‘ষড়যন্ত্রকারীরা দেশে-বিদেশ থেকে কোনো রকমের স্পেস পাবে না’

দুর্গাপূজা ও বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবে ষড়যন্ত্রকারীরা দেশে-বিদেশ থেকে কোনো রকমের স্পেস পাবে না বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম।

তিনি বলেছেন, দেশে-বিদেশ থেকে কোনো রকমের ষড়যন্ত্রকারী স্পেস(সুযোগ) পাবে না, এটা আমাদের প্রতিজ্ঞা। এই প্রতিজ্ঞায় আমরা সবার সহযোগিতা কামনা করছি। আশা করি এবারের পূজা গত ১৫ বছরের গ্লানিমুক্তভাবে উদযাপিত হবে।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর ) সকালে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে দুর্গাপূজার আয়োজন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

অন্তবর্তী কালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম বলেছেন, দুষ্কৃতিকারীদের কোনো রকম প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। কমিউনিটি লিডারে থাকবেন, আমরা রাজনৈতিক লিডারদের সঙ্গে গোয়ান্দা, পুলিশ ও শিক্ষার্থীরা থাকবে। সবাই থাকবে। সকল অনুষ্ঠান নিরাপদ ও আনন্দময় করে তুলবেন। সবাই আমরা বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে এক সঙ্গে আছে। দেশে-বিদেশ থেকে কোনো রকমের ষড়যন্ত্রকারী স্পেস(সুযোগ) পাবে না, এটা আমাদের প্রতিজ্ঞা।

গণঅভ্যূতথানের পরবর্তী সময়ে হিন্দু ধর্মালম্ব প্রদার উপর হামলার বিষয়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত দুই মাস ধরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অপরাধ ও গত ৫৩ বছরের তাদের কিছু দাবি দাওয়া রয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন সরকার আসলেও দাবিগুলো পূরণে পদক্ষেপ নেয় নি। এমন কি গত ১৫ বছরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর বিভিন্ন হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই সকল ঘটনায় কোনো বিচার ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় নি। আমরা গত দুই মাসে আমাদের কাছে যে দাবিগুলো নিয়ে এসেছে, সেগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি কি ধরনের পদক্ষেপ নিলে রাষ্ট্র হিসেবে তাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিয়ে সম্প্রদায়ের স্বার্থ রক্ষা করা যায়।

গত ৫ আগস্টের পরে অনেক স্থানে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে হিন্দু সম্প্রদায় ও অন্যান সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়েছে। সরকার, ছাত্ররা ও সাধারণ মানুষ তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী হামলা রুখে দিতে চেষ্টা করেছেন।

মাহফুজ বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিল থেকে সহযোগিতার চেষ্টা করা হবে। আমরা দুর্গাপূজার আগেই সহযোগিতা পৌঁছাতে চেষ্টা করছি। আজ কালই তাদের কাছে সহযোগিতা পৌঁছে যাবে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দাবি ছিলো দুর্গাপূজার ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত তারা আনন্দ করেন। এই আনন্দ উদযাপনের জন্য তাদের ছুটি বাড়ানোর দাবি ছিলো। এবার শুক্র, শনি ও রবিবার এই অনুষ্ঠান হবে। তাই আমরা রবিবার দিন ছুটি বাড়িয়েছি। আজ বা কাল সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করবে। এর মাধ্যমে চার দিন ছুটি পাওয়া যাবে। এর মাধ্যমে আমরা একটা বার্তা দিতে চাই গ্রাম বা শহরে যেখানে হোক না কেনো যারা বিভিন্ন দেশি-বিদেশি চক্রান্তের অংশ হিসেবে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি বিশৃঙ্খলা করে তুলতে চাচ্ছেন। বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীতে দেশ ও সরকারকে যারা অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন। তারা জেনে রাখবেন সরকার নিবিড়ভাবে সরকার দেশের সকল সম্প্রদায়ের সঙ্গে আছে। বিশেষ করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ সকল সংখ্যালঘুদের পাশে আছে। সবার সঙ্গে সংলাপ ও বোঝাপাড়া হচ্ছে। তাদের সবার দাবি মেনে নেওয়ার আলোচনা হচ্ছে। রাজপথের আন্দোলন বিভিন্ন বিষয় হতেই পারে। তবে এখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের থেকে যারা আন্দোলন করেছেন তাদের কে অনুরোধ করবো, সরকার ধীরে ধীরে পদক্ষেপ নিচ্ছে। দুর্গাপূজা শেষ হলেই ক্ষতিগ্রস্তদের পুরনো ভার্সন পূর্ণবাসনের জন্য আমরা কাজ করবো। পাশাপাশি যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হামলার শিকার হয়েছেন তাদের মামলার জন্যসরকার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে। আপনারা জানেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বর্তমান অবস্থা। তারপরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।

একইভাবে বৌদ্ধ সম্প্রদায় অনুভব করছে তারা নিপিড়ীত হয়েছেন। তারা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। আমরা নিবিড়ভাবে সরকার পর্যবেক্ষণ করছে। তারাও যেনো নির্বিঘ্নে ও আনন্দের সঙ্গে প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন করতে পারেন। তারা যে উৎসব বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা চাইবো বাংলাদেশে যেনো কোনো উৎসব বন্ধ না হয়। প্রতিটি সম্প্রদায়ের মানুষের নিজেদের আনন্দ উৎসব পালনের অধিকার আছে। তা নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। আমরা এমন করে ব্যবস্থা নিবো তারা যেনো কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান পালন হবে। দুর্গাপূজায় যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিলো। আমরা সেটি কাটিয়ে উঠেছি।

আরও পড়ুন...