রাজন্য রুহানি,জামালপুর: সত্তর দশকের দেশের অন্যতম প্রধান কবি আহমদ আজিজ আজ মঙ্গলবার (৯ জুন) সকাল ১০টায় মৃত্যুবরণ করেছেন। ঢাকার উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কণ্ঠনালীর ক্যান্সারে ভুগছিলেন।
কবি আহমদ আজিজ কেন্দ্রীয় জাতীয় কবিতা পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য, জামালপুর কবিতা পরিষদের সভাপতি, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রাক্তন সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ও সরকারি অাশেক মাহমুদ কলেজের মুক্তিযুদ্ধ কর্নার ও জামালপুর কর্নার-এর তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন।
ঢাকা থেকে কবির মরদেহ তার নিজবাড়ি জামালপুরের আমলাপাড়ায় পৌঁছেছে। সেখানে বাদ এশা নামাজে জানাজা শেষে তাকে জামালপুর পৌর কবরস্থানে দাফন করা হবে।
কবি আহমদ আজিজ ১৮ জুন ১৯৫৯ সালে জামালপুর জেলা শহরের আমলাপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি এডভোকেট একে ফয়েজউদ্দিন আহমদ ও রাবেয়া খাতুনের পঞ্চম পুত্র। জামালপুর জিলাস্কুল থেকে মাধ্যমিক ও সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক সম্মান ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। শিক্ষা জীবন শেষ করে তিনি গ্রামীণ ব্যাংকে চাকরি নেন। সেখানে সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার পদে কর্মরত অবস্থায় ২০০৪ সালে তিনি স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন।
১৯৭৪ সালে কাজী আবদুল হালিম ও আহমদ রফিক সম্পাদিত মাসিক ‘সুজনেষু’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় সত্তর দশকের কবি আহমদ আজিজের প্রথম কবিতা। তিনি জামালপুর সাহিত্য সংসদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন ‘সিম্ফনি’ কবিতাগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এছাড়া তিনি কেন্দ্রীয় জাতীয় কবিতা পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ও জামালপুর কবিতা পরিষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
কবি আহমদ আজিজের প্রকাশিত কবিতার বই ৩টি। ১৯৮৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কবিতার বই ‘লৌকিক কবিতা’। এরপর ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘পাশে ছিল বনভূমি’ ও ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয় তাঁর তৃতীয় কবিতার বই ‘সাদা কাগজের ঘর’। তিনি ২০০৯ সালে ‘ইমদাদুল হক হীরা মিয়া স্মারকগ্রন্থ’ সম্পাদনা করেন। এছাড়া ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমির ‘ বাংলাদেশের লোকজসংস্কৃতি গ্রন্থমালা: জামালপুর’ গ্রন্থের প্রধান সমন্বয়কারী ছিলেন। লিটল ম্যাগ ‘শব্দ-নৈঃশব্দ্য’ ও শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক পত্রিকা ‘নবপ্রকাশ’ ছিল তাঁর সম্পাদিত পত্রিকা।
তাঁর মৃত্যুতে জামালপুর কবিতা পরিষদসহ জামালপুরের কবিসাহিত্যিক ও সংস্কৃতি অঙ্গনের ব্যক্তিরা গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন।
পিবিএ/বিএইচ