পবিত্র ‘লাইলাতুল কদর’ রাতের খোঁজ শুধু মাত্র রমজানের শেষের দশ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে করতে হবে এমন না। কারণ যখন আমাদের ২২তম রমজানের রাত সৌদি আরবে তখন ২৩তম রমজানের রাত। আবার আমাদের যদি হয় ২৩তম রমজানের রাত সৌদি আরবে হয় ২৪তম রমজানের রাত।
তাই আমাদের সবার উচিত শুধু মাএ বেজোড় রাতগুলো না ধরে; রমজানের শেষের ১০ দিনের প্রতিটি রাতেই লাইলাতুল কদরের খোঁজ করা ও আমল করা।
লাইলাতুল কদরে করণীয়
লাইলাতুল কদরে আমাদের করণীয় হলো বেশি করে দোয়া করা, জিকির আজকার করা, নামাজ পড়া, ইবাদত-বন্দেগী করা।
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, একবার আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম- হে আল্লাহর রাসূল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি বলে দিন, আমি যদি লাইলাতুল কদর কোন রাতে হবে তা জানতে পারি, তাতে আমি কী (দোয়া) পড়বো?
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি বলবে-
اللَّهُمَّ إِنَّكَ عُفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন; তুহিব্বুল আফওয়া; ফাফু আন্নি।’
অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল; ক্ষমা করতে ভালোবাসেন; অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন। (মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত)
হজরত আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রমজানের শেষ দশক আসলে রাসূলুল্লাহ (সা.) পরনের লুঙ্গি শক্ত করে নিতেন। রাত্রি জাগরণ করতেন এবং পরিবারের সবাইকে জাগিয়ে দিতেন। (বুখারি ও মুসলিম) রাসূলুল্লাহ (সা.) পরনের লুঙ্গি শক্ত করে নিতেন এর অর্থ হলো, তিনি এ দিনগুলোতে স্ত্রীদের থেকে আলাদা হয়ে যেতেন।
নবী করিম (সা.) এ রাতগুলোতে বেশি সময় ও শ্রম দিতেন, যা অন্য কোনো রাতে দেখা যেত না। যেমন- হজরত আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি এ রাতে কোরআন তেলাওয়াত, জিকির, সালাত ও দোয়ার মাধ্যমে জাগ্রত থাকতেন এরপর সেহেরি গ্রহণ করতেন। (মুসলিম)
এ দশ দিনের একটি বৈশিষ্ট্য হলো, রাসূল (সা.) এ দশ দিনে মসজিদে এতেকাফ করতেন। প্রয়োজন ছাড়া তিনি মসজিদ থেকে বের হতেন না।
মহান আল্লাহ যেনো আমাদের সবাইকে এই পবিত্র ও মহামান্বিত রাতের উসিলায় আমাদের নেক আমল ও দোয়াসমূহ কবুল করে নেন। আমিন।