শেষ বলে ছক্কা মেরেও সাকিবদের কাছে হারলো খুলনা

শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২১ রান। দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সমীকরণটা ৪ বলে ১৬ রানে নামিয়ে আনেন সেকুগে প্রসন্ন। পরে ওভারের শেষ বলে ছক্কা হাঁকান শেখ মেহেদি হাসান। তবু ম্যাচ জিততে পারেনি খুলনা টাইগার্স। মাঝের তিন বলে মাত্র তিন রান খরচ করে ফরচুন বরিশালের ৬ রানের জয় নিশ্চিত করেন ডোয়াইন ব্রাভো।

টস জিতে আগে ব্যাট করা বরিশাল অলআউট হওয়ার আগে করেছিল ১৪৫ রান। চট্টগ্রামের উইকেট বিবেচনায় রানটি খুব বেশি ছিল না। কিন্তু সাকিব আল হাসান ও মুজিব উর রহমানের কিপটে বোলিংয়ের মুখে পুরো ২০ ওভার খেলে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩৯ রানের বেশি করতে পারেনি খুলনা। তাদের বিপক্ষে দুই ম্যাচে দুইটিতেই জিতলো বরিশাল।

এ জয়ের ফলে পাঁচ ম্যাচ তিন জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিন নম্বরে উঠে এসেছে সাকিবের দল। সমান ম্যাচে খুলনার এটি তৃতীয় পরাজয়। পয়েন্ট টেবিলে তাদের অবস্থান পঞ্চম। প্রথম দুইটি স্থানে রয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।

লক্ষ্য টপকাতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি খুলনার। দুই ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচার আর সৌম্য সরকার ধীরে শুরু করে দলের চাপ বাড়ান ইনিংসের শুরুতেই। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে তোলেন ২২ রান। সপ্তম ওভারে সৌম্য আউট হন ২২ বলে ১৩ রান করে। দুই ওভার পর একই পথ ধরেন নতুন ব্যাটসম্যান রনি তালুকদার। সাকিবের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন ১২ বলে ৬ রান করে।

ইনিংসের ১০ ওভারে জোড়া আঘাত হানেন ব্রাভো। ফ্লেচার ২৩ বলে ১২ রানে আউট হওয়ার পর থিসারা পেরেরাও একই পথ ধরেন ৪ রান করে। এতে ১০ ওভারে ৪ উইকেট হারানো খুলনার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৫ রান। এরপর দলের হাল ধরেন মুশফিক-রাব্বি। শুরুতে দেখেশুনে খেললেও উইকেটে থিতু হয়ে হাত খুলে খেলতে থাকেন দুজন। তাদের সামনে জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ৬০ বলে ১১১ রানের। সে পথে হাঁটতে গিয়ে পঞ্চম উইকেটে ৫০ বলে দুজন যোগ করেন ৭৯ রান।

ইনিংসের ১৯তম ওভারে মুশফিক ২২ বলে ৩৩ রান করে শফিকুলের বলে আউট হলে ভাঙে এই জুটি। তিনি আউট হলে শেষ ১০ বলে জয়ের জন্য ৩২ রানের প্রয়োজন পড়লে পেরে ওঠেনি খুলনা। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে তাদের ইনিংস থামে ১৩৯ রান। এতে ৬ রানের জয় পায় বরিশাল। ৩০ বলে ফিফটি হাঁকানো ইয়াসির আলি রাব্বি ৩৪ বলে ৫৭ রানে অপরাজিত থাকেন। যেখানে ৪টি চারের সঙ্গে ৩টি ছয় মারেন তিনি। বরিশালের ব্রাভো সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামে ফরচুন বরিশাল। উদ্বোধনী জুটিতে বেশ বড়সড় চমক নিয়ে নামে তারা। ক্রিস গেইলের সঙ্গে ইনিংস শুরু করেন ব্রাভো। তবে এবারের বিপিএলে প্রথমবারের মতো খুলনার একাদশে সুযোগ পাওয়া খালেদ আহমেদের বোলিং তোপে সুবিধা করতে পারেনি তারা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে নিজের প্রথম ওভার হাত ঘুরাতে এসে ব্রাভোকে ফেরান ৯ রানে। পরে ইনিংসের চতুর্থ ওভারে শিকার বানান গেইলকে। গেইল বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন ৪ রান করে।

পঞ্চম ওভারে তৌহিদ হৃদয় ৫ রান করে রানআউটে কাটা পড়লে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বরিশাল। ২৪ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে সাকিব বাহিনী। বিপর্যয়ের পর অধিনায়ক সাকিবের ব্যাটে বিপদ এড়ায় বরিশাল। সঙ্গে হাল ধরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। চতুর্থ উইকেটে সাকিব-শান্ত গড়েন ৭৯ রানের পার্টনারশিপ। শুরুতে রানের গতি স্লথ থাকলেও পরে ব্যাট চালিয়ে খেলে দলীয় স্কোর সচল রাখেন সাকিব।

তবে অল্পের জন্য সাকিব পাননি অর্ধশতকের দেখা। ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ২৭ বলে ৪১ রান করে বিদায় নেন। এদিন অর্ধশতক হাতছাড়ার আক্ষেপে পুড়তে হয় শান্তকেও। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪০ বলে ৪৫ রান করে পেরেরার বলে আউট হন তিনি। সাকিব ও শান্তর বিদায়ের পর আবারও কমে যায় বরিশালের রানের গতি। শেষদিকে মুজিব উর রহমানের ৬ বলে ১২ রানের ইনিংসে পর ১৮.৫ ওভারে ১৪৫ রানে গুটিয়ে যায় বরিশাল। খুলনার পক্ষে খালেদ সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন।

আরও পড়ুন...