রাস্তা কেটে জমি তৈরী,৩০ পরিবারের অচলাবস্থা

nilfamri-pba
রাস্তা কেটে জমি তৈরী করা হয়েছে ।

পিবিএ,নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুরে দীর্ঘ প্রায় ২০ বছরের যাতায়াতের রাস্তা কেটে জমি তৈরী করায় ৩০টি পরিবারের প্রায় ২ শতাধিক লোকজনের চলাচলে চরম অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে জমির মালিক ও এলাকাবাসীর মধ্যে যে কোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, কুঠিপাড়ার প্রধান সরকারী সড়কের সাথে শাহপাড়া থেকে একটি উপ-সড়ক এসে সংযুক্ত হয়েছে। এই উপ-সড়কটি দিয়ে শাহপাড়ার প্রায় ২ শতাধিক লোকজন যাতায়াত করে। এটাই তাদের চলাচলের একমাত্র রাস্তা। মূল সড়কের সংযোগ স্থান থেকে ২ শ’ গজ দূরেই রাস্তা কেটে জমিতে বিলিন করা হয়েছে। সেখানে এখন রাস্তার কোন অস্তিত্বই নেই, জমিতে ধান লাগানোর জন্য চাষ করা হয়েছে।
এলাকাবাসী পিবিএকে জানায়, এলাকার মৃত. আকবার আলীর ও মৃত. আনসার আলী দুই ভাই। তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে দুই ভাইয়ের সন্তানদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এরই সূত্র ধরে আনসার আলীর ছেলে আ: রহিম ও সাদেকুল ইসলাম গত প্রায় ১ মাস পূর্বে হঠাৎ করে তাদের জমির মাঝ দিয়ে যাওয়া রাস্তার অংশটি কেটে জমিতে পরিনত করে। এর ফলে এলাকাবাসীর চলাচলের আর কোন ব্যবস্থা না থাকায় তারা এখন এক রকম অবরুদ্ধ অবস্থার মধ্যে পড়েছে। অনেকে রোজগারের একমাত্র সম্বল ভ্যান বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যেতে না পারায় বেকার হয়ে পড়েছে। শাহপাড়ার ৩০টি পরিবার কুটিপাড়ার সাথে যোগাযোগ একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

মৃত. আকবার আলীর ছেলে মাহতাব ও মোতাহার পিবিএকে জানান, রাস্তাটির সংযোগস্থলে একটি ৪০ শতক জমি নিয়ে আ: রহিমের সাথে বিরোধ চলছে। সম্পূর্ণ জমিটি আ: রহিম তার নিজের একার বলে দাবি করে আদালতে মামলা করেছে। সেই মামলার প্রেক্ষিতে জমিটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। কেউই আবাদ না করায় তা এখন খেলার মাঠে পরিণত হয়েছে। সে একের পর এক মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানী করে চলেছে। এটা একেবারে দু’টি পরিবারের নিজস্ব বিরোধ। আদালতের মাধ্যমে যা একদিন সমাধান হবে। কিন্তু আ: রহিম কোন মামলায় হেরে গেলে আবার আরেক মামলা দেয়। এবার সে মামলায় আমাদের পরাস্ত করতে না পেরে এলাকাবাসী সকলের চলাচলের পথটিই কেটে দিয়েছে। যা কোন ভাবেই সুস্থ্য বিবেক বোধ সম্পন্ন মানুষের কাজ নয় বলে মনে করি। এ অপকর্মের ফলে এলাকার লোকজন চরম বেকায়দায় পড়েছে। তারা দীর্ঘ ২০ বছর থেকে যাতায়াত করে অভ্যস্ত রাস্তায় আর হাটতে পারছেনা। যান বাহন নিয়ে যাওয়া তো দূরের কথা। এতে অনেকেই দূরবস্থার মধ্যে পড়েছে। যা অনতিবিলম্বে সমাধান করা প্রয়োজন।

ফুলবাবু নামে এক ব্যক্তি পিবিএকে জানান, এ ব্যাপার নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল চৌধুরীর কাছে অভিযোগ দেয়া হলেও তিনি কোন উদ্যোগ নেন নাই। তাই এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
এদিকে এ বিষয়ে আ: রহিমের বাড়িতে গেলে তাকে না পাওয়ায় তার মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে তার মা জহুরা খাতুন ও ছোট ভাই সাদেকুল ইসলাম জানান, আমাদের জমির উপর দিয়ে রাস্তা করতে হলে যে পরিমান জমি রাস্তায় যাবে তা অন্যত্র দিতে হবে। কেননা আমরা গরিব মানুষ, জমিতে চাষ করেই তা দিয়ে জীবন চালাই। এলাকাবাসী জমি দিতে সম্মত না হওয়ায় বাধ্য হয়ে আমরা রাস্তা কেটে জমি তৈরী করেছি। এতে কার কি করার আছে করেন।

পিবিএ/জেএইচ/হক

আরও পড়ুন...