রাজধানীর

অলিগলিতে ওতপেতে সন্ধ্যা-ভোর পর্যন্ত ছিনতাই করে চক্রটি

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সাঁড়াশি অভিযানে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের ৩১ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। এসব চক্রের সদস্যরা ঈদ সামনে রেখে বড় ধরনের ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেছিল।

র‍্যাব জানায়, রাজধানীর বিভিন্ন অলিগলিতে ওৎপেতে থাকতো গ্রেফতার ছিনতাইকারীরা। সুযোগ পেলেই পথচারী, বাসযাত্রী, মোটরসাইকেল আরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে সর্বস্ব ছিনিয়ে নিতো। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তা, বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন এলাকায় তারা বেপরোয়া হয়ে ওঠতো। ছিনতাই কাজে বাধা দিলে নিরীহ পথচারীদের প্রাণঘাতী আঘাত করতেও দ্বিধা করতো না তারা।

বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) ভোর পর্যন্ত র‍্যাব-১ এর কয়েকটি আভিযানিক দল ছিনতাইকারী চক্রের এই সক্রিয় সদস্যদের গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. বোরহান (২৪), মো. ইমরান হোসেন (২৫), তুহিন (২২), মো. জাহিদুল ইসলাম মাহমুদ (২০), মো. শিপন হুসাইন (২৩), মো. আশিকুর রহমান আশিক (২১), মো. শাহ জালাল (২৬), মো. মিরাজ (২১), নুর নবী (২২), মো. আশিক (২০), মো. মেহেদী হাসান হৃদয় (২০), মো. শাকিল (২০), মো. আকবর আলী (২৪), মো. রাসেল খা (২৪), মো. রাসেল ব্যাপারী (২৮), মো. সুজন তালুকদার (২২), মো. বাবুল (২৪), টুকু মিয়া (২২), আব্দুল্লাহ (২২), মো. ফয়সাল (২৩), জহরুল মিয়া (২০), মো. পারভেজ (২৭), মো. আসিফ (২২), মো. নিশান উদ্দিন (৩০), মো. জুয়েল (৩৫), মো. বিজয় হোসেন (১৯), আবুল কাশেম (৪০), মো. শফিক উদ্দিন (২৫), মো. রানা (২৮), মো. মাহবুব (২৬) ও মো. শাকিল শেখ (২৫)।

এসময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত আটটি বিষাক্ত মলম, একটি কুড়াল সদৃশ দেশীয় অস্ত্র, দুটি লোহার রড, ১১টি ছুরি, তিনটি লোহা কাটার হ্যাকসো ব্লেড, ১০টি চাকু, চারটি গামছা, ছিনতাই করা ১৮টি মোবাইল ফোন এবং নগদ আড়াই হাজার টাকা জব্দ করা হয়।

বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) দুপুরে কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।

তিনি বলেন, গুলশান এলাকার ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতা মো. বোরহান, তার সহযোগী তিনজন। বনানী এলাকার ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতা শিপন হুসাইন ও নূর নবী এবং তাদের সহযোগী ৫ জন। ভাটারা এলাকার একটি ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতা মো. শাকিল, তার সহযোগী তিনজন এবং অন্য একটি ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতা সুজন তালুকদার, তার সহযোগী দুজন। বাড্ডা এলাকার ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতা মো. আব্দুল্লাহ, তার সহযোগী দুজন। টঙ্গী এলাকার একটি ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতা আব্দুল্লাহ, তার সহযোগী তিনজন এবং অন্য একটি ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতা মো. পারভেজ, তার সহযোগী দুজন। তুরাগ এলাকার ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতা মো. রানা, তার সহযোগী দুজন। তাদের নির্দেশে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা এসব এলাকায় ছিনতাই করতো।

র‍্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, ছিনতাই চক্রের সবাই স্বল্প শিক্ষিত ও অশিক্ষিত। তারা প্রত্যেকে মাদকাসক্ত ও দীর্ঘদিন ধরে ড্যান্ডি, ইয়াবা ও গাঁজাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক সেবন করে আসছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। তারা কেউ কেউ বাস/লেগুনার হেলপার, ওয়ার্কসপের শ্রমিক, দিনমজুর, টোকাই, মাছ/কাঁচামালের আড়তে কাজ করে। প্রত্যেকে নিজ নিজ কাজের ফাঁকে ছিনতাই কাজ চালিয়ে আসছিল বলেও স্বীকার করেছে।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, রাজধানীবাসী এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজধানীতে আসা যাত্রীরা যেন নিরাপদে ঈদের কেনাকাটা করে নির্বিঘ্নে স্বস্তির সঙ্গে বাড়ি ফিরতে পারে এ লক্ষ্যে ছিনতাইকারী, অজ্ঞানপার্টি এবং মলমপার্টি চক্রের বিরুদ্ধে র‍্যাব-১ এর সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।

আরও পড়ুন...