পিবিএ,ঢাকা: একাধিক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে রাজধানীর ভাটারা থানা এলাকা থেকে দেওয়ান রসুল হৃদয় (২৫) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে ভাটারা থানা পুলিশ। এ ঘটনায় ভাটারা থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় নির্যাতনের শিকার চার তরুণীর দেয়া জবানবন্দি গ্রহণ করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, তথাকথিত ফেসবুক বান্ধবীর প্রস্তাবে গত ১২ সেপ্টেম্বর গাজীপুরে পুলপার্টিতে যান ভুক্তভোগী এক তরুণী। সেখানেই সিরিয়াল ধর্ষক দেওয়ান রসুল হৃদয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন ফেসবুক বান্ধবী। এরপর ১৪ সেপ্টেম্বর হৃদয় ভাটারায় নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন দুজনকে। ১৬ সেপ্টেম্বর মেয়েটিকে ধর্ষণ করে হৃদয়। ২০ সেপ্টেম্বর আরও দুই নারী একই সহযোগীর মাধ্যমে তার বাসায় আসে। এরপর তাদেরও পালাক্রমে ধর্ষণ করে হৃদয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার এলিন চৌধুরী বলেন, মামলার এজাহারে বলা হয়েছে- নিজের চেষ্টায় কিছু করবেন বলে বাবা-মাকে না জানিয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর বাসা থেকে বের হয়ে রাজধানীর গুলশান-বাড্ডা রিং রোডে অবস্থানরত বান্ধবীর কাছে আসেন প্রথম বাদী। পরে দুই বান্ধবী একসঙ্গে থাকবেন বলে মনস্থির করেন।
এরই মাঝে ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের পরিচিত আরেক বান্ধবী পরদিন ১১ সেপ্টেম্বর গাজীপুরে পুলপার্টিতে যেতে দ্বিতীয় বাদীকে আমন্ত্রণ জানান। সেখানে যাওয়ার পর ওই বান্ধবী অভিযুক্ত হৃদয়ের সঙ্গে দুজনের পরিচয় করিয়ে দেন। তাদের আশ্বস্তও করেন, প্রয়োজন হলে হৃদয় তাদের থাকার ব্যবস্থাও করে দিতে পারবে।
দুদিন পর ১৩ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত তরুণ হৃদয় ফোন দিয়ে দুই তরুণীকে জানান চাইলে তারা ভাটারা থানাধীন ৮৫ কুড়িল পিনাকল পাম্পসংলগ্ন তার বাসায় থাকতে পারেন। কথামতো পরদিন ১৪ সেপ্টেম্বর দুই বান্ধবী রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কে যান।
এরপর হৃদয় তাদের ভাটারার বাসার নিচতলায় একটি কক্ষে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। দুদিন পর ১৬ সেপ্টেম্বর মামলার প্রথম বাদীর সঙ্গে কথা বলার জন্য হৃদয় তার তৃতীয় তলার বাসায় ডেকে নিয়ে যান। সেখানে একপর্যায়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের কথা কাউকে না বলার জন্য হুমকি দেন।
ঘটনার চারদিন পর ২০ সেপ্টেম্বর পাশের কক্ষে দুই বাদী আসেন। রাতে আলাপচারিতার একপর্যায়ে আলোচনায় উঠে আসে পরে আসা দুজনকেও হৃদয় বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করেছেন। এছাড়া দ্বিতীয় বাদীর শ্লীলতাহানি করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে সোমবার পর্যায়ক্রমিক ধর্ষণের ঘটনায় ভাটারা থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
এলিন চৌধুরী বলেন, শনিবার বিষয়টি জানার পরই ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানো হয়। পরে অভিযান চালিয়ে ওই বাসা থেকে হৃদয়কে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার তিনজন ও যৌন হয়রানির শিকার একজনসহ মোট চারজন পুলিশের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, হৃদয় তার স্ত্রীর করা মামলায় দেড় বছর জেলে ছিলেন। সে সময় তাদের বিয়েবিচ্ছেদ ঘটে। এ বিষয়ে তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
পিবিএ/এসডি