পিবিএ,ঢাকা: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, শেয়ারবাজারে সংকট আছে, তবে এ সংকট কারা সৃষ্টি করছে তাদের খুঁজে বের করা হবে। এদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) শেরে বাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে এক প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভায় দেশের ইলেক্ট্রনিকস ও প্রিন্ট মিডিয়ার সম্পাদক- সাংবাদিকরা, এনজিও নেতারা এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) কার্যনির্বাহী কমিটির নেতারা অংশগ্রহণ করেন।
শেয়ারবাজারে সংকট প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, শেয়ারবাজারে ৫০ হাজার কোটি কিংবা ৫ লাখ কোটি টাকা দিলেও শেষ হয়ে যাবে। আপনারা জানেন, কারা শেয়ারবাজারে কারসাজি করছে। বাজেটে অনেক সুযোগ সুবিধা থাকে তারপরও সংকট তৈরি হচ্ছে। শেয়ারবাজারে কারসাজি করে নতুন সুযোগ নিতেই সংকট তৈরি করছে কিছু খেলোয়াড়।
তিনি আরো বলেন, শেয়ারবাজারে দু’টি পার্টি থাকে একটা সিংহ অপরটি ছাগলের বাচ্চা। কখনও সিংহের সঙ্গে ছাগলের বাচ্চা পেরে উঠবে না। আপনারা না বুঝে শেয়ারবাজারে আসবেন না। এখানে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে আসতে হয়। সব কিছু বুঝেই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের আহ্বান জানান মন্ত্রী।
মন্ত্রী আরও বলেন, শেয়ারবাজার আমাদের অর্থনীতির সঙ্গে অঙ্গা-অঙ্গীভাবে জড়িত। আমরা চাই না শেয়ারবাজার নাজুক অবস্থায় আসুক। মানুষ যেন শেয়ারবাজারে এসে আর বিপদে না পড়ে। শেয়ারবাজার নিয়ে আর গালমন্দ শুনতে চাই না।
ব্যাংকিং খাত প্রসঙ্গে মুস্তফা কামাল বলেন, ব্যাংকিং ব্যবস্থা খুব ভালো আছে, এটা বলবো না। তবে খুব খারাপও নেই। এ খাতের উন্নয়নে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি হচ্ছে। অনেকেই খেলাপি ঋণের বিপরীতে কোনো উদ্যোগ নিতে পারছে না। মামলা করতে পারছে না। এ সব বিষয়ে উদ্যোগ নিবে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি। ব্যাংক ঋণে সুদের হার বেশি। এতো বেশি সুদ দিয়ে কখনই ব্যবসা করা যাবে না। সুদের ওপর নতুন করে সুদ আরোপ করা হচ্ছে। আগামীতে সুদের হার অনেক কমিয়ে আনা হবে। যাতে ঋণ খেলাপি না হয়।
এছাড়া আসছে বাজেটে পুঁজি বাজারের জন্য প্রণোদনা থাকবে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, আমার উপর বিশ্বাস রাখুন। অসততা আমাকে স্পর্শ করেনি, করবেও না। আমি অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করেছি। সাধারণ মানুষের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা রয়েছে। আমি অনুরোধ করবো আমাদের দেশের ক্ষতি হয়, দেশের মানুষের চলার পথে যাতে প্রতিবন্ধকতা না হয়, সে জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। সবাই সবার জায়গা থেকে কাজ করতে হবে।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, কেউ ঋণগ্রহণ করে সেখান থেকে বেরিয়ে আসাটা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। ব্যবসা করলে লাভ বা লোকসান হতে পারে। যারা লোকসান দেয় তাদের জন্য কিছু করার ব্যবস্থা থাকে না। ঋণ খেলাপি হওয়ার পরও সব ব্যবসায়ীদের জেলে পাঠালে তো হবেনা। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে।
মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, যেসব পণ্য বিদেশ থেকে আসবে সেগুলো শতভাগ স্ক্যানিং হয়ে আসবে। আবার যেসব পণ্য রফতানি হবে সেগুলোও শতভাগ স্ক্যানিং করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, দেশের ৪ কোটি মানুষ কর দেওয়ার যোগ্য হলেও দেয় মাত্র ১৬ থেকে ১৮ লাখ। এজন্য ভ্যালু অ্যাডেড টাস্ক নির্ধারণ করা হবে।
আলোচনায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, অর্থনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম দিলাল ও সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পিবিএ/এএইচ