শরীরে কৃত্রিম হৃদযন্ত্র নিয়ে সুস্থ আছেন ১০ বছর!

পিবিএ ডেস্ক: কৃত্রিম হৃদযন্ত্র নিয়ে ভারতে সবথেকে বেশিদিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকার রেকর্ড করে ফেলেছেন সন্তোষ দুগার। আগে এই কৃত্রিম হৃদযন্ত্র স্থাপন অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ ছিল। এখন খরচ কমেছে অনেকটাই।

শরীরে কৃত্রিম হৃদযন্ত্র নিয়ে দিব্যি আছেন তিনি। তবে শুধু সুস্থ আছেন এইটুকু বললে সবটা বোধহয় বলা হবে না। কৃত্রিম হৃদযন্ত্র নিয়ে ভারতে সব থেকে বেশিদিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকার রেকর্ড করে ফেলেছেন সন্তোষ দুগার।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, কলকাতার বাসিন্দা সন্তোষ একজন শিল্পোদ্যোগী। হৃদযন্ত্র যখন ক্রমশ স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারান। তখন সেই রোগীকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বিভিন্ন ওষুধ ও অন্য পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু ওষুধ বা অন্য পদ্ধতি প্রয়োগের পরও হার্ট যখন কোনোভাবে স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা ফিরে পান না। তখনই সেই রোগীর শরীরে হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। কারণ ওই রোগীকে বাঁচাতে তখন এটা ছাড়া আর অন্য কোনও পথ খোলা থাকে না। এখন ভারতে ও পশ্চিমবঙ্গে হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের অপেক্ষায় থাকা রোগীর সংখ্যা অনেক। কিন্তু সে তুলনায় ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট-এর সুযোগ কম।

কীরকম দেখতে এই কৃত্রিম হৃদযন্ত্র? এটা দেখতে অনেকটা টুলু পাম্পের মতো। কলকাতার বাসিন্দা সন্তোষের শরীরে ২০০৯ সালে ইন্টার-ভেনসোনাল কার্ডিয়লজিস্ট প্রকাশ কুমার হাজরার নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক সেই কৃত্রিম হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করেছিলেন। তারপর ১০ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। এই দীর্ঘ সময় সন্তোষ সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিক রয়েছেন। তার ব্যবসায়িক কাজকর্মও স্বাভাবিকভাবেই করছেন। হার্টের রোগীদের জন্য এটা যে নিঃসন্দেহে একটা আশার বার্তা বলাই যায়।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আগে এই কৃত্রিম হৃদযন্ত্র স্থাপন অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ ছিল। বছর কয়েক আগেও এই যন্ত্রের দাম ছিল প্রায় ৫ কোটি টাকার উপর। সেইসময় ভারতে এই ধরনের যন্ত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা ছিল। এমনকি বিদেশ থেকে আমদানিতেও সমস্যা ছিল। তখন বিদেশে গিয়ে এই মূল্যবান যন্ত্রাংশ কিনতে হত। পরে নিয়ম-কানুন শিথিল হয়। আর তারপর ২০১৮ সাল থেকে এদেশে কৃত্রিম হার্টের যন্ত্রাংশ আসতে শুরু করেছে। এখন খরচ কমেছে অনেকটাই। বর্তমানে এদেশে এবং কলকাতায় এই ধরনের কৃত্রিম হৃদযন্ত্র বসাতে খরচ পড়ছে ৪০ থেকে ৬০ লাখ টাকা। এই মুহূর্তে কলকাতা শহরের তিনজনের শরীরে বসানো হবে এই কৃত্রিম হৃদযন্ত্র। এখন তার প্রস্তুতি চলছে।

এক্ষেত্রে একটাই সতর্কবার্তা রয়েছে। ব্যাটারির কোনও গোলযোগ হলে ৯০ সেকেন্ডের মধ্যেই কাজ করা বন্ধ করে দেবে কৃত্রিম হৃদযন্ত্রটি। সেক্ষেত্রে রোগীর মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। তাই সবসময় এক্সট্রা ব্যাটারি সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক। রোগীকে নিয়মিত চেকআপ করতে হয়। নিয়মিত ব্যাটারি যন্ত্রাংশ ও হার্টমেট মোটরের রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়।

পিবিএ/ইকে

আরও পড়ুন...