সংগীতশিল্পী সাজেদ ফাতেমীর বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

পিবিএ,লালমনিরহাট: বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রকাশিত ‘শত গানে বঙ্গবন্ধু’ শিরোনামে বই থেকে আমার লেখা দুটি গান প্রত্যাহারের দাবিতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর শনিবার আমার শহর লালমনিরহাটে মানববন্ধন হয়েছে।
‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ লালমনিরহাট জেলা শাখা আয়োজিত ওই মানববন্ধন থেকে আমার বাবাকে রাজাকার এবং আমাকে ও আমার পুরো পরিবারের সঙ্গে জামাত-শিবিরের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনে আমার গান দুটি বাদ দিয়ে বইটি নতুন করে প্রকাশের দাবি জানানো হয়। মানববন্ধন চলাকালে সাংবাদিক ও উপস্থিত নেতা-কর্মীদের কাছে অর্ধসত্য, অসত্য, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভুল তথ্যে ভরা একটি লিফলেট বিতরণ করা হয়, যা আমার পরিবারের দীর্ঘদিনের সুনাম ক্ষুণ্ণ করেছে।
আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলছি – আমার আব্বা রাজাকার ছিলেন না। কখনো না, কখনো না, কখনো না। আব্বা ছিলেন পল্লি চিকিৎসক। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে চিকিৎসক হিসেবে তিনি বহু যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাকে বিনা পয়সায় চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তুলতে থাকেন। এ সময় তিনি সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। এরই মধ্যে তার বড় দুই ছেলে মুক্তিযুদ্ধে চলে যান। এভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্থ করে তোলা এবং তার বড় দুই ছেলে মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টিকে ‘অপরাধ’ বিবেচনা করে একদিন তাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারেরা।
মানববন্ধনকারীরা আমার আব্বার নামের সঙ্গে কাকতালীয়ভাবে কিছুটা মিল থাকা আরেক ব্যক্তিকে গুলিয়ে ফেলে আব্বাকে রাজাকার প্রমাণ করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। এটি করতে গিয়ে তারা একগাদা মিথ্যা তথ্য ও কাল্পনিক গল্প সাজিয়েছেন।

আমার পরিবারের সঙ্গে জামায়াতের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ শতভাগ মিথ্যা। ১১ ভাই–বোনের মধ্যে মাত্র একজন জামায়াতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। অসুস্থতা ও আর্থিক সংকটের কারণে গত প্রায় পাঁচ বছর থেকে দলীয় সব কর্মকাণ্ড থেকে তিনি নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল করা মানে পুরো পরিবারকে সেই দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না।

আমার বড় দুই ভাই ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। বর্তমানে লালমনিরহাটে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত। আর কোনো ভাই কোনোদিন ছাত্রদল বা ছাত্রশিবিরের সঙ্গে বিন্দুমাত্রও জড়িত ছিলেন না। মানববন্ধনকারীরা এসব তথ্য জেনেও এড়িয়ে গেছেন। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অবশ্য গান দুটি বাতিল করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে ইতিমধ্যে লালমনিহাটের জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ।

পিবিএ/এসডি

আরও পড়ুন...