শামিমার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করতে চিঠি

পিবিএ ডেস্ক: ১৫ বছর বয়সে দুই বন্ধুর সঙ্গে আইএসে যোগ দিতে লন্ডন ছেড়ে সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন শামিমা বেগম। এর পরেই তার ভাগ্য নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। আইটিভি নিউজের বরাতে মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছেন।

IS-women-shamima-PBA

বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের জন্য এ ঘটনা উভয় সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে। জিহাদি ও আইএস যোদ্ধাদের প্রতি সহানুভূতি সম্পন্নদের দেশে ঢুকতে দেয়া হবে নাকি নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে তাদের বাধা দেয়া হবে, তা নিয়ে এসব দেশ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে।

এর আগে সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে শামিমার খোঁজ পাওয়া গেছে। গত সপ্তাহে তিনি একটি ছেলেসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে সন্তানসহ ব্রিটেনে ঢুকতে দেয়ার সুযোগ দিতে সরকারের অনুকম্পা প্রার্থনা করছেন তিনি। বর্তমানে ১৯ বছর বয়সী এ তরুণী সাংবাদিকদের কাছে বলেন, তিনি ব্রিটেনে ফিরতে আগ্রহী।

শামিমা বেগমের মাকে লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, তার ব্রিটিশ নাগরিকত্বের বাতিলসংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত চিঠির সঙ্গে জুড়ে দেয়া হয়েছে। আপনাদের সেটি দেখার অনুরোধ রইল।

‘আপনার মেয়ের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের নথি আজ (১৯ ফেব্রুয়ারি) নোটিশ আকারে প্রকাশ করা হবে এবং সে অনুসারে তার নাগরিকত্ব বাতিল করা হবে।

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ বলেন, বিদেশে সন্ত্রাসী সংগঠনকে সমর্থন করা কাউকে ব্রিটেনে ফিরতে বাধা দেয়ার ক্ষেত্রে তিনি কোনো দ্বিধা করবেন না।

শামিমার পরিবারের একজন আইনজীবী মোহাম্মদ টি আকুঞ্জি টুইটারে দেয়া এক পোস্টে বলেন, ব্রিটিশ সরকারের এ সিদ্ধান্তে তার পরিবার খুবই হতাশ। তবে সব ধরনের আইনি বিকল্প খুঁজে দেখা হবে।

ব্রিটিশ সরকারি সূত্রে বরাত দিয়ে স্কাই নিউজ জানিয়েছে, তিনি ব্রিটিশ-বাংলাদেশের যৌথ নাগরিক। কাজেই তিনি তার নাগরিকত্ব বাতিল করতে পারতেন।

নিজের সদ্যজাত সন্তান নিয়ে তিনি বলেন, আমার আশঙ্কা সে ক্যাম্পের ভেতরেই মারা যাবে। আমার প্রতি বহু মানুষের সহানুভূতি আছে বলে আমি মনে করি। যখন আমি ব্রিটেন ছেড়ে আসি, তখন কী ঘটছে, তা আমি জানতাম না।

স্কুল পড়ুয়া দুই বন্ধু খাদিজা সুলতানা ও আমিরা আবাসির সঙ্গে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিনের বাসা থেকে পালিয়ে তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় শামিমা।

বোমা হামলায় বাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে খাদিজার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। অপরজন আমিরার ভাগ্যে কী ঘটেছে তা এখনও জানা সম্ভব হয়নি।

শামিমা নেদারল্যান্ডসের ধর্মান্তরিত এক নাগরিককে বিয়ে করে সিরিয়ার আইএস নিয়ন্ত্রিত শহর রাকায় বসবাস করছিলেন। পরে আইএস রাকার নিয়ন্ত্রণ হারালে তারা ফোরাত নদীর তীরবর্তী জঙ্গিগোষ্ঠীটির ছিটমহল বাঘুজে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

সম্প্রতি সিরিয়ায় আইএসের তথাকথিত খিলাফতের অবশিষ্টাংশ বলে বিবেচিত বাঘুজের পতন হলে শামিমার স্বামী আত্মসমর্পণ করেন, আর বাঘুজের অন্যান্য বেসামরিকের মতো শামিমার ঠাঁই হয় সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে।

পিবিএ/এফএস

আরও পড়ুন...