পিবিএ,রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটির বরকল উপজেলার দক্ষিণ বরুনাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক কামরুল হাসানের কলমের আঘাতে রক্তাক্ত হলো আমিনুল ইসলাম নামে এক সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা। বুধবার (০৬ মার্চ) দুপুরে উপজেলার সোনালী ব্যাংক শাখা কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, বুধবার দুপুরে একটি চেক বই নেয়াকে কেন্দ্র করে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে শিক্ষক কামরুল হাসান ব্যাংকের আইটি কর্মকর্তা মোঃ আমিনুল ইসলামের চোখে কলম দিয়ে আঘাত করে উপর্যুপরি ঘুষি মারতে থাকেন। এতে চোখের উপরে কেটে যায় এবং আমিনুল ইসলাম চোখের কোণে মারাত্মক আঘাত পেয়ে একেবারে রক্তাক্ত হন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।
এদিকে আহত ব্যাংক কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, উপজেলার দক্ষিণ বরুনাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুল হাসান কয়েকজন মানুষের নামে ব্যাংক থেকে চেক বই তার হেফাজতে নিতে চায়। ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী যার চেক বই সেই নিতে পারবে। কিন্তু ওই শিক্ষক নিয়ম না মেনে চেক বই নিতে গেলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করে। এতে তাঁর সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ে এবং দুর্ব্যবহার শুরু করে। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে কলম দিয়ে তাঁ বাম চোখে আঘাত করে বলে তিনি জানান।
অপরদিকে শিক্ষক কামরুল হাসান বলেন, তাঁর এক সহকর্মীর নতুন চেক বই নেয়ার জন্য ব্যাংকে স্লিপ জমা দেন। ব্যাংকের এক কর্মচারী দুপুরের দিকে এসে চেক বইটি নেয়ার জন্য বলেন। সেই বইটি নিতে গেলে ব্যাংক ব্যবস্থাপক জসলিন চাকমা চেক বইটি দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে কয়েকজন শিক্ষক মিলে অনুরোধ করলে ব্যাংক ম্যানেজার চেক বইটি দিতে রাজী হয় এবং ব্যাংক আইটি অফিসার আমিনুল ইসলামের কাছে যেতে বলেন। সেখানে গেলে আইটি কর্মকর্তা তাকে চোর অপবাদ দেয়। তখন সে রাগান্বিত হয়ে তাকে বেয়াদব বলে। একজন শিক্ষককে সে কেন চোর বলবে? তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে ওই ব্যাংক কর্মকর্তা চেয়ার থেকে উঠে তাকে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মারতে থাকে। নিজেকে রক্ষা করতে গেলে হাতে থাকা কলম ওই ব্যাংক কর্মকর্তার বাম চোখের পাতায় লাগে। এতে তার রক্তক্ষরণ হয়।
এ ব্যাপারে সোনালী ব্যাংক বরকল শাখার ব্যবস্থাপক জসলিন চাকমা বলেন,গ্রাহকদের সেবা দেয়া ও গ্রাহকদের একাউন্ট নিরাপত্তা দিতে সদা সচেষ্টা থাকি। একজনের একাউন্ট সম্পর্কে অন্য জনের যেমনি জানার অধিকার নেই, তেমনি একজনের চেকবইও অন্যজনকে দেয়ার নিয়ম নেই। কিন্তু সহকারি শিক্ষক কামরুল হাসান ব্যাংকের এ নিয়ম তেয়াক্কা না করে শক্তি ও ক্ষমতা প্রদর্শন করে জোর করে অন্য জনের চেক বই নিতে চেয়েছেন। ব্যাংকের ভিতরে ঢুকে ওই শিক্ষক ব্যাংক কর্মকর্তার চোখে আঘাত করে রক্তাক্ত করেছে সেটা অন্যায় ও বেআইনি। ইতোমধ্যে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ব্যাংকের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবিষয়ে বরকল মডেল থানার ওসি মফজল আহম্মদ খান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আহত ব্যাংক কর্মকর্তা মোঃ আমিনুল ইসলাম ও সহকারি শিক্ষক কামরুল হাসানের বক্তব্য নেয়া হয়েছে। আহত ব্যাংক কর্মকর্তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। থানায় এখনো কোন মামলা হয়নি। মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পিবিএ/এনএ/হক