মো. নুরুল করিম আরমান, লামা, বান্দারবান: নেশাজাতীয় ৫৫৩টি ছোট বড় গাঁজা গাছ উপড়ে ২০শতক জমির গাঁজা খেত ধ্বংস করে দিয়েছে বান্দরবানের লামা থানা পুলিশ। শনিবার সকালে উপজেলা সদর ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি রওজাঝিরি এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব গাঁজা গাছ উপড়ে ফেলা হয়। এ সময় গাঁজা চাষি ইয়াহিয়া মিন্টুর স্ত্রী খুরশিদা বেগমকে (৩৫) ১৫ গ্রাম গাঁজা গাছের বীজসহ আটক করা হয়। উফড়ে ফেলা গাঁজা গাছের ওজন ৮৫ কেজি বলে জানায় পুলিশ।
সূত্র জানায়, নিষিদ্ধ নেশাজাতীয় গাঁজা চাষ করা হয়েছে; এমন সংবাদের ভিত্তিতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মোহাম্মদ আমিনুল হকের নেতৃত্বে উপ-পরিদর্শক কৃষ্ণ কৃমার দাশ, আশরাফুজ্জামান, আয়াত উল্লাহ, সহকারী উপ-পরিদর্শক রাম প্রসাদ, সুজন ভৌমিক ও আহসান হাবিবসহ সঙ্গীয় সদস্যরা শনিবার সকাল ৯টার দিকে রওজার ঝিরিতে অভিযান চালায়। এ সময় গত কয়েক মাস আগে ইয়াহিয়া মিন্টু কর্তৃক জমিতে রোপিত ৩০৩টি পূর্ণ বয়স্ক ও ২৫০টি গাঁজার চারা গাছ উপড়ে ফেলে খেতটি ধ্বংস করে দেয় পুলিশ। একই সময় গাঁজা চাষির স্ত্রী খুরশিদা বেগমকে আটক করা হলে জিঙ্গাসাবাদের এক পর্যায়ে তার কাছ থেকে গাঁজা গাছের ১৫গ্রাম বীজ উদ্ধার করা হয়। গত কয়েকদিন আগ থেকে চাষি ইয়াহিয়া মিন্টু এলাকার বাহিরে অবস্থান করার কারণে তাকে তাৎক্ষনিকভাবে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয়রা জানায়, গত বছর লামা পৌরসভা এলাকার হরিণঝিরি গ্রামের বাসিন্দা জাকের হোসেন কুতুবীর ছেলে ইয়াহিয়া মিন্টু ছাগল খাইয়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুস ছালাম লেদুর কাছ থেকে রওজাঝিরিস্থ ৬০শতক জমি ১৫ হাজার টাকায় লিজ নেয়। চল্লিশ শতাংশ জমিতে সবজি চাষ করলেও এর পাশাপাশি আনুমানিক ২০শতক জমিতে গাঁজার চাষ করে ইয়াহিয়া মিন্টু। আশপাশের লোকজন প্রথমে বুঝতে না পারলেও এক পর্যায়ে শনিবার সকালে গাঁজা চাষের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে পুলিশ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের খবর দেয়। তারা আরও জানায়, ইয়াহিয়া মিন্টু দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় গাঁজা বিক্রি করে আসছে। এ কাজে তার স্ত্রী খুরশিদা বেগম ও বোনের স্বামী মো. ইকবাল এবং ইকবালের স্ত্রী জামিলা আক্তারও জড়িত রয়েছেন। কিছুদিন আগে ইকবাল মাষ্টার পাড়া এলাকায়ও তামাক ক্ষেতের আড়ালে গাঁজার চাষ করেছিল। পরে জানাজানি হলে ইকবাল গাঁজা গাছগুলো তুলে ফেলেন।
এ বিষয়ে লামা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন বলেন, ইউনিয়নের রওজারঝিরিতে গাঁজা চাষের বিষয়টি কেউ কোনদিন জানায়নি।
নিষিদ্ধ নেশাজাতীয় গাঁজা গাছ উপড়ে খেত ধ্বংসের সত্যতা নিশ্চিত করে লামা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমিনুল হক বলেন, এ ঘটনায় জড়িত থাকার আভিযোগে খুরশিদা বেগমকে আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি মূল গাঁজা চাষি ইয়াহিয়া মিন্টুকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করা হয়েছে।
পিবিএ/হক