পিবিএ,লাকসাম(কুমিল্লা): কুমিল্লার লাকসামে জায়গা-জমির সীমানা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সায়েম হোসেন (২২) নামক এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন।
উপজেলার মুদাফরগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের নগরীপাড়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। ওই মেধাবী শিক্ষার্থী চাঁদপুর একটি কলেজের ইংরেজি বিষয়ে অনার্সের শিক্ষার্থী ছিল। এ ঘটনায় নিহত কলেজ শিক্ষার্থীর মা বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামী করে লাকসাম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
নিহতের স্বজনদের অভিযোগ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, কলেজ শিক্ষার্থী সায়েম ও প্রতিপক্ষ জসিম উদ্দিনের বাড়ি পাশাপাশি। গত ১ এপ্রিল স্থানীয় বাড়ির বাসিন্দারা সম্পত্তি পরিমাপ করলেও বর্ষার কারণে সীমানা পিলার দিতে পারেনি। এরই মধ্যে প্রতিপক্ষ রাতের অন্ধকারে সকলের অজান্তে নিজেদের সুবিধামতো পিলার স্থাপন করে। বিষয়টি স্থানীয় মেম্বার ও গন্যমান্য ব্যক্তিদের জানানোর পর তাদের নির্দেশনা মোতাবেক শনিবার (৪ জুলাই) সায়েম হোসেন ও অন্যান্যরা পিলার উঠিয়ে ফেলে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে জসীম পাটোয়ারি ছেলে লিংকন, লিমন ও লিপনের নেতৃত্বে তাদের পক্ষীয় লোকজন সায়েমের বাড়ি গিয়ে তাকে তুলে পাশ্ববর্তী রাস্তায় নিয়ে বেধড়ক মারধর করে রাস্তার ওপর ফেলে রাখে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তার মা পারুল বেগম স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। অবশেষে মঙ্গলবার (৭ জুলাই) গভীর রাতে ওই শিক্ষার্থী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
স্থানীয়রা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সায়েমের বাবা আবদুল কাদের বেঁচে নেই। অত্যন্ত গরীব ও নিরীহ পরিবারের স্বপ্ন ছিল সায়েমকে ঘিরে। সায়েমের স্বপ্ন ছিল, ইংরেজি বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা লাভ করে পরিবারের হাল ধরবে। কিন্তু তার আগেই প্রতিপক্ষের হামলায় সায়েমকে না ফেরার দেশে পাড়ি দিতে হলো।
মুদাফরগঞ্জ উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহিদুল ইসলাম শাহিন জানায়, সামান্য জায়গা-জমির সীমানা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে জসীম পাটোয়ারির পক্ষীয় লোকজন সায়েমদের বাড়ি গিয়ে তাকে তুলে নিয়ে রাস্তার ওপর নির্মমভাবে বেধড়ক মারধর করে। অত্যন্ত মেধাবী এই শিক্ষার্থী অবশেষ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন। এ ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থার দাবি জানান তিনি।
লাকসাম থানার ওসি মো. নিজাম উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে ওই কলেজ শিক্ষার্থীর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই ঘটনায় নিহতের মা থানায় মামলা করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
পিবিএ/চন্দন সাহা/এসডি