শিশু তাসনিয়া হত্যার রহস্য উদঘাটন করল পিবিআই, আটক ৩

যশোরের বাঘারপাড়ায় বিকৃত যেীনকর্ম করতে গিয়ে ০৫ বছরের শিশু তাসনিয়া হত্যায় জড়িত ০৩ জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই যশোর জেলা।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন ১. ইশিতা আক্তার ঋতু (১৯), ২. মোঃ তহিদুর রহমান (৫৫), ৩. নিরু বেগম (৪২)।

বাদী রজিবুল ইসলাম (৩৩), তিনি পেশায় একজন ট্রাকচালক। তার ছোট মেয়ে মোছাঃ তাসনিয়া খাতুনকে (৫ বছর ৬ মাস) গত ২০ জুলাই দুপুর হতে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরদিন গত ২১ জুলাই ভোর অনুমান ০৫.৩০ ঘটিকায় বাদী ও তার চাচাত দুলাভাই মোঃ কিয়ামত (৫০) তাদের বাড়ির পাশে রাজ্জাক খাঁর পুৃকুরে খুঁজতে থাকে। এক পর্যায়ে রাজ্জাক খাঁর পুকুরে বাদীর মেয়ের মরদেহ ভাসতে দেখে। থানায় সংবাদ দিলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। পরে বাঘারপাড়া থানায় অপমৃত্যু মামলা নং-২৬/২৪, তাং ২১-০৭-২০২৪খ্রিঃ রুজু হয়।

বাদীর ও তার পরিবারের লোকজনের প্রাথমিক ভাবে মনে হয় বাদীর মেয়ে পানিতে ডুবে মারা গেছে। কিন্তু থানা পুলিশের বাদীর মেয়ের মৃত্যুর বিষয়ে সন্দেহ থাকায়, তাসনিয়ার লাশ ময়না তদন্তের জন্য যশোর মর্গে প্রেরণ করে। ময়না তদন্ত প্রতিবেদেন প্রাপ্ত হয়ে পুলিশ জানায় বাদীর মেয়েকে যৌন নিপীড়ন করতঃ গলা ও নাক মুখ চেপে হত্যা করা হয়েছে।

উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে যশোর বাঘারপাড়া থানার মামলা নং-০৯, তারিখ : ১৬/০৯/২০২৪ খ্রিঃ ধারা- ৩০২ পেনাল কোড তৎসহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংঃ-০৩) এর ৯(২)/৩০ রুজু হয়।

অভিযোগ হতে জানা যায় য়ে, গত ২০ জুলাই দুপুর ১২.০০ ঘটিকা হতে দিবাগত ও রাত্রী ২১ জুলাই ভোর ০৫.৩০ ঘটিাকর মধ্যে যেকোন সময় অজ্ঞাতনামা আসামীরা অজ্ঞাত স্থানে বাদীর মেয়ে শিশু তাসনিয়ার সাথে যেীনকর্ম করার পর তাকে গলা ও নাক মুখ চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। গোপন করার জন্য আসামীরা রাতের আধারে মৃতদেহ রাজ্জাক খাঁর পুকুরের পশ্চিম-দক্ষিণ কোনায় ফেলে দেয়।

জনাব মোঃ মোস্তফা কামাল, ডিআইজি (পূর্বাঞ্চল), পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), ধানমন্ডি, ঢাকা এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায়, পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন, পিপিএম-সেবা এর নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মীর রেজাউল হোসেন ,এসআই (নিঃ) ¯েœহাশিস দাশ, এসআই (নিঃ) ডিএম নুর জামাল হোসেন সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্স সহ যশোর জেলার আভিযানিক দল গত ২৯-০৯-২০২৪খ্রিঃ ভোর ০৫.৩০ ঘটিকায় আসামী ১. ইশিতা আক্তার ঋতু (১৯), ২. মোঃ তহিদুর রহমান (৫৫), ৩. নিরু বেগম (৪২)-দেরকে তাদের বসতবাড়ি হতে গ্রেফতার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী ১. ইশিতা আক্তার ঋতু (১৯ ) জানায় যে, সে পর্ণোগ্রাফিতে আসক্ত। বাদীর মেয়ে তাসনিয়া খাতুন (৫ বছর ৬ মাস) গত ২০ জুলাই সকাল অনুমান ১০.৩০ ঘটিকায় ইশিতা আক্তার ঋতুদের বাড়িতে আসে। আসামী ইশিতা আক্তার ঋতু বাদীর মেয়েকে তার রুমের মধ্যে নিয়ে জোরপূর্বক যৌন আসক্তি চরিতার্থ করতে থাকে। যৌনাঙ্গে আঘাতের কারণে শিশু তাসনিয়া চিৎকার করতে থাকলে ইশিতা আক্তার ঋতু তাকে চড়-থাপ্পড় মারে। মারপিট করার কারণে আহত শিশু তাসনিয়া গোংড়াতে থাকে। একপর্যায়ে আসামী ইশিতা আক্তার ঋতু তাদের ঘরে থাকা শাবল দিয়ে তাসনিয়ার মাথার পিছনের আঘাত করে এবং গলা চেপে শ্বাসরোধ করতঃ হত্যা করে।

পরবর্তীতে শিশু তাসনিয়ার হত্যাকাণ্ডেরে বিষয়টি ইশিতা আক্তার ঋতু তার বাবা আসামী ২. মোঃ তহিদুর রহমান (৫৫) ও মা আসামী ৩. নিরু বেগম (৪২) দেরকে জানায়। জানার পর তারা পরস্পর পরামর্শ করে মরদেহ প্রথমে তাদের ঘরের মধ্যে রক্ষিত প্লেনশীটের বাক্সের মধ্যে লেপ পেঁচিয়ে রাখে। ঐ দিন অর্থাৎ ২১ জুলাই দিবাগত রাত্র ০২.৩০ ঘটিকায় তাসনিয়ার মরদেহ গোপন করার উদ্দেশ্যে তাদের বাড়ীর পার্শ্ববর্তী জনৈক রাজ্জাক খাঁর পুকুরে ফেলে দেয় মর্মে স্বীকার করে।

গতকাল রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আদালত, যশোরে ৩ জনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।

আরও পড়ুন...