রাশিয়া পারমাণবিক যুদ্ধের জন্য প্রযুক্তিগতভাবে প্রস্তুত বলে পশ্চিমাদের সতর্ক করে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেনে সেনা পাঠায় তবে তা যুদ্ধের একটি উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি হিসাবে বিবেচিত হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। রাশিয়ায় নির্বাচনের মাত্র দুইদিন আগে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের উদ্দেশে এই হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি।
আগামী ১৫-১৭ মার্চ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ছয় বছরের মেয়াদের জন্য পুনরায় পুতিনই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। পুতিন অবশ্য বলেছেন, পারমাণবিক যুদ্ধের পরিস্থিতি ‘দ্রুত এগিয়ে আসছে’ না এবং তিনি ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজন দেখেন না।
রাশিয়া সত্যিই পারমাণবিক যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে ৭১ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট পুতিন রশিয়া-১ টেলিভিশন এবং সংবাদ সংস্থা আরআইএকে বলেন, সামরিক-প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে, আমরা অবশ্যই প্রস্তুত।
পুতিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বুঝতে পেরেছে, যদি তারা রাশিয়ার ভূখণ্ডে বা ইউক্রেনে মার্কিন সেনা মোতায়েন করে তবে রাশিয়া এই পদক্ষেপকে হস্তক্ষেপ হিসাবে বিবেচনা করবে। তিনি বলেন, (যুক্তরাষ্ট্রে) রাশিয়ান-আমেরিকান সম্পর্কের ক্ষেত্রে এবং কৌশলগত সংযমের ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণে বিশেষজ্ঞ রয়েছে। অতএব, আমি মনে করি না, এখানে সবকিছু (পারমাণবিক সংঘর্ষ) তাড়াহুড়ো করে হবে, তবে আমরা এর জন্য প্রস্তুত।
বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর ফলে ১৯৬২ সালের কিউবান মিসাইল সংকটের পর পশ্চিমের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কে সবচেয়ে বড় আকারের ফাটল ধরেছে।
পুতিন বেশ কয়েকবার সতর্ক করেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো সেনা পাঠালে তা পারমাণবিক যুদ্ধ শুরুর উস্কানি হিসেবে বিবেচিত হবে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুতিনের নির্দেশে দশ হাজারেরও বেশি রুশ সেনা ইউক্রেনে ঢুকে পড়লে এই যুদ্ধ শুরু হয়। পশ্চিমা নেতারা রাশিয়াকে পরাজিত করার অঙ্গীকার করলেও, পরাজয় তো দূরে থাক, বরং দুই বছরের যুদ্ধ শেষে রাশিয়ার দখলে ইউক্রেনের ২০ শতাংশ ভূখণ্ড চলে গেছে।
পুতিন আবারো জানান, ক্রেমলিনের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার নিয়ে বিশেষ নীতিমালা রয়েছে। এই নীতিমালায় সুস্পষ্টভাবে বলা আছে কোন পরিস্থিতিতে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে।