লকডাউন কি আবারও বাড়বে?

মহামারি আকার ধারণ করা করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত দেশ। হু-হু করে বাড়ছে মৃত্যু ও শনাক্ত। হাসপাতালে রোগীদের গাদাগাদি। ফাঁকা নেই কোনো আইসিইউ। এদিকে টানা লকডাউনে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের অবস্থা করুণ। একদিকে করোনার আতঙ্ক ও অন্যদিকে অসহায় মানুষের হাহাকার, সব মিলিয়ে কঠিন এক সিদ্ধান্তের মুখোমুখি সরকার। এমতাবস্থায় চলমান কঠোর লকডাউন (বিধিনিষেধ) কি বাড়বে নাকি স্বল্প পরিসরে খুলে দেওয়া হবে জানা যাবে আজ সোমবার।

এ বিষয়ে রোববার (১১ জুলাই) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, লকডাউন আরও বাড়ানো হবে কিনা সে বিষয়ে আজ সোমবার (১২ জুলাই) রাতে কমিটির বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, সে অনুযায়ী ১৩ জুলাই (মঙ্গলবার) বিধিনিষেধ সংক্রান্ত আদেশ জারি হবে।
১৪ জুলাইয়ের পর বিধিনিষেধ বাড়ছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, করোনা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। এবার করোনা এমনভাবে ছড়িয়েছে যা ভয়াবহ। এ প্রক্রিয়া (লকডাউন) অব্যাহত রাখতে হবে। ঈদ ও কোরবানির পশুর হাট একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এটা সুনিয়ন্ত্রিতভাবে মোকাবিলা করতে চায় সরকার।

তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল পশুর হাটের পাশাপাশি সারা দেশে স্বাভাবিক হাটও বসবে। করোনার কারণে বাউন্ডারিযুক্ত মাঠে পশুর হাট বসানোর চিন্তাভাবনা চলছে। ১৫ জুলাই থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত এই ৬ দিন হাট বসবে। হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সবাইকে আসতে হবে। হাটের ৩টি পথ থাকবে। এর একটি দিয়ে পশুসহ প্রবেশ করবে। আরেকটি দিয়ে ক্রেতা প্রবেশ করবে এবং অপরটি দিয়ে ক্রেতা বের হয়ে যাবে। মৃত্যু ও সংক্রমণ মাথায় রেখেই হাটে আসতে হবে। হাটের সংখ্যা ও পরিস্থিতি বিশেষজ্ঞ কমিটি যেভাবে সুপারিশ করবে সেভাবেই সরকার ব্যবস্থা নেবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, গতবার ঈদে গ্রামে এত সংক্রমণ ছিল না। এবার গ্রামে সংক্রমণ বেশি। তাই সবাইকে ঈদে গ্রামে যেতে নিরুৎসাহিত করা হবে। নিজেকে ও পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে আমাদের সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। এখনো এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। সোমবার রাতে এ বিষয়ে বৈঠক হবে, তারপর জানানো হবে। সংক্রমণ কমানোর চেষ্টা চলছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য কঠোরতা থাকবেই। সংক্রমণ ৫ শতাংশের মধ্যে না আসা পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকবে। যারা অকারণে বের হবে তাদের জরিমানাসহ গ্রেপ্তার করা হবে।

এদিকে দেশে করোনা সংক্রমণ রোধে আরও এক সপ্তাহ কঠোর বিধিনিষেধ বাড়ানোর কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। রোববার (১১ জুলাই) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত ভার্চুয়াল বুলেটিনে অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, এই সময়ে বিনা প্রয়োজনে কেউ বাড়ি থেকে বের হলে তার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজকের মৃত্যু নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৪১৯ জনে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৮৭৪ জন। এ নিয়ে দেশে মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১০ লাখ ২১ হাজার ১৮৯ জনে।

আরও পড়ুন...