পিবিএ,ঢাকা: রাজধানীর মিরপুর থেকে অপহৃত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসককে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ছয় অপহরণকারীকে আটক করেছে র্যাব। অপহৃত চিকিৎসককে উদ্ধার করা হয়েছে টাঙ্গাইলের মধুপুর ভাওয়াল বন এলাকা থেকে।
র্যাব-৪ এর সিনিয়র এএসপি সাজ্জাদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, বুধবার বেলা ১১টায় চিকিৎসা নেয়ার নাম করে মিরপুর-১০ নম্বর থেকে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক মোনায়েমুল বাশারকে মধুপুর ভাওয়াল বনে এক বাসায় নিয়ে যায় অপহরণকারী চক্র। সেখানে পৌঁছামাত্র অপহরণকারীরা তার হাত ও চোখ মুখ বেঁধে ফেলে। তার উপর নির্যাতন চালানো হয়।
এই নির্যাতনের সময় বাশারের চিৎকারের শব্দ রেকর্ড করে তার পরিবারকে শুনিয়ে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। মুক্তিপণের টাকা না দিলে বাশারকে হত্যার হুমকি দেয় তারা।
তিনি জানান, এরই মধ্যে হোমিও ডাক্তারের পরিবারের পক্ষ থেকে কিছু টাকা দেয়া হয় অপহরণকারী চক্রের দেয়া বিকাশ নম্বরে।
পরে ওই চিকিৎসকের পরিবার র্যাবকে বিষয়টি জানায়। তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব বুধবার রাত ৮টা থেকে ভোর সাড়ে ৬টা পর্যন্ত অভিযান চালায় ভাওয়াল বন এলাকায়।
একপর্যায়ে অপহৃত চিকিৎসক মোনায়েমুল বাশারকে উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে ছয় অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় গ্রেফতার ব্যক্তিদের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের কাজে ব্যবহৃত সিমসহ চারটি মোবাইল ফোন সেট উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া মুক্তিপণের ২৭ হাজার ৫০০ টাকাও উদ্ধার করা হয়।
সিনিয়র এএসপি সাজ্জাদ জানান, এ অপহরণের সঙ্গে ১০ জন জড়িত। গ্রেফতার ছয়জনসহ ওই ১০ জন হলো- আব্দুস সালাম, আলমগীর হোসেন, ফয়েজ উদ্দিন, মো. ফয়সাল, আবদুল হালিম, বিল্লাল হোসেন, আমিনুল ইসলাম ওরফে সোহরাব, সঞ্জীব, আলিম ও তারা বিবি ওরফে সানু আক্তার। এর মধ্যে তারা বিবি, সোহরাব, সঞ্জীব ও আলিম পলাতক রয়েছে।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। তারা জানায়, এ অপহরণের মূলহোতা সোহরাব।
র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, গত ১০ বছর ধরে বিভিন্ন কায়দায় বড় বড় ব্যবসায়ী, পেশাজীবী ও চাকুরেদের টার্গেট করে মুঠোফোনে নারী সদস্যের মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদ পাতে তারা। এ ছাড়া কাউকে কাউকে সুন্দরী আদিবাসী নারীর প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন কৌশলে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে আসছিল।
চিকিৎসক বাশার অপহরণ ঘটনা সম্পর্কে র্যাব জানায়, অপহরণ চক্রের নারী সদস্য পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী চিকিৎসা নেয়ার উদ্দেশে ডাক্তারের চেম্বারে আসে। তার সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে। তার মুঠোফোন নম্বর নেয়। পরে একপর্যায়ে বিভিন্ন রোগী তার মাধ্যমে চিকিৎসা করাবে বলে বিভিন্ন সময় ফোনে যোগাযোগ করতে থাকে। একপর্যায়ে সুন্দরী নারীর প্রলোভন দেখিয়ে তার বাসায় আসতে বলে। সেখানে গেলে তাকে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি করে এই চক্র।
পিবিএ/এফএস