পিবিএ,শেরপুর: বগুড়ার শেরপুরে শুভগাছা গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ উপেক্ষা করে কৃষি জমির প্রকৃত শ্রেণি পরিবর্তন করে পুকুর খনন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। চাষাবাদ হুমকির মুখে পড়ছে। সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের শুভগাছা গ্রামের মিরা বক্সের ছেলে লাভলু ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ভাতারিয়া, শালফা, বোয়লমারি এলাকায় আবাদি জমির শ্রেণি পরিবর্তন করছে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। কৃষিজমির শ্রেণি পরিবর্তন করে এখন জলাশয় ও পুকুর করা হচ্ছে।
জলাশয়ের চারপাশে রয়েছে আবাদি জমি সেই ভেঙ্গে পড়ার আশংকা করছে জমির মালিকরা। ইতি মধ্যে কৃষিজমির শ্রেণি পরিবর্তন করে ৩টি পুকুর খনন করা হয়েছে এবং আরো খননকাজ চলছে। এতে করে যেমন আবাদি জমি কমছে অন্যদিকে চালাচলের রাস্তাও নষ্ট হচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি অতিদ্রুত পুকুর খননকাজ বন্ধ করে দিয়ে রাস্তা ও আবাদি জমি জমিখেকো প্রভাবশালী লাভলুর হাত থেকে রক্ষা করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, লাভলু নিজে প্রভাবশালী হয়েও আরো বড় বড় প্রভাবশালী ছত্রছায়ায় থাকার করাণে তার নামে হত্যা মামলা, মেশিন চুরির মামলাসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত এমনকি অন্যের গরুর খামার দেখিয়ে সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার কুড়ালিয়া গ্রামের এক ব্যাক্তির কাছ থেকে কয়েক বছর আগে প্রায় ১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও কেহ কিছু বলতে সাহস পায়না।
মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ রয়েছে, জমির প্রকৃত শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। কিন্তু জমির প্রকৃত শ্রেণি পরিবর্তনের নীতিমালা-সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, কৃষিজমি যতটুকু সম্ভব রক্ষা করতে হবে, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া জমির প্রকৃতিগত কোনো পরিবর্তন আনা যাবে না।
কিন্তু ওই সব এলাকার কৃষক ও স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ থেকে জানা গেছে, এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা কৃষিজমির শ্রেণি পরিবর্তন করছেন। তাঁরা বলেছেন, প্রথমে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা স্থানীয় কিছু লোকজনের কাছ থেকে কৃষিজমি তিন বা ১০ বছরের জন্য ইজারা নিয়ে সেখানে পুকুর খনন শুরু করেন। পরে কৌশলে ওই পুকুরের আশপাশের অন্য জমির মালিককেও তাঁদের জমি ইজারা দিতে বাধ্য করেন।
কৃষকরা তাঁদের আবাদি জমি দিতে না চাইলে প্রভাবশালীরা তাদের ইজারা নেওয়া জমিতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে খননকাজ শুরু করেন। সেখান থেকে বালু বা মাটি তোলার পর জমিগুলো ভেঙ্গে যায় একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে তাঁদের জমিও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের পুকুর খননের জন্য দিতে হয়। লাভলু জমির প্রকৃত শ্রেণি পরিবর্তনের বিষয়ে বলেন, জমির মালিকের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে কৃষিজমিতে পুকুর খনন এবং নিজেও জমি কিনে সেই জমিতে পুকুর খনন করা হচ্ছে। এতে কারোর বলার বা করার কিছু নেই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, আবাদি জমিতে পুকুর খননের কারণে চাষযোগ্য জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। এতে ভবিষতে খাদ্য ঘাটতি হতে পারে। উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) জামশেদ আলাম রানা বলেন, জমির প্রকৃতি পরিবর্তন করে পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জেল-জরিমানাও করা হয়েছে।
তবে যাঁরা খনন করেছেন, তাঁরা জমির প্রকৃত শ্রেণি পরিবর্তনের জন্য কোনো আবেদন করেননি। তবে তাদের বিরুদ্ধ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী সেখ বলেন, করোনা ভাইরাসের কারনে আমরা ব্যস্ত থাকায় অপরাধীরা মাথাচারা দিয়ে উঠেছে। আমার জানা ছিলো না তবে আবাদি জমির শ্রেণি পরিবর্তনকারিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পিবিএ/আবু বকর সিদ্দিক/বিএইচ