শেষ পাঁচ ওভারে জয় পেতে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ৪১ রান। অর্থাৎ জয় তখনই নিশ্চিত করে ফেলেছিলেন ফিল সল্ট ও জনি বেয়ারস্টো। রোমারিও শেফার্ডের করা ১৬তম ওভারে তিনটি করে চার-ছক্কায় সল্ট নিলেন ৩২ রান। ফলে আর কোনো সন্দেহ রইল না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের করা ১৮০ রান সহজেই টপকে গেল গ্রুপ পর্ব পেরোনো নিয়ে শঙ্কায় থাকা ইংল্যান্ড। সবাইকে বার্তা দিয়ে জস বাটলারের দল জয় পেল ১৫ বল এবং ৮ উইকেট হাতে রেখেই।
ইংল্যান্ড গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন। তবুও এবার গ্রুপপর্ব পেরোতেই তাদের স্কটল্যান্ডের সঙ্গে সমীকরণের মারপ্যাঁচে পড়তে হয়েছিল। বিপরীতে দুর্দান্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ সুপার এইটে উঠেছিল চার ম্যাচের সবকটিতে অপরাজেয় থেকে। তার আগে অস্ট্রেলিয়াকে ওয়ার্মআপ ম্যাচ এবং তিন ম্যাচের সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হোয়াইট করা উইন্ডিজদের বড় দুর্বলতা বোলিং। স্পিনবান্ধব উইকেটে আকিল হোসেন ও গুদাকেশ মোতিরা ভালো করলেও, স্পোর্টিং উইকেটে তাদের দুর্বলতা কেমন সেটাই দেখাল ইংলিশরা।
সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন সামি স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে উইন্ডিজরা ৪ উইকেটে ১৮০ রান সংগ্রহ করেছিল। চলমান বিশ্বকাপের নিরিখে যাকে চ্যালেঞ্জিং স্কোরই বলা চলে। কিন্তু আলজারি জোসেফ ও আন্দ্রে রাসেলরা সেই রান ডিফেন্ড করতে ব্যর্থ হয়েছেন। চার–ছক্কার বাউন্ডারিতে তাদের নাজেহাল করেছেন সল্ট, বেয়ারস্টো ও মঈন আলিরা। ফলে ১৭.৩ ওভারেই দুই উইকেট হারানো ইংলিশরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। তাদের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৭ রান করেছেন সল্ট, বেয়ারস্টো করেন ৪৮ রান।
ক্যারিবীয় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ঠিকঠাকই করেছিল ইংল্যান্ড। ওপেনিংয়ে বাটলার–সল্ট জুটিই এনে দেয় ৬৭ রান। এর মধ্যে পাওয়ার প্লেতে উঠেছে ৫৮ রান। রোস্টন চেজের করা এক ফ্ল্যাট ডেলিভারিতে এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে এলবিডব্লু হন বাটলার। এর আগে ইংলিশ অধিনায়কের ইনিংস আক্রমণাত্মক ছিল না, ২২ বলে করেছেন ২৫ রান। মাঝে মঈন আলিও (১০ বলে ১৩) ক্রিজে এসে আউট হয়ে যান। ২০২৩ সালের মার্চের পর প্রথমবারের মতো তিনে খেলতে নেমেছিলেন এই বোলিং অলরাউন্ডার। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ইংলিশদের আর পেছনে তাকাতে দেননি সল্ট-বেয়ারস্টো। দুজন মিলে গড়েন ৯৭ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি।
তবে এই জুটির শুরুতে সল্ট ছিলেন দর্শক হয়ে, আরেকপ্রান্তে ঝড় তোলেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার বেয়ারস্টো। আকিলের করা ১৫তম ওভারে তিনি ১৬ রান করেন। পরের ওভারেই তার পথ ধরে শেফার্ডের ছয় বলেই বাউন্ডারি হাঁকান বেয়ারস্টো। শেষ পর্যন্ত দুজনেই ছিলেন অপরাজিত। সল্ট হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন ৩৮ বলে, শেষ পর্যন্ত ৪৭ বলে ৭টি চার ও পাঁচটি ছক্কায় ৮৭ রান করে ম্যাচসেরাও হয়েছেন। অন্যদিকে, বেয়ারস্টো ২৬ বলে ৫টি চার ও ২ ছক্কায় করেন ৪৬ রান।
উইন্ডিজদের হয়ে একটি করে উইকেট নিয়েছেন রোস্টন চেজ ও আন্দ্রে রাসেল।
এর আগে টস হেরে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরুর পরও ক্যারিবীয়রা হোঁচট খায় ওপেনার ব্রেন্ডন কিং রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ওঠে যাওয়ায়। মাঝে ধীরগতির ব্যাটিংয়ের পর শেষে ঝড় তুলেছেন অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল (১৭ বলে ৩৬) ও শেরফান রাদারফোর্ডরা (১৫ বলে ২৮)। তাতে স্বাগতিকরা ৪ উইকেট হারিয়ে ১৮০ রানের পুঁজি পেয়ে যায়।