রাজশাহীতে অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায়ের অভিযোগ

পিবিএ,রাজশাহী: রাজশাহীসহ সারা বাংলাদেশে এইচএসসি প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থীদের ভর্তি অনলাইন মাধ্যমে সমাপ্ত হয়েছে। বাঘা উপজেলা শাহদৌল্লা সরকারি কলেজে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের নিয়ম আমান্য করে অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ভর্তির শেষ তারিখ ৩০ জুন পর্যন্ত ২৩টি খাতে ৫৩৫ জন শিক্ষার্থীর নিকট থেকে ২ হাজার ১৫৬ টাকা যা প্রায় ১১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা অর্থ আদায় করেছে বলে গনমাধ্যমকে জানিয়েছে।

সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা ফি এবং দরিদ্র, মেধাবী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফি মওকুফের করা হলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ তা পালন করেনি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ি উপজেলা পর্যায়ে যে কোন কলেজের জন্য সেশন-চার্জসহ ভর্তি ফিসহ ১ হাজার টাকা আদায় করা যাবে। বাঘা শাহদৌল্লা সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষ তা অমান্য করেছে। এই কলেজে ভর্তির সময় অনলাইনে ১৯৫ টাকা ব্যাংক ড্রাফট করার পর নতুন করে কলেজ কর্তৃপক্ষ ২৩টি খাতে বাৎসরিক ২ হাজার ১৫৬ টাকা করে প্রাায় ১১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেছে বলে গনমাধ্যমকে জনিয়েছেন শিক্ষার্থী এবং অভিভাববক।

অনলাইনের বাইরে দ্বিতীয় দফা ভর্তি ফি ২০ টাকা, এক বছরের বেতন ২৪০ টাকা, অধিভুক্তি ফি ২৫ টাকা, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ফি ২০ টাকা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি ফি ৫০ টাকা, অভ্যন্তরীন ক্রীড়া ও কমনরুম ফি ৪০ টাকা, ম্যাগাজিন ফি ৩০ টাকা, পরিচয়পত্র ফি ৭০ টাকা, রোভার স্কাউট ফি ৪০ টাকা, রেডক্রিসেন্ট ফি ২০ টাকা, গ্রন্থাগার ফি ২৫ টাকা, গবেষনাগার ফি ১০০ টাকা, কল্যাণ ও দরিদ্র তহবিল ফি ২০ টাকা, চিকিৎসা সেবা ২০ টাকা, আইসিটি ২০ টাকা, বিজ্ঞান ক্লাব ফি ১০ টাকা, সাইকেল গ্যারেজ ১০ টাকা, ব্যবস্থাপনা ফি ১০০ টাকা, অত্যাবশ্যকীয় ফি (কর্মচারি) ৪০০ টাকা, কলেজ উন্নয়ন ফি ১০০ টাকা, অভ্যন্তরীন পরীক্ষা ফি ৫৬০ টাকা, বিবিধ ফি ১০০ টাকা এবং ডি-এলার্ট ফি ৯৬ টাকা।

বাঘা সদরের বাসিন্দা ও এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সিরাজুল ইসলাম পিবিএকে বলেন, একটি সরকারি কলেজ উন্নয়নে সরকারই যথেষ্ট, এখানে কলেজ উন্নয়ন ফি বাবদ প্রত্যেক শিক্ষার্থীর নিকট থেকে ১০০ টাকা নেয়ার প্রশ্নই উঠে না। অনুরুপভাবে যেখানে সরকারি স্কেলে কর্মচারিরা বেতন পান, সেখানে অত্যাবশ্যকীয় ফি (কর্মচারি) খাতেও ৪০০ টাকা নেয়ার দরকার পড়ে না। এছাড়া ম্যাগাজিন ৩০ টাকা এবং চিকিৎসা খাতে ২০ টাকাসহ এক বছরের অগ্রিম বেতন ২৪০ টাকা এবং অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা ফি ৫৬০ টাকা এককালিন নেয়াও সম্পূর্ণ বে-আইনি। এভাবে অগ্রিম টাকা নেয়াটা সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক বলে মন্তব্য করেন শিক্সার্থীদের অভিভাবক।

কলেজ কর্তৃপক্ষ ২৩টি খাত উল্লেখ করে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর নিকট যে অর্থ আদায় করেছে, এ অর্থের একটি টাকাও সরকারের কোন উন্নয়ন খাতে জমা হবে না।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক পিবিএকে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিপত্রের বাইরে অতিরিক্ত যে অর্থ আদায় করা হয়েছে, তার জন্য তিনি একা দায়ি নন। ৭ সদস্যের একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে। সেই কমিটি আলোচনা সাপেক্ষে এ অর্থ উত্তোলন করেছে।

শিক্ষার্থীদের থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন কলেজ পরিচালনা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিন রেজা। তবে আদায়র্কৃত টাকা ব্যাংকে জমা হওয়ার বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে জানাযাবে। ওই অর্থ ব্যাংকে জমা হলে তাঁর যৌথ স্বাক্ষর ছাড়া টাকা উত্তোলন করা যাবে না।

পিবিএ/ ওআাই/হক

আরও পড়ুন...