শিশু আশিককে হত্যার পর ঘরের চৌকির নিচে বস্তাবন্দি করে রাখে

পিবিএ, শেরপুর (বগুড়া): বগুড়ার শেরপুরে দোকানে যাওয়ার নাম করে ৮ বছরের শিশু আশিক ডেকে নিয়ে বলাৎকারের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে হত্যা ও লাশ গুমের চেষ্টার দায়ে একই পরিবারের চারজনকে আটক করা হয়েছে। ৩০ অক্টোবর বুধবার দুপুরে উপজেলার কৃষ্ণপুর যমুনাপাড়া (বটতলা) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শিশু আশিক নিখোজ হওয়ার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হত্যাকারির পিতা সুরুজ্জামানের বাড়ি থেকে শিশু আশিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আশিককে হত্যার পর
আশিককে হত্যার পর ঘরের চৌকির নিচে বস্তাবন্দি করে রাখে

 

অভিযোগ সুত্রে প্রকাশ, উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর যমুনাপাড়া গ্রামের মঞ্জুরুল ইসলামের ৮ বছর বয়সী ছেলে আশিককে গত ৩০ অক্টোবর বুধবার বেলা ৩টার দিকে পাশের বাড়ির সুরুজ্জামানের ছেলে সিয়াম(১৪) দোকানে যাওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে আশিক সন্ধ্যা পর্যন্ত নিখোঁজ থাকায় পরিবারের লোকজন খোজাখুজি করতে থাকে। এক পর্যায়ে বেলা ৫টার দিকে আশিকের স্বজনেরা ওই সিয়ামের ঘরের মধ্যে ঢুকে চৌকির নিচে বস্তাবন্দি লাশ দেখতে পায়। পরে মরদেহ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্য চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে থানা পুলিশে খবর দিলে ওইদিন সন্ধ্যায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সিয়াম আহম্মদ(১৪) ও তার পিতা সুরুজ্জামান (৫০) মা পারভীন বেগম (৪৫) ভাই সোহাগ (২৬) কে আটক করে।
স্থানীয়রা জানান, শিশুটির মরদেহ উদ্ধারের পর তার হাত-পা বাধা ছিল এবং মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। সুরুজ্জামানের পরিবারের লোকজন মরদেহ বস্তায় ভড়ে গুম করার চেষ্টার সময় তাদের আচরনবিধি প্রতিবেশীদের সন্দেহ হলে তাদের ঘরে গিয়ে বস্তা বন্দি লাশ দেখতে পায়।

পরবর্তীতে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত সিয়াম আহম্মেদ বলে, আশিককে মুলত বলাৎকার করার উদ্দেশ্য ডেকে আনা হয়। এতে রাজি না হওয়ায় তাকে গলা টিপে ধরার পাশাপাশি বাঁশ দিয়ে আঘাত করলে সে মারা যায়। পরে আমার পরিবারের লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে ওই শিশুর মরদেহটি গুমের চেষ্টার জন্যই বস্তাবন্দি করে চৌকির নিচে রেখে দেই।

শিশু হত্যার ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে ঘটনার রাতেই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেরপুর সার্কেল মো. গাজিউর রহমান থানায় উপস্থিত হয়ে ধৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন বলে জানা গেছে।
পরে শিশু আশিকের হত্যায় ঘটনায় পিতা মুঞ্জু মন্ডল বাদি হয়ে সিয়াম আহম্মেদসহ তার পিতা-মাতা ও ভাইকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।

এ ব্যাপারে শিশু আশিকের পিতা চাতাল ব্যবসায়ী বাবা মুঞ্জু মন্ডল পিবিএ’কে বলেন, তার দুই মেয়ে আর এক ছেলের মধ্যে আশিক সবার ছোট। সে পড়াশোনা করতে ধড়মোকাম শিক্ষা পল্লী আদর্শ কেজি স্কুলে। সুন্দর ফুটফুটে দুরন্ত আশিকের পরনে ছিল ফুটবলের প্রিয় দল ব্রাজিলের জার্সি। সেই জার্সি গায়েই মৃত্যু হয় তার। তবে কি ছিল তার অপরাধ? এই প্রশ্ন এলাকাবাসী সকলের মনেমুখে ঘুরপাক খাচ্ছে।

এ ব্যাপারে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবীর পিবিএ’কে বলেন, শিশুটিকে হত্যার পর লাশগুম করার চেষ্টায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। ৩১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে এবং আটককৃতদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

পিবিএ/ আবু বকর সিদ্দিক/জেডআই

আরও পড়ুন...