লক্ষ্মীপুরে বাড়ছে আত্বহত্যা, প্ররোচনাকারীদের শাস্তির দাবি

পিবিএ, লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে গত ৫ বছরে আত্নহত্যা করেছেন প্রায় তিন শতাধিক নারী-পুরুষ। পুলিশের হিসাব অনুযায়ী প্রতিবছরে গড়ে অস্বাভাবিক মৃত্যুর পথ বেছে নিয়েছে ৭০ জন নারী পুরষ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূল্যবোধের অবক্ষয়,পারিবারিক কলহসহ নানা কারনে নিজের ওপর আস্থা হারাচ্ছে মানুষ। পুলিশ সুপার বলছেন,পারিবারিকও সামাজিকভাবে সচেতন হলেই কেবল আত্নহত্যার প্রবনতা রোধ করা সম্ভব। তাই সকল স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।

লক্ষ্মীপুরে গত ৫ বছরে আত্নহত্যা করেছেন প্রায় তিন শতাধিক নারী-পুরুষ। পুলিশের হিসাব অনুযায়ী প্রতিবছরে গড়ে অস্বাভাবিক মৃত্যুর পথ বেছে নিয়েছে ৭০ জন নারী পুরষ।
প্রতীকী ছবি

এদিকে লক্ষ্মীপুরে আত্নহত্যা প্রবনতা বেড়ে যাওয়ায় উদিগ্ন হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। যারা আত্নহত্যার ইন্ধন ও প্ররোচনা যুগিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলেও মনে করেন তারা।
জেলা পুলিশের হিসেবে গত ৬ মাসে লক্ষ্মীপুরে আত্নহত্যা করছেন ৩৯ জন।

আর গত এক বছরে আত্নহত্যা করেন ৭৪ নারী ও পুরুষ। যাহা ২০১৭ সালে এই সংখ্যা ছিল ৬০জন। আর গত ৫ বছরে এর সংখ্যা দাড়িয়েছে ৩’শ ৭৫ জন। আত্নহত্যাকারীদের মধ্যে বেশিরভাগই ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী। এই আত্নহত্যার প্রবনতা বাড়ার কারন হিসেবে সামাজিক বিভিন্ন সমস্যাকে দায়ী করছেন সমাজবিজ্ঞানী ও নারী নেত্রীরা। তারা বলছেন, যৌতুক-পারিবারিক নির্যাতন,সম্পর্কের জটিলতা,অর্থনৈতিক সংকট সামাজিক যোগাযোগ ও দ্রুত নগারয়ন তৈরি করছে ব্যাক্তির মানসিক সমস্যা।

এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর সরকারি বিশ^বিদ্যালয় কলেজের সহযোগি অধ্যাপক জাকির হোসেন শিকদার বলেন, যাহা পাওয়ার ইচ্ছা,তা পাচেছনা, সমাজের ওপার থেকে সম্পদটাকে কুক্ষিগত করা। যাদের টাকা আছে,তারা আরো টাকাওয়ালা হয়ে যাওয়া,গরীব আরো গরিব হয়ে যাওয়া। সৃষ্টির শুরু থেকে নারীরা সমাজে অবহেলিত একটা শ্রেনী। আত্নহত্যার নিরসনের জন্য নৈতিক শিক্ষার উন্নয়ন, সমাজে শিক্ষাবৃদ্ধি এবং সম্পদ সঠিকভাবে বন্টন করার মধ্যে দিয়ে আত্নহত্যার প্রবনতা কমে আসবে। অন্যথায় এটা বাড়তে থাকবে।

জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুলতানা জোবেদা খানম বলেন, মানষিক,পারিবারিক,বাল্যবিবাহ,যৌতুক,ইভটিজিং,সিদ্ধান্ত হীনতা ও অপবাধসহ সইতে না পারার কারনে আত্নহত্যার ঘটনা ঘটেই চলছে। ইতিমধ্যে এর প্রবনতা কমাতে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বিভিন্ন স্থানে কাউন্সিলিং করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার আ স ম মাহতাব উদ্দিন বলেন, বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও স্বপ্নের জগতে বসবাস করে। স্বপ্নের বাস্তবায়ন না হওয়ায় আত্নহত্যার প্রবনতা বেড়ে গেছে। ৫বছর আগের আত্নহত্যার পরিসংখ্যান,বর্তমান পরিসংখ্যান এক নয়। আত্নহত্যার বাড়ার মুল কারন, পাওয়া না পাওয়া এবং সামাজিক ও পারিবারিক অস্থিরতা।

তিনি আরো বলেন, আঠারো বছরের আগে কাউকে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করতে না দেওয়া। প্রথমে পারিবারিকভাবে সচেতন হতে হবে। সমাজের সকল স্তরের মানুষকে আত্মহত্যার প্রবনতা প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে হবে।

পিবিএ/এফএইচ/আরআই

আরও পড়ুন...