উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক অনুসন্ধান ও জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামীরা পারস্পরিক যোগসাজশে নিয়মিত কক্সবাজারের সীমান্ত এলাকা ও সমুদ্র পথে বাংলাদেশে আসা ইয়াবা ট্যাবলেট রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে আসছিল। গ্রেফতারকৃত মাদক কারবারীরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়াতে অভিনব কায়দা হিসেবে বেদের ছদ্মবেশ ধারণ করে মাদক বহন করে নিয়ে আসত। মাদক পরিবহনের জন্য টিনের তৈরি সহজে বহনযোগ্য রান্না করার চুলার মধ্যে বিশেষ কায়দায় ইয়াবা লুকিয়ে তা আবার ঝালাই করে জোড়া লাগিয়ে দিত। তারা মাদকের চালান কক্সবাজার এলাকা থেকে রাজধানী ঢাকায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে কখনই মহাসড়ক ব্যবহার করত না।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরো জানায়, কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত আসার ক্ষেত্রে তারা মহাসড়ক ব্যবহার না করে বিকল্প হিসেবে গ্রামের ভেতরের রাস্তা দিয়ে বিভিন্ন ইজি বাইক/সিএনজি/টেম্পু ব্যবহার করে পথ পাড়ি দিত। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসার ক্ষেত্রে তারা চট্টগ্রাম সিটি গেটসহ বিভিন্ন স্থানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্ট এড়াতে ১ম ধাপে চট্টগ্রামের আনোয়ারা থেকে হাটহাজারী-মানিকছড়ি-গুইমারা-রামগড় হয়ে ফেনী আসতো। সেখান থেকে তারা নোয়াখালীর-চৌমুহনী-সোনাইমুরী এবং চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ হয়ে মতলব লঞ্চঘাট পর্যন্ত আসতো। ২য় ধাপে তারা সেখান থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় চড়ে মুন্সিগঞ্জ হয়ে বুড়িগঙ্গা নদী দিয়ে ঢাকার প্রবেশ করত। এতে করে তাদের ৪/৫ দিন অথবা কোন কোন সময় এক সপ্তাহ পর্যন্ত লেগে যেত বলে জানায়। এই দীর্ঘ সময় তারা বেদে’দের মতই জীবন-যাপন করত এবং সাধারণ মানুষের সন্দেহ দূর করতে পথের মাঝে বিভিন্ন মনিহারী দ্রব্য যেমন-চুড়ি, কড়ি, চুল বাধার ফিতা, শিশুদের কোমড়ে বাধার ঘন্টা, চেইন, সেইফটি পিন, বাতের ব্যথার রাবার রিং ইত্যাদি বিক্রি করতো। মাদক পরিবহনের ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এই ধরনের কৌশলের মুখামুখি ইতোপূর্বে কখনও হয়নি এবং তারা যে রুটটি ব্যবহার করছে তাও একেবারে নতুন বলা চলে। উপরোক্ত বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
পিবিএ/জেডএইচ