পিবিএ,ঢাকা: পাবনায় জোড়া মাথা নিয়ে জন্ম নেওয়া রাবেয়া-রোকাইয়াকে চিকিৎসার জন্য হাঙ্গেরি নেওয়া হবে। হাঙ্গেরি থেকে ফেরার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের অধীনে চিকিৎসাধীন এই যমজ শিশুদের দেশেই অস্ত্রোপচার করার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
আজ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রাবেয়া-রোকাইয়াকে হাঙ্গেরি নেওয়ার বিষয়টি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, এক বছর ধরে মাথা জোড়া লাগানো শিশু দু’টি বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিচ্ছে। এরমধ্যে জার্মান ও হাঙ্গেরির দুই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাদের দেখেন। তারা হাসপাতালেই দুই দফায় মাথায় এনজিওগ্রামের মাধ্যমে তাদের ব্রেইনের প্রধান রক্তনালী পৃথক করেন। তখন আমরা সফলভাবেই সম্পন্ন করেছি। এরপর তারা শিশু দু’টিকে হাঙ্গেরিতে নিয়ে যৌথ চিকিৎসা করাতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম জানান, দীর্ঘদিন শিশু দু’টিকে বার্ন ইউনিটে প্লাস্টিক ও নিউরো সার্জন দ্বারা চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশেই তাদের চিকিৎসার দুই ধাপ সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন তৃতীয় ধাপ সম্পন্ন করার জন্য তাদের হাঙ্গেরি পাঠানো হচ্ছে। সেখানে পাঁচটি বিশেষজ্ঞ টিম তাদের চিকিৎসা পরিচালনা করবে। আনুমানিক তিন-চার মাস তারা সেখানে চিকিৎসা নেবে।
হাঙ্গেরিতে শিশু দু’টির চিকিৎসার ধাপ হিসেবে তিনি বলেন, ইনজেকশনের মাধ্যমে তাদের মাথার খুলি ফুলিয়ে ভেতরে কিছুটা ফাঁকা করা হবে। পরে ফাইনাল অস্ত্রোপচার হবে বাংলাদেশে।
রফিকুল ইসলাম জানান, সিজার করার আগের দিন পর্যন্ত জানতে পারিনি যে, পেটের মধ্যে এমন যমজ শিশু আছে। এমনকি ডিজিটাল আলট্রাসনোগ্রাফী করা হলে তাতেও ধরা পড়েনি। আমরা চেয়েছিলাম সুস্থ সুন্দর ভাল একটা বাচ্চা।
কিন্তু এটা আশা করিনি এমন ধরনের বাচ্চা হবে। জন্মের কিছুদিন পর তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তারা শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিল। অপারেশনের মাধ্যমে শিশু দুটিকে আলাদা করা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ, তাই এদেশের চিকিৎসকরা দফায় দফায় চেষ্টা করেও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। বিদেশী সুচিকিৎসায় যদি তাদের জোড়া মাথা আলাদা করা যেতো তাহলে আমাদের জন্য সবচেয়ে খুশির খবর হবে। আমার শিশু দুটির জন্য জন্য দোয়া করবেন। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
পিবিএ/জেডআই