পিবিএ,আকরাম হোসাইন,রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) অধিকাংশ ভবনেই নেই অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারসহ মাত্র তিন ভবনে ৩৪টি অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকলেও নেই মেয়াদ। তাছাড়া ১৭টি আবাসিক হলগুলোতেও একই অবস্থা। সবমিলিয়ে অগ্নিনির্বাপণের এমন ব্যবস্থা না থাকায় শঙ্কায় রয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে ১৯ টি, মুহাম্মদ কুদরত-ই-খুদা ভবনে (দ্বিতীয় বিজ্ঞান) ৪ টি, স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু (তৃতীয় বিজ্ঞান) ভবনে ১১টিসহ মোট ৩৪টি অগ্নিনির্বাপণ সিলিন্ডার রয়েছে।
তাছাড়া ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, ড. মমতাজ উদ্দিন আহমদ, সৈয়দ ইসমাইল হোসেন শিরাজী একাডেমিক ভবন, সত্যেন্দনাথ বোস (প্রথম বিজ্ঞান ভবন), ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ভবনে (চতুর্থ বিজ্ঞান), আবাসিক ১৭ টি হলেই কোন ব্যবস্থা নেই। ফলে উদ্বেগ ও শঙ্কা কাজ করছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের মোট সিলিন্ডার রয়েছে ১৯টি। এর মধ্যে মূল ফটকের প্রথম সিলিন্ডারটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০০৯ সালে অর্থ্যাৎ ১০ বছর আগে, তার পাশেই রেফারেন্স শাখার ফটকে সিলিন্ডারের মেয়াদ ২০১৫ সালে, সিড়ির পাশেই ক্যাটালগিং শাখায় ২০১১ সালে, পাঠকক্ষের সামনে রাখা সিলিন্ডারটি ২০১৩ সালে মেয়াদ শেষ হয়েছে। তাছাড়া রিডিং রুমের প্রায় সবকটি মোট ১৯টি অগ্নিনির্বাপণ সিলিন্ডার বেশ কয়েক বছর আগেই মেয়াদ শেষ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থার এমন দশার ফলে ঝুঁকিতে রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ পুস্তক, ৪১ হাজার সাময়িকী ও দেশি বিদেশি জার্নালসহ গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রহ।
কর্মচারীরা জানান, কয়েক বছর ধরে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে চাকুরি করছি। কিন্তু একবারও অগ্নি নির্বাপণ সংক্রান্ত ট্রেনিং করেননি। এরই মধ্যে গতবছর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগে। আগুনের আকার ছোট ছিল বলে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু বড় ধরনের আগুন লাগলে না নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।
এ বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মিন্টু বলেন, গ্রন্থাগারে রয়েছে বিভিন্ন পুস্তক, সাময়িকী, জার্নাল, সচিত্র মানচিত্র বিষয়ক বই। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকদের সেবা, প্রস্তুতি শাখা, সাময়িকী ও সংবাদপত্র শাখা, পাঠকক্ষ শাখা, রেফারেন্স শাখা রয়েছে। সেখানে ইন্টারনেট, শীততাপের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। এটি দুঃখজনক। তাই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
শেরে-ই-বাংলা হলের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ জামিল পিবিএকে বলেন, হলগুলোতে অগ্নি প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেই। হলে শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ নথি থাকে। যেকোন দূর্ঘটনা ঘটলে ক্ষয়-ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা বেশি। তাই প্রতিটি ব্লকে দুটি করে অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থা করা উচিত। তাছাড়া সচেতনতা বাড়াতে বিভাগ বা হল ভিত্তিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
হল প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক ড. আমিনুল ইসলাম পিবিএকে বলেন, অগ্নিকা- বা দূর্ঘটনা এড়াতে হল বা ভবনগুলোতে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা থাকা জরুরী। তবে হলগুলো অনেক পুরাতন হয়ে গেছে। তাই হল প্রাধ্যক্ষ পরিষদ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
অগ্নি নির্বাপণের কোন পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইলে প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ভবনগুলো অনেক আগেই তৈরী হয়েছিল। সেসময়ে এ ধরনের কোন প্ল্যান ছিলো না। তবে নতুন করে ভাবা হচ্ছে। আমি প্রশাসনের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করবো।
পিবিএ/আরআই