রাজন্য রুহানি,জামালপুর: জামালপুরের বকশীগঞ্জে ভরনপোষণ না দেওয়ায় জমি ফেরত চাইলে ১১০ বছর বয়সী শ্বশুরকে পিটিয়ে আহত করেছেন পুত্রবধূ শিউলি বেগম নামে এক বিধবা নারী। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন মারধরের শিকার শ্বশুর আবদুস সালাম।
শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে তিনি এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর আগে শুক্রবার উপজেলার সদর ইউনিয়নের সূর্যনগর পূর্বপাড়া গ্রামে ঘটে ঘটনাটি।
জানা গেছে, সূর্যনগর পূর্বপাড়া গ্রামের আবদুস সালামের ছেলে এসএম সাইয়ুম এক বছর আগে হৃদযন্ত্র ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। এসএম সাইয়ুম বকশীগঞ্জ পৌর শহরের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ছিলেন। বৃদ্ধ আবদুস সালামকে তার ছেলে এসএম সাইয়ুম জীবদ্দশায় ভরনপোষণ করতেন। এর বিনিময়ে আবদুস সালাম ছোট ছেলে নেহাল উদ্দিনের ১২ শতাংশ জমি ও তার মেয়ে ছালমা বেগমের নামে ৪ শতাংশ জমি মোট ১৬ শতাংশ ছেলে এসএম সাইয়ুমকে চাষাবাদের জন্য মৌখিকভাবে প্রদান করেন।
ছেলে সাইয়ুমের মৃত্যুর পর পুত্রবধূ শিউলি বেগম বৃদ্ধ আবদুস সালামকে ভরণপোষণ দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে ছোট ছেলে নেহাল উদ্দিন তাঁর ভরনপোষণের দায়িত্ব নেন। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) বেলা ১১ টায় বৃদ্ধ আবদুস সালাম পুত্রবধূ শিউলি বেগমের কাছে ছোট ছেলের নামের জমিটি ফেরত চাইলে তিনি শ্বশুরের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। শিউলি বেগম জমি ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে উল্টো বৃদ্ধ শ্বশুর আবদুস সালামকে বেধড়ক লাঠিপেটা করেন শিউলি বেগম ও নাতি শারমিন আক্তার।
এ সময় আবদুস সালামের আরেক পুত্রবধূ নুরজাহান বেগম শ্বশুরকে মারধরে বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়।
লাঠিপেটা খেয়ে বৃদ্ধ আবদুস সালাম অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বৃদ্ধ শ্বশুরকে মারপিটের ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।
বৃদ্ধ আবদুস সালাম জানান, আমার ছেলে এস এম সাইয়ুমকে ১৬ শতাংশ জমি মৌখিকভাবে দেওয়ার বিনিময়ে আমার ভরনপোষণ করতো। ছেলের মৃত্যুর পর আমার পুত্রবধূ আমাকে দেখাশোনা না করে আমাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছে। তাই আমি জমিটি ফেরত চাইলে আমাকে মারধর করেছে। আমি এর বিচার চাই।
অভিযুক্ত পুত্রবধূ শিউলি বেগমের মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায় নি।
বকশীগঞ্জ থানার ওসি খন্দকার শাকের আহমেদ জানান, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।