‘র’-এর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ, তীব্র নিন্দা ভারতের

যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংস্থার ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ (রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং)-এর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাবের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ভারত সরকার।

মঙ্গলবার ইউনাইটেড স্টেটস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ)-এর বার্ষিক প্রতিবেদনে এই সুপারিশ করা হয়েছে। এতে ‘র’-এর বিরুদ্ধে ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠে এসেছে।ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বাংলা সংস্করণে এ খবর জানা গেছে।

বুধবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল একটি কঠোর বিবৃতিতে ইউএসসিআইআরএফ-এর প্রতিবেদনকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে আখ্যা দেন। বিবৃতিতে সংস্থাটিকে ‘উদ্বেগের সংস্থা’ (এনটিটি অব কনসার্ন) হিসেবে চিহ্নিত করারও দাবি করা হয়।

জয়সওয়াল বলেন, এই সংস্থার প্রতিবেদনে তথ্য বিকৃত করা হয়েছে এবং ভারতের বহুত্ববাদী সমাজকে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ইউএসসিআইআরএফ-এর ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে প্রকৃত উদ্বেগ নেই—এটি একটি রাজনৈতিক এজেন্ডা মাত্র।

২০২৩ সালে নিউ ইয়র্কে একজন শিখ নাগরিকের হত্যাচেষ্টায় ‘র’-এর এক কর্মকর্তার সম্পৃক্ততার অভিযোগ ইউএসসিআইআরএফ পুনরায় উত্থাপন করেছে। তবে ভারত সরকার এই দাবিকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে খারিজ করে দিয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১৪০ কোটি মানুষের এই দেশে বিশ্বের সব প্রধান ধর্মের অনুসারীদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান রয়েছে। কিন্তু ইউএসসিআইআরএফ কখনোই ভারতের এই সত্যিকারের চিত্র স্বীকার করবে না।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর এখনও এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে গত কয়েক মাসে ভারত-মার্কিন সম্পর্কে কিছুটা টানাপোড়েন লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে শিখ কর্মী গুরুপাতওয়ান্ত সিং পান্নুনকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগকে কেন্দ্র করে।

রিপোর্টে সরাসরি ‘র’-এর নাম উল্লেখ করে সংস্থাটিকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনার সুপারিশ করা হলেও, ভারতের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, গোয়েন্দা সংস্থার কাজ কখনোই ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে না।

বিশ্লেষকদের মতে, ইউএসসিআইআরএফ-এর এই প্রতিবেদন ভারত-মার্কিন কৌশলগত সম্পর্কে নতুন বাধা সৃষ্টি করতে পারে। তবে নয়া দিল্লি ইতোমধ্যে বিষয়টিকে ‘অগ্রহণযোগ্য হস্তক্ষেপ’ হিসেবে দেখছে এবং কূটনৈতিক স্তরে আরও কঠোর পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছে।

উল্লেখ্য, ইউএসসিআইআরএফ একটি স্বাধীন মার্কিন ফেডারেল পরামর্শক সংস্থা। এই সংস্থার সুপারিশ বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক নয়। ২০২০ সালেও ইউএসসিআইআরএফ ভারতকে ধর্মীয় স্বাধীনতার ক্ষেত্রে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ তালিকাভুক্ত করেছিল।

আরও পড়ুন...