পিবিএ ডেস্ক; কম-বেশি প্রত্যেকেরই প্রিয় শীতকাল। পিকনিক, ভ্রমণ, বিভিন্ন ফেস্টিভ্যাল, এইসব কিছুর জন্য প্রত্যেকেই পছন্দ করে শীতকালকে। কিন্তু, শীতকালের সবথেকে বড় সমস্যা হল, এইসময় চুলে প্রচণ্ড খুশকি হয়। খুশকি মাথার ত্বকের একটি ব্যাধি যার কারণে মাথায় প্রচণ্ড চুলকানি হয়। ফলে চুলের ক্ষতি হয়। শীতকালে খুশকি প্রচণ্ড পরিমাণে বেড়ে যায় কারণ এই মরসুমে আবহাওয়া শীত এবং শুষ্ক থাকে।
খুশকি হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে, যেমন – ব্যাকটিরিয়া, ছত্রাক, হরমোন পরিবর্তন, স্ট্রেস, ময়লা, পরিবেশগত এবং বাহ্যিক অবস্থা। খুশকি এমন একটি অবস্থা যা সবাইকে অস্বস্তিকর করে তোলে। তবে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা গেলে অবশ্যই খুশকি প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই, শীতকালে কীভাবে খুশকি রোধ করবেন সে সম্পর্কে রইল কিছু উপায়।
সেগুলি হল- ১) মাথার ত্বক ময়েশ্চরাইজ রাখুন শুষ্ক মাথার ত্বক চুলকানি, খুশকির অন্যতম কারণ। তাই শীতকালে খুশকির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে প্রতিরোধ করার একটি দুর্দান্ত উপায় হল মাথার ত্বককে ময়েশ্চারাইজ রাখা। সুতরাং, পুষ্টিকর এবং ময়শ্চারাইজিংযুক্ত চুলের পণ্যগুলি ব্যবহার করুন। ২) মাথা ধোয়ার আগে তেল লাগানো আবশ্যক মাথার ত্বকে গরম তেলের ম্যাসাজ করা কেবল খুশির সাথেই লড়াই করে না, এর থেকে বিভিন্ন উপকার পাওয়া যায়। এটি কেবল মাথার ত্বকে ময়শ্চারাইজ করে না, আমাদের চুলকেও মজবুত ও পুষ্টিযুক্ত করতে সহায়তা করে। মাথার ত্বককে ভালো রাখা এবং চুলকে খুশকিমুক্ত রাখার জন্য নারকেল তেল হল সবচেয়ে ব্যবহৃত সাধারণ তেল।
এছাড়াও, একপ্রকার ঘরোয়া প্রতিকার থেকে আপনি খুশকি দূর করতে পারেন, সেটি হল- নারকেল তেলের সঙ্গে টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে এই মিশ্রণটি মাথার ত্বকে বা তালুতে ভালো করে লাগিয়ে বা ম্যাসাজ করে নিন ৷ এটি প্রায় এক ঘণ্টা রেখে হালকা গরম জলে মাথা ধুয়ে ফেলুন। ৩) বেশি শ্যাম্পু না করাই ভালো চুলকে পরিষ্কার রাখা স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে, খুশকির হাত থেকে বাঁচতে হলে মাথার ত্বক ময়শ্চারাইজ রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বেশি শ্যাম্পু করলে মাথার ত্বক ময়শ্চারাইজ থাকে না এবং দুর্বল হয়ে পড়ে। সুতরাং, শ্যাম্পু করার সময়সূচী বজায় রাখুন। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার চুলে শ্যাম্পু করা যথেষ্ট। ৪) আপনার অ্যান্টি-ড্যানড্রফ শ্যাম্পুর উপাদানগুলি পরীক্ষা করুন মাথার ত্বকে খুশকি হওয়া মাত্রই প্রথমে আমরা অ্যান্টি-ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহার করে থাকি। তবে, শ্যাম্পুটি সত্যিই খুশকির বিরুদ্ধে কাজ করবে কি না তা নিশ্চিত করার জন্য আপনাকে অবশ্যই শ্যাম্পুর উপাদানগুলি পরীক্ষা করা দরকার। দস্তা, ভিটামিন বি, ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং টি ট্রি অয়েলের মতো উপাদানগুলির পরীক্ষা করুন। ৫) সূর্যের আলো থেকে চুলকে রক্ষা করুন খুশকির অন্যতম প্রধান কারণ সূর্য। এছাড়াও, সূর্যের ক্ষতিকারক ইউ ভি রশ্মি আমাদের চুল এবং ত্বককে নষ্ট করে। সুতরাং, বাইরে যাওয়ার সময় চুলকে ক্ষতিকারক রৌদ্র রশ্মি থেকে রক্ষা করুন। ঘরের বাইরে বেরোনোর আগে স্কার্ফ বা টুপি ব্যবহার করে চুল ঢেকে রাখুন। ৬) আপনার ডায়েটের উপর নজর রাখুন আপনার ডায়েট আপনাকে খুশকির সঙ্গে লড়াই করার জন্য সাহায্য করতে পারে।
প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর সঠিক ডায়েটের সাহায্যে আপনি স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্ট ত্বক পেতে পারেন, যা কোনও সংক্রমণ বা ব্যাকটেরিয়ার সাথে লড়াই করে, যা খুশকি বা চুলের অন্য কোনও সমস্যার সমাধান করতে পারে। আপনার ডায়েটে সবুজ শাকসবজি, বাদাম, প্রোটিন এবং ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন এবং আপনার ডায়েট থেকে উচ্চ চিনি এবং উচ্চ তেলের খাবারগুলি বাদ দিন। এটি খুশকি প্রতিরোধে ম্যাজিকের মতো কাজ করবে। ৭) অ্যাসপিরিন লাগাতে পারেন অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট গুঁড়ো করে তা শ্যাম্পুর সঙ্গে মিশিয়ে শ্যাম্পু করুন নিয়মিত ৷ এতে মাথার তালু পরিষ্কার থাকে এবং চুল খুশকিমুক্ত থাকে ৷ ৮) টক দই চুল ভালো রাখে স্নানের এক ঘণ্টা আগে টক দই মাথার ত্বক এবং চুলে খুব ভালো করে লাগিয়ে নিন ৷ তার পর ভালো করে চুল ধুয়ে শ্যাম্পু করে নিন ৷ দই-য়ে ল্যাকটিক অ্যাসিড থাকার কারণে এর প্রভাবে আপনার চুল উজ্জ্বল ও নরম হয়ে উঠবে এবং খুশকি মুক্ত রাখবে ৷
পিবিএ/আম