ইছা হক,রাবি; গত পাঁচ মাসেও দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ না করায় ও সেশনজটের প্রতিবাদে বিভাগের সভাপতির কক্ষসহ বিভিন্ন কক্ষে তালা মেরে বিভাগের সামনে অনশনে বসেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনের চতুর্থ তলায় বিভাগের সামনে ৬ দফা দাবি নিয়ে আমরণ অনশনে বসেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ অনশন চালিয়ে যাবেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেশনজটে অনেক পিছিয়ে আছে রাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা তৃতীয় সেমিস্টার পরীক্ষা শেষ করে চতুর্থ সেমিস্টারে ক্লাস করছেন এবং অনেক বিভাগের শিক্ষার্থীরা চতুর্থ সেমিস্টার শেষ করে পঞ্চম সেমিস্টারে উঠে ক্লাস করছেন। এদিকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের গত নভেম্বরে দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষা শেষ হয় এবং গত ৬মার্চ তাদের তৃতীয় সেমিস্টার হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু পরীক্ষা দেওয়ার পাঁচ মাস অতিক্রম হলেও এখনো তাদের ফলাফল প্রকাশ করেনি বিভাগ। ফলে ফলাফল প্রকাশ না হওয়ায় তৃতীয় সেমিস্টার পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারছেন না এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। অতিদ্রুত পরীক্ষার দাবিতে বিভাগের সভাপতিসহ বিভিন্ন কক্ষে তালা মেরে বিভাগের সামমে অনশনে বসেছেন তারা
এসময় তারা ৬দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো নিম্নরুপঃ
১.দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশপূর্বক তৃতীয় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা ঈদুল ফিতরের পূর্বে সম্পন্ন করতে হবে।
২. পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে।
৩.নোটিশের নামে ভাঁওতাবাজী বন্ধ করতে হবে।
৪.৬ মাসের সেমিস্টারের ৩ মাসে শেষ করতে হবে।
৫.সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার ১মাসের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করতে হবে।
৬. বিভাগের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও শিক্ষার্থীদের হয়রানি নিরসন করতে হবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুয়াজ্জিন শিকদার বলেন, আমরা এখনো তৃতীয় সেমিস্টার শেষ করতে পারিনি। আমাদের বন্ধুবান্ধবরা চতুর্থ সেমিস্টার শেষ করে ফেলেছে। আমরা এখন বাচার দাবি নিয়ে এখানে এসেছি। আমরা বারবার বিভাগের শিক্ষকদের কাছে গিয়েছি কথা বলেছি তারা আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন কিন্তু কোনো সমাধান করার চেষ্টা করেননি। আমার অনেক বন্ধু সুইসাইডের সিদ্ধান্ত পর্যন্ত নিয়েছে। তারা যদি কেউ সুইসাইড করে এর দায়ভার কে নিবে? আমরা ৬ দফা দাবি নিয়ে এখানে এসেছি। আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত।
এ বিষয়ে বিভাগের শিক্ষার্থী ফারজানা হৃদি বলেন, আমরা ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী। আমাদের ২০২৩ সালে অনার্স শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো আমরা প্রথম বর্ষেই আছি। আমাদের জীবন নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায় আছি। এ সমস্যা সমাধানের জন্যে আমরা এখানে অবস্থান নিয়েছি। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমরণ অনশন থেকে উঠবো না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি ড. সায়েদ মো.আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী বলেন, আমি সকালে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি এবং দু-তিনদের মধ্যে তাদের ফলাফল প্রকাশ করা হবে বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করেছি। কিন্তু এখন নাকি বিভাগের সামনে অনশনে বসেছে বিষয়টি শুনেছি। এখন বিভাগে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করছি।