পিবিএ,লালমনিরহাটঃ লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় রাতের আঁধারে ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর ঘর ভাংচুর করে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে আব্দুল ওহাব(৫০) নামে এক ইউনিয়ন সমাজকর্মীর বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার(২৪ সেপ্টেম্বর) দিনগত মধ্যরাতে দলবল নিয়ে জবর দখল করা জমিতে আবাসান নির্মান শুরু করেন সমাজকর্মী আব্দুল ওহাব।
অভিযুক্ত আব্দুল ওহাব উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের সর্দারপাড়া গ্রামের মৃত ছমির উদ্দিনের ছেলে। তিনি সমাজসেবা অধিদপ্তরের লালমনিরহাট শহর সমাজসেবা কার্যালয়ে ইউনিয়ন সমাজকর্মী হিসেবে কর্মরত।
অভিযোগে জানা গেছে, সর্দারপাড়া গ্রামের মৃত ছমির উদ্দিনের চার ছেলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের বৈঠকে পৈত্রিক সম্পত্তি বন্টক নামা করে নেন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক দীর্ঘ ১০/১৫ বছর ধরে স্ব স্ব অংশ ভোগদখল করে আসছেন তারা। তৃতীয় ছেলে মমিনুল ইসলাম প্রাপ্ত জমি থেকে গত ৬ সেপ্টেম্বর ৬ শতাংশ স্ত্রী সুলতানা পারভীন রুপালীকে দেনমোহরনা বাবদ হেবা দলিল করে দেন। উক্ত জমিতে টিনসেড ঘর তৈরী করেন তিনি।
পৈত্রিক জমি স্ত্রীর নামে লিখে দেয়ায় ছোট ভাইয়ের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন বড় ভাই সমাজকর্মী আব্দুল ওহাব। স্বামী পেশাগত কারনে বাহিরে থাকায় দুই সন্তানকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকতেন স্ত্রী সুলতানা পারভীন রুপালী। এ সুযোগে গত ২১ সেপ্টেম্বর ৩০/৩৫ জন ভারাটে সন্ত্রাসী নিয়ে ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর ঘরটি ভাংচুর করে রাস্তায় ফেলে দেন আব্দুল ওহাব। বাঁধা দিলে ছোট ভাইয়ের স্ত্রী রুপালীকে লোহার রড, লাঠি দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে বিবস্ত্র করেন। স্থানীয়রা ছুটে এসে সজ্ঞাহীন অবস্থায় রক্তাক্ত রুপালীকে উদ্ধার করে আদিতমারী হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ দিকে গৃহবূ সুলতানা পারভীন রুপালী জমি উদ্ধারের জন্য আব্দুল ওহাবসহ ৪জনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার(২৪ সেপ্টেম্বর) আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদমান জমির উপর ১৪৪ ধারা জারি করেন। আদালতের উক্ত নির্দেশ অমান্য করে বৃহস্পতিবার রাতের আঁধারে জমির চার দিকে বেড়া দিয়ে ভিতরে আবাসন নির্মান শুরু করেন আব্দুল ওহাব।
বাদি সুলতানা পারভীন রুপালী বলেন, প্রতিপক্ষ টাকার জোরে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাকে পিটিয়ে বিবস্ত্র ও রক্তাক্ত করে। আমি সজ্ঞাহীন হলে তারা আমার ঘর ভাঙচুর করে রাস্তায় ফেলে দেয়। আমি সুস্থ হয়ে আদালতে গিয়েছি। আদালত নির্দেশ দিলেও তারা অমান্য করে জমি জবর দখলের চেষ্টা করছে। বাঁধা দিলে আমাদেরকে সপরিবারে হত্যার হুমকী দিচ্ছে।তারা টাকার জোরে সবাইকে ম্যানেজ করে আমার জমি দখলের চেষ্টা করছে। তিনি ন্যায় দাবি করেন।
তাদের প্রতিবেশী ইদ্রীস আলী বলেন, জমিটির উপর রুপালীর একটি ঘর ছিল। তা ওহাব দলবল নিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছে। শুক্রবার সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি ওই জমিটি বেড়া দিয়ে ঘেরা।
অভিযুক্ত আব্দুল ওহাবের স্ত্রী উম্মে কুলসুম ফেরদৌসী বলেন, রাত হোক বা দিনে হোক আমাদের জমি আমরা ঘিরে নিয়েছি। এর বাহিরে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি তদন্ত) গুলফামুল হক গুলফাম বলেন, আদালতের নির্দেশে দুই পক্ষকে নালিশী জমিতে না যেতে নির্দেশ দিয়েছি। এরপরেও কেউ তা অমান্য করলে পুনরায় আদালতকে অবগত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে
পিবিএ/শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত/এসডি