পিবিএ ডেস্ক : তার নিজের দেশ ব্রিটেন আগেই নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়েছে। আপাতত তাই আদতে ব্রিটিশ বাসিন্দা শামিমা বেগম সদ্যোজাত ছেলেকে নিয়ে ঠাঁই নিয়েছেন সিরিয়ার কোনও এক অজ্ঞাত জায়গায়। তার স্বামী তথা ‘প্রাক্তন’ আইএস জঙ্গী নেদারল্যান্ডসের বাসিন্দা ইয়াগো রিয়েদিজক বন্দি উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার একটি কুর্দিশ ডিটেনশন সেন্টারে। সেখান থেকেই বিবিসিকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, সপরিবার এখন নেদারল্যান্ডসেই ফিরে যেতে চান তিনি। তবে ইয়াগোর সাক্ষাৎকারটি শিরোনামে এসেছে অন্য কারণে। স্পষ্ট করে তিনি জানিয়েছেন, অপ্রাপ্তবয়স্ক শামিমাকে বিয়ে করতে প্রথমে একটু দ্বিধা থাকলেও পাত্রী নিজে যেহেতু উদ্যোগী ছিলেন, তাই এতে কোনও অসুবিধার কিছু দেখেননি ইয়াগো।
তথ্য মতে, ২০১৪ সালে শামিমা যখন ব্রিটেন থেকে পালিয়ে সিরিয়া যান তখন তার বয়স মাত্র ১৫। ইয়াগোর ২৩। তিনি জানালেন, বন্ধুরা যখন এসে খবর দিল সিরিয়ার ‘উইমেন’স সেন্টারে’র একটি মেয়ে বিয়ের জন্য ছেলে খুঁজছে, তখন প্রথমে বিশেষ আমল দেননি তিনি। ইয়াগো বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, ওর বয়সের কথা ভেবেই উৎসাহী হইনি। কিন্তু তারপর প্রস্তাবটি মেনে নেই কারণ শেষমেশ ও ওটাই চাইছিল।’
তাছাড়া, ইয়াগো কথা বলে বুঝেছিলেন অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় নয়, রীতিমতো বুঝেশুনে কাজটি করতে চাইছেন শামিমা। পরে অবশ্য ইয়াগো স্বীকার করেছেন, ‘সত্যি ওর বয়স খুব কম ছিল, আরেকটু অপেক্ষা করলে হয়তো ভাল হতো ওর জন্য। কিন্তু ও চায়নি। ও বিয়ে করতে চেয়েছে। তাই ওকে বিয়ে করেছি।’
কিন্তু তারপরের সময়টা ইয়াগো-শামিমা কারও পক্ষেই খুব সুখকর হয়নি। পর পর দুই সন্তান জন্মায়, কিন্তু দু’জনেরই অপুষ্টিতে মৃত্যু হয়। নেদারল্যান্ডসে স্বচ্ছল মধ্যবিত্ত পরিবারে বড় হয়ে ওঠা ইয়াগো ধীরে ধীরে বুঝতে পারেন বাস্তবতা। তার দাবি, আইএস সঙ্গ ত্যাগ করতে চাইলে তাকে রাক্কায় বন্দি করে জঙ্গীরা। ডাচ গুপ্তচর সন্দেহে তীব্র অত্যাচার চালায় তার উপর।
শেষমেশ একদিন সুযোগ বুঝে স্বামী-স্ত্রী মিলে সিরিয়ায় আইএস-এর শেষ ঘাঁটি বাঘুজ থেকে পালান। শামিমা তখন ফের সন্তান সম্ভবা। পরে তার ঠাঁই হয় এক শরণার্থী শিবিরে। সেখানেই ছেলে জারাহ-এর জন্ম দেন তিনি। দরবার করেন ব্রিটিশ সরকারের কাছে দেশে ফেরার। কিন্তু স্বামীর হদিস তখনও অজানা।
পিবিএ/জিজি