শরিফুল ইসলাম: শিল্প কারখানার খোলার সিদ্ধান্ত এবং শ্রমিকদের আজ থেকে কাজে যোগদানের নির্দেশ দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি। রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের ব্যক্তিগত আইডিতে তিনি এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি লিখেছেন, যাদের পরিশ্রমের উপার্জিত অর্থে আমার রাষ্ট্র চলে। আমার আপনার বেতন হয়। আজ তাদের কি মৃত্যুর মুখে ফেলে দিচ্ছি ? সারা পৃথিবী আজ নিস্তব্ধ। শহর গুলো তালাবদ্ধ। সারা বিশ্ব যার প্রকোপে থরথর করে কাপছে। ধেয়ে ধেয়ে যাচ্ছে লাশের মিছিল। ইচ্ছা করলেও কেউ পারছে না স্বাভাবিক ভাবে ঘুরে বেড়াতে, পারছে না স্বজনের কাছে যেতে। আর সেখানে আমাদের চলাচল স্বাভাবিক।
শিল্প কারখানার শ্রমিক দেশের অর্থনীতির বড় যোদ্ধা। যারা দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখে। আজ তারা চাকরি বাঁচানোর জন্য, জীবিকার তাগিদে পায়ে হেটে ছুটে চলছে গন্তব্যে। যে দৃশ্য দেখি আমি হতাশ। কি হচ্ছে এগুলো কি হতে চলছে ? এই গণজমায়েত সৃষ্টি শুধু কি তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছি ? না কি পুরো রাষ্ট্র কে ? যেখানে সরকার বারবার হুশিয়ার করে বলছে, আগামী ১১ তারিখ পর্যন্ত আমাদের সর্বোচ্চ সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। সেখানে হুট করেই গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি গুলো খুলে দেওয়া হল। কিন্তু কেন ? তিব্র সমালোচনার মুখে পড়ে আবার বন্ধ করেও দেওয়া হল। এখন যারা চাকরি বাঁচানোর জন্য (পেট বাচাতে) গার্মেন্টস মুখি হয়ে চলে এসেছে তারা এখন কি করবে ? গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির মালিক ও বিজিএমইএ এর সভাপতি সহ সকল সদস্যদের কি মানসিক জ্ঞান লোপ পেয়েছে ?
এমন অবস্থায় হলে তীরে এসে নৌকা ডুবে যাওয়ার গল্প কাহিনি হয়ে যাবে। সৃষ্টিকর্তার রহমতে ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ মোতাবেক আমরা এখন পর্যন্ত সফলভাবে টিকে আছি। আমরা করোনা মোকাবেলায় তৃতীয় ধাপে চলে এসেছি। এখন আমাদের প্রয়োজন আরেক টু বেশি সচেতনতা। এ সময় টা অবহেলা কাটিয়েছে অন্যান্য রাষ্ট্র গুলো আজ তাদের এই অবহেলার খেসারত হিসেবে লাশের মিছিল হচ্ছে। যেটা আমরা সকলেই দেখতে পারছি। সুতরাং প্লিজ আমরা আরেকটু সচেতনতা অবলম্বন করি। একটু কষ্ট করে ঘরে থাকি।
আমি আমার নির্বাচনী এলাকাসহ দেশের সকল বিত্তবান শ্রেণীর মানুষের প্রতি উদাত্ত আহ্বান করব, আপনারা দেশের এই ক্লান্তিকর সময়ে আপনার প্রতিবেশীর পাশে থাকেন। আপনারা যদি এগিয়ে না আসেন আমাদের মতো দেশে সব দায়িত্ব সরকারের একার পক্ষে নিয়ে এই দুর্যোগ মোকাবেলা করা সম্ভব নয়।
রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন গুলোর মানবিক সাহায্য গুলো দেখে আমি অভিভূত হয়েছি। এ সকল সেচ্ছাসেবী সংগঠন গুলো কে অনন্তের অন্তস্থল থেকে অভিবাদন ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
আবারো বলব প্লিজ আর কয়েকটি দিন নিজের জীবনের স্বার্থে কষ্ট করে ঘরে থাকুন। আপনার সেবায় প্রশাসনসহ আমরা তো নিয়োজিত আছি। ইনশাআল্লাহ দ্রুত পরিস্থিতি মানুষের অনুকূলে আসবে। তখন আবার একসাথে ছুটে চলব সকলে।পিবিএ/এএম