সর্বোচ্চ বেতন বিশ্বের যে ১০ দেশে

পিবিএ: হিসাবরক্ষক বা অ্যাকাউন্ট্যান্ট কাজকে পৃথিবীর সবচেয়ে মজাদার কিংবা আনন্দদায়ক কাজ বলা না গেলেও বলা যায় এটি একটি লাভজনক পেশা। আপনি যদি সংখ্যা নিয়ে খেলতে ভালোবাসেন তবে অ্যাকাউন্ট্যান্ট পেশাটি আপনার জন্যই। কিন্তু বাংলাদেশে বসেই কি আপনি এই পেশায় সফলতা অর্জন করতে পারবেন? আপনার স্বপ্নের ক্যারিয়ার গড়তে হলে তবে কোথায় পাড়ি জমাতে হবে এই নিয়ে ভাবছেন? মোট ১০টি দেশ সম্পর্কে আলোচনা করছি, যেখানে একজন অ্যাকাউন্ট্যান্ট পাবেন তার সর্বোচ্চ স্বীকৃতি ও সম্মানী-

অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণ
অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে সরকার।

ইতালি : (পারিশ্রমিক প্রায় ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, প্রতি বছরে)
ইতালির মাতৃভাষা আয়ত্ত করতে হবে যদি আপনি এই দেশে পাড়ি জমাতে চান। শুধুমাত্র ইতালিই নয় নিজের দেশ ব্যতিত অন্য যে কোনো দেশে স্বাচ্ছন্দ্যমতো বসবাস করতে চাইলে সে দেশের ভাষা শিখে নেয়া উচিত। এতে নিজের পেশায় বিশেষ সুবিধা লাভ করা যায় এবং এর ফলে আপনি খুব সহজেই সে দেশের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারবেন।
ইতালিতে মোট তিনটি যোগ্যতা অনুসারে তারা অ্যাকাউন্টিং পেশাটিকে সাজিয়েছে। প্রথমটি হলো, অ্যাকাউন্টিং বিশেষজ্ঞ, দ্বিতীয়টি হলো, চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, লিগ্যাল অডিটর কিংবা আইনগত নিরীক্ষক। প্রত্যেকটি পোস্টেই প্রয়োজন অর্থনীতিতে
তিন বছরের স্নাতক ডিগ্রি এবং তিন বছরের প্র্যাক্টিক্যাল ট্রেনিং পরীক্ষা।

অস্ট্রেলিয়া : (পারিশ্রমিক প্রায় ২৮ লাখ, প্রতি বছরে)
আপনি যদি আপনার অ্যাকাউন্টিং পেশার জন্য অস্ট্রেলিয়া পছন্দ করে থাকেন তবে আপনি সঠিক পথেই এগোচ্ছেন। ২০১৪ থেকে ২০১৯ এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় চাকরির সুযোগ পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশ্বের সেরা ন্যূনতম মজুরির দেশ হিসেবে এই দেশকে বিবেচনা করা হয়। মোট তিনটি পেশাজীবী সংগঠন দ্বারা অস্ট্রেলিয়ার অ্যাকাউন্টিং ইন্ডাস্ট্রি নিয়ন্ত্রিত ও স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। এই তিনটি সংগঠন হলো, সিপিএ অস্ট্রেলিয়া, দি ইনস্টিটিউট অব চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব অস্ট্রেলিয়া এবং দি ইন্সটিটিউট অব পাবলিক অ্যাকাউন্ট্যান্টস।

অস্ট্রিয়া : (পারিশ্রমিক প্রায় ২৬ লাখ ৬ হাজার টাকা প্রতি বছরে)
একজন চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে হলে প্রয়োজন পর্যাপ্ত শিক্ষা। এই শিক্ষা অর্জনের স্থান কিন্তু এই দেশ, অস্ট্রিয়া। অস্ট্রিয়ায় পড়াশোনা শেষ করে এখানেই নিজের কর্মক্ষেত্র তৈরি করাও বুদ্ধিমানের কাজ। অর্থনীতি এবং আইন বিষয়ে পড়াশোনার জন্য সাধারণত অস্ট্রিয়াকে প্রথম সারির দেশগুলোর মাঝে স্থান দেয়া হয়। পড়াশোনা শেষে অন্তত তিন বছর শিক্ষানবিস হিসাবরক্ষক হিসেবে কাজ করতে হবে। অথবা সেভিংস ব্যাংক অডিটিং অ্যাসোসিয়েশন অনুমদিত অডিটিং অফিসে একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট অডিটর কিংবা অডিটর হিসেবে কর্মদক্ষতা দেখাতে হবে। অথবা পর্যাপ্ত শিক্ষা বা ডিগ্রি অর্জনের পর ট্যাক্স পরামর্শদাতা হিসেবে পেশাদারী পরীক্ষায় পাস করতে হবে সে সঙ্গে চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে দুই বছরের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে।

জার্মানি : (পারিশ্রমিক আনুমানিক ২৯ লাখ ২৩ হাজার টাকা প্রতি বছরে)
অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে জার্মানিতে রয়েছে বিভিন্ন পথ। যদিও প্রথমত শিক্ষার্থীরা সর্বপ্রথম একজন ট্যাক্স এডভাইসার হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করেন। ট্যাক্স এডভাইসার নির্বাচনি পরীক্ষাকে এই দেশের সবচেয়ে কঠিন ও মর্যাদাপূর্ণ পেশাদারী পরীক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

ফিনল্যান্ড : (পারিশ্রমিক আনুমানিক ২৯ লাখ ৩৭ হাজার টাকা প্রতি বছরে)
ফিনল্যান্ডে মূলত দুইটি পথ রয়েছে একজন অ্যাকাউন্ট্যান্ট হওয়ার লক্ষ্যে আসা ছাত্রের জন্য। অডিটর হিসেবে, সেন্ট্রাল চেম্বার অব কমার্স অনুমোদিত এবং অডিটর হিসেবে, আঞ্চলিক চেম্বার অব কমার্স অনুমোদিত। একজন অডিটর পদে নিয়োগ পেতে প্রয়োজন অর্থনীতি, আইনে অথবা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের মাস্টার্স ডিগ্রি। সর্বনি¤œ তিন বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং সে সাথে উত্তীর্ণ হতে হবে এর পেশাদারী পরীক্ষায়। অন্যদিকে একজন অডিটরের ক্ষেত্রে ব্যাপারগুলো একটু সহজ।

যুক্তরাজ্য : (পারিশ্রমিক আনুমানিক ৩৫ লাখ ৩২ হাজার টাকা প্রতি বছরে)
যুক্তরাজ্যে অ্যাকাউন্ট্যান্টদের বেশ মূল্যায়ন করা হয়। শুধু তাই নয় যুক্তরাজ্যের অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে একজন অ্যাকাউন্ট্যান্ট যেকোনো দেশে কোটি টাকাও পারিশ্রমিক পেতে পারেন প্রতি বছরে।
যুক্তরাজ্যে একজন অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে কাজ শুরু করতে হলে অঈঈঅ, ওঈঅঊড, অওঅ অ^বা ঈওগঅ এর যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। পেশাদারী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য গণিত ও ইংরেজি অন্তর্ভুক্ত অন্তত দুটি ‘এ’ লেভেল এবং তিনটি ঈেঝঊ এর প্রয়োজন হবে। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি দ্রুত হবে যদি অর্থনীতি কিংবা হিসাববিজ্ঞান অন্তর্ভুক্ত থাকে শিক্ষাগত যোগ্যতায়।

যুক্তরাষ্ট্র: (পারিশ্রমিক আনুমানিক ৩৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রতি বছরে)
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি হিসাব মতে ২০১৪ হতে ২০২৪ এর মধ্যে অ্যাকাউন্ট্যান্ট ও অডিটরের চাকরিক্ষেত্রে ১১ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। প্রায় ১ লাখ ৪২ হাজার পোস্ট ইতিমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ অ্যাকাউন্ট্যান্ট পদের জন্য হিসাববিজ্ঞানে স্নাতক কিংবা সমতুল্য ডিগ্রি চাওয়া হয়। কিন্তু অধিকাংশ পদপ্রার্থী মাস্টার্স ডিগ্রি নিয়েও আবেদন করে থাকেন যার ফলে চাকরি লাভের হার বৃদ্ধি পায়।

দক্ষিণ কোরিয়া : (পারিশ্রমিক প্রায় ৩৬ লাখ ৩৮ হাজার টাকা প্রতি বছরে)
দক্ষিণ কোরিয়া একমাত্র দেশ যার অবস্থান এশিয়ার সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকদাতা দেশের মধ্যে রয়েছে। একজন সরকারি অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে নিজের স্থান পাকা করতে হলে সর্বপ্রথম ফিনানশিয়াল সার্ভিস কমিশন হতে লেভেল ১ ও লেভেল ২, দুটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হলে হিসাববিজ্ঞানে ২৪ ক্রেডিট অথবা ১২ ক্রেডিট হিসাববিজ্ঞানে, ৯ ক্রেডিট ব্যবসায়ী শিক্ষায় এবং ৩ ক্রেডিট অর্থনীতিতে প্রয়োজন হবে। এই পরীক্ষা শেষে এবং কাক্সিক্ষত ফলাফল লাভ করার পরেই পাওয়া যাবে ঈচঅ সার্টিফিকেট। ১ বছর অভিজ্ঞতা অর্জন অথবা কোরিয়ান ইন্সটিটিউট অব সার্টিফাইট পাবলিক অ্যাকাউন্ট্যান্টস দ্বারা পরিচালিত ১০০ ঘণ্টা ট্রেনিং নেয়া শেষে একজন অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ায় কাজ করার সুযোগ পাবেন।

পিবিএ/জেআই

আরও পড়ুন...