সংঘর্ষের ঘটনায় সমঝোতা, আজ খুলছে নিউ মার্কেট

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানীর চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, নিউ সুপার মার্কেট ও চাঁদনী চক মার্কেটসহ আশেপাশের বন্ধ থাকা মার্কেটগুলো খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বুধবার রাতে নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী, ঢাকা কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের যৌথ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এতে নিউ মার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের অবসান ঘটাতে সমঝোতায় পৌঁছান ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী এবং নিউ মার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীরা।

ঐ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের মহাপরিচালক নেহাল আহমেদ। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নিউ মার্কেটসহ এর আশপাশের সব দোকানপাট খুলে দেওয়া হবে। আর ছাত্রদের ছুটি ও হলে থাকার বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।

শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ছাত্রদের দাবিগুলোর প্রতি আমাদের পূর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে। তাদের প্রায় সবগুলো দাবিই যৌক্তিক। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে তাদের দাবিগুলো মানা হয়েছে। ছাত্রদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শিগগিরই একটি মনিটরিং সেল গঠন করা হবে।

তিনি আরো বলেন, টানা দুদিনের সংঘর্ষে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, একজন মারাও গেছেন। আহত-নিহতদের পরিবারের সঙ্গে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল দেখা করবে। একই সঙ্গে তাদের আর্থিক সহযোগিতাও দেওয়া হবে।

এ সময় দোকান মালিক সমিতি ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী, উভয় পক্ষই যার যার অবস্থান থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অঙ্গীকার করেন।

এর আগে, বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা কলেজ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ঘটনায় ঢাকা কলেজের দুই শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করে আহত করেছে, এমন খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করেন। কিন্তু সেখানে হামলা করেন ব্যবসায়ীরা।

গত সোমবার রাতেই শিক্ষার্থীরা আন্দোলন থেকে সরে গেলেও মঙ্গলবার ফের ব্যবসায়ীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন বলেও অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

এর আগে, রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকার দোকানপাট বুধবারই খুলে দেওয়া হবে সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দেন দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই দেওয়ান শাহীনের এ ঘোষণা ভালোভাবে নেননি শিক্ষার্থীরা এবং প্রতিবাদে আবারো তারা রাস্তায় নেমে আসেন। এ সময় ঢাকা কলেজ ও নিউমার্কেট এলাকায় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণে ঘটে।

এতে মার্কেট খোলার চেষ্টা ভেস্তে যায় ব্যবসায়ীদের। এরই পরিপেক্ষিতে বড় ক্ষতির আশঙ্কায় বুধবার রাতে ঢাকা কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বৈঠকে বসেন নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা।

গত সোমবার রাত ১২টার দিকে নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ শুরু হয়, যা চলে রাত আড়াইটা পর্যন্ত। মধ্যরাতে দুই পক্ষকে ঐ এলাকা থেকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

পরদিন মঙ্গলবার সকাল থেকে নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ব্যবসায়ীরা সড়কে চলে এলে দ্বিতীয় দফায় সংঘর্ষ শুরু হয়। সকাল সাড়ে ১০টার পর নীলক্ষেত মোড় থেকে সায়েন্সল্যাব পর্যন্ত এলাকায় থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ।

আরও পড়ুন...