শিশু সন্তানের পথে সেই বাবাও চলে গেলেন না ফেরার দেশে!

পিবিএ, সুনামগঞ্জ: প্রতিদিনের মতো ছুটি শেষে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে বাবার হাত ধরে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে প্রথম শ্রেণির ছাত্র অন্তর (৬) নিহত হওয়ার পৌণে পাচ ঘন্টার ব্যবধানে নিজ সন্তানের পথেই অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেলেন অন্তরের সেই আদুরে বাবা সাবিদুর রহমান সাবিত। বুধবার বিকেলে সোয়া ৪টার দিকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
নিহত সাবিদুর রহমানের বাড়ি জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সেলিমগঞ্জের কাশিপুর গ্রামে। তিনি জামালগঞ্জ উপজেলা সদরের হেলিপ্যাড মাঠ লাগোয়া ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করে সন্তানের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
একই দিন বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টায় জামালগঞ্জ উপজেলা সদরের চাইল্ড কেয়ার কিন্ডারগার্টেন ছুটি হলে প্রতিদিনের মতো দুই ভাইবোন বাবা সাবিদুর রহমানের হাত ধরে বাসায় ফিরছিল।
এ সময় তাদের উপর বজ্রপাত পড়লে বাবার হাত ধরা অবস্থায় সড়কের উপর প্রথমেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন স্কুল ছাত্র অন্তর। অপরদিকে একই সময় আহত হয়েছেন নিহতের বাবা সাবিদুর রহমান ও প্রতিবেশী চাচাত বোন তৃতীয় শ্রেণির স্কুল ছাত্রী নওশিন। তাদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার রাতে জামালগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ সাইফুল আলম জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা সদরের চাইল্ড কেয়ার কিন্ডারগার্টেন ছুটি হলে প্রতিবেশী স্কুলছাত্রী নওসিন, অন্তর প্রতিদিনের মতো দুই শিক্ষার্থী সাবিদুর রহমানের হাত ধরে বাসায় ফিরছিল।
এ সময় প্রবল ঝড় শুরু হয়। হঠাৎ বজ্রপাতে দুই শিশুসন্তানসহ সাবিদুর সংজ্ঞাহীন হয়ে সড়কে লুটিয়ে পড়েন। আশপাশে থাকা স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে জামালগঞ্জ উপজেলা সদর হাসপাতালে নিলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক অন্তরকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে শারিরীক অবস্থার অবনতি হওলে সাবিদুরকে দ্রুত সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয়। টানা প্রায় পৌণে পাঁচ ঘন্টা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে বুধবার বিকেলে সোয়া চারটার দিকে অবশেষে তিনিও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এ ঘটনায় গোটা জামালগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক,শিক্ষার্থী ও গোটা উপজেলা জুড়ে শোক বিরাজ করছে।
পিবিএ/হাবিব সরোয়ার আজাদ/বাখ

আরও পড়ুন...