পিবিএ,ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নবনির্বাচনিদের সংসদ অধিবেশনের পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে শপথ না নিলে সেই আসন শূন্য হবে বলে জানান নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।
আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে বুধবার দুপুরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
বিএনপির যে পাঁচজন নির্বাচিত হয়েছেন তারা বলছেন যে শপথ গ্রহণ করবেন না। যদি তারা এটি না করেন তাহলে আইনী প্রক্রিয়াটা কি হবে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রকিয়াটি হচ্ছে গেজেট প্রকাশের তিনদিনের মধ্যে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ গ্রহণ করবেন। এরপর ৩০ দিনের মধ্যে নতুন সংসদের বৈঠক হবে। এর পর ৯০দিনের মধ্যে যদি কেউ শপথ গ্রহণ না করেন বা কোনো প্রকাশ রেসপন্স না করেন। তখন সংসদ সচিবালয় থেকেই এই পদটি শূন্য ঘোষণা করা হবে। গেজেট প্রকাশ করা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের কাজ। বাকি সবগুলো সংসদ সচিবালয়ের কাজ। আমাদের আর কোনো কাজ থাকে না। গেজেট প্রকাশ হওয়ার পর থেকে আমাদের আর কোনো কার্যক্রম থাকে না।
একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরুর ৯০ দিনের মধ্যে স্পিকারকে অবহিত না করলে বা শপথ না নিলে সদস্য পদ খারিজ হবে। সংবিধানের ৬৭) অনুচ্ছেদে- সদস্যদের আসন শূন্য হওয়া নিয়ে যা বলা আছে-‘৬৭। (১) কোন সংসদ-সদস্যের আসন শূন্য হইবে, যদি
(ক) তাঁহার নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ হইতে নব্বই দিনের মধ্যে তিনি তৃতীয় তফসিলে নির্ধারিত শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা করিতে ও শপথপত্রে বা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরদান করিতে অসমর্থ হন: তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ মেয়াদ অতিবাহিত হইবার পূর্বে স্পীকার যথার্থ কারণে তাহা বর্ধিত করিতে পারিবেন;
(খ) সংসদের অনুমতি না লইয়া তিনি একাদিক্রমে নব্বই বৈঠক-দিবস অনুপস্থিত থাকেন;
(গ) সংসদ ভাঙ্গিয়া যায়; (ঘ) তিনি এই সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের (২) দফার অধীন অযোগ্য হইয়া যান; অথবা
(ঙ) এই সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে বর্ণিত পরিস্থিতির উদ্ভব হয়।
(২) কোন সংসদ-সদস্য স্পীকারের নিকট স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন, এবং স্পীকার- কিংবা স্পীকারের পদ শূন্য থাকিলে বা অন্য কোন কারণে স্পীকার স্বীয় দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে ডেপুটি স্পীকার- যখন উক্ত পত্র প্রাপ্ত হন, তখন হইতে উক্ত সদস্যের আসন শূন্য হইবে।’
পদের শপথ
১৪৮। (১) তৃতীয় তফসিলে উল্লিখিত যে কোন পদে নির্বাচিত বা নিযুক্ত ব্যক্তি কার্যভার গ্রহণের পূর্বে উক্ত তফসিল-অনুযায়ী শপথগ্রহণ বা ঘোষণা (এই অনুচ্ছেদে “শপথ” বলিয়া অভিহিত) করিবেন এবং অনুরূপ শপথপত্রে বা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরদান করিবেন।
(২) এই সংবিধানের অধীন নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তির নিকট শপথগ্রহণ আবশ্যক হইলে অনুরূপ ব্যক্তি যেরূপ ব্যক্তি ও স্থান নির্ধারণ করিবেন, সেইরূপ ব্যক্তির নিকট সেইরূপ স্থানে শপথগ্রহণ করা যাইবে।
৩[২(ক) ১২৩ অনুচ্ছেদের (৩) দফার অধীন অনুষ্ঠিত সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত হইবার তারিখ হইতে পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে এই সংবিধানের অধীন এতদুদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা তদুদ্দেশ্যে অনুরূপ ব্যক্তি কর্তৃক নির্ধারিত অন্য কোন ব্যক্তি যে কোন কারণে নির্বাচিত সদস্যদের শপথ পাঠ পরিচালনা করিতে ব্যর্থ হইলে বা না করিলে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার উহার পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে উক্ত শপথ পাঠ পরিচালনা করিবেন, যেন এই সংবিধানের অধীন তিনিই ইহার জন্য নির্দিষ্ট ব্যক্তি।]
(৩) এই সংবিধানের অধীন যে ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তির পক্ষে কার্যভার গ্রহণের পূর্বে শপথগ্রহণ আবশ্যক, সেই ক্ষেত্রে শপথ গ্রহণের অব্যবহিত পর তিনি কার্যভার গ্রহণ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।
এবার প্রার্থীর মৃত্যুজনিত কারণে গাইবান্ধা-৩ আসনের ভোট স্থগিত করা হয়েছে, এই আসনে ২৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ করা হবে। এছাড়া ৩০ ডিস্বেম্বর ভোটের দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের ৩টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়। স্থগিত এ তিন কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ করা হবে ৯ জানুয়ারি। এর ফলে ২৯৮ আসনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করে কমিশন।
এর মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নৌকা মার্কা ২৫৯টি সিট, জাতীয় পার্টি লাঙ্গল ২০, বিএনপি ধানের শীষ ৫, গণফোরাম ২, বিকল্পধারা বাংলাদেশ ২, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ২, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি ৩, তরিকত ফেডারেশন ১টি, জাতীয় পার্টি (জেপি) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ৩টি আসনে জয় লাভ করেছে।
সর্বশেষ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ৮ জানুয়ারি গেজেট প্রকাশ করা হয়। তারপরের দিন ৯ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ করে নির্বাচিতরা। আর প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় ২৯ জানুয়ারি।
পিবিএ/এসআই/ জেডআই