বুধবার মধ্যরাত থেকেই জানা সাকিব নিরাপত্তাজনিত কারণেই আসছেন না। বুধবার রাত ৮টা পর্যন্ত সব ঠিক থাকলেও রাত বাড়ার সাথে সাথে সাকিব ইস্যুটা অন্যরকম হতে থাকে। সাকিবের কাছে খবর চলে যায়, তিনি যেন ঢাকার গ্রিন সিগন্যাল ছাড়া দেশে না ফেরেন।
ঢাকায় তার কুশপুত্তুল দাহ করা হয়েছে। তার ঢাকা টেস্ট খেলা নিয়ে প্রতিবাদ হচ্ছে। মুহুর্মুহু স্লোগানে মুখর শেরে বাংলার আশপাশ। ব্যানার, ফেস্টুনে সয়লাব হোম অফ ক্রিকেটের গেটের বাইরের রাস্তা।
এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির খবর সাকিবের কাছে দুবাইতে গেল কিভাবে? তিনি কিভাবে জানলেন, ঢাকায় তার বিরুদ্ধে মিছিল হচ্ছে। তিনি যাতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঢাকা টেস্ট না খেলেন, সেটাই চায় ছাত্র-জনতা।
শেষ পর্যন্ত জানা গেল অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতেই সাকিবকে ঢাকায় আসতে ‘না’ করা হয়েছে। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া স্বয়ং বিসিবিকে সে নির্দেশনাই দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর এক বিবৃতিতে ক্রীড়া উপদেষ্টা জানান, তিনিও চেয়েছেন সাকিব দেশের মাটিতেই অবসর নিক এবং সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছিল; কিন্তু জনগনের ক্ষোভের কারণেই শেষ পর্যন্ত সাকিবকে আসতে না করা হয়েছে।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমি নিজেও চেয়েছি, সাকিব আল হাসানের মতো একজন ক্রিকেটার দেশের মাটিতে অবসর নিক। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে। তবে, প্রথম দিকেই বলেছি সাকিব আল হাসানের আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের সাথে সংশ্লিষ্টতার কারণে জনমনে ক্ষোভ রয়েছে। যা স্বাভাবিক।’
‘রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করাসহ জনমনের ক্ষোভ নিরসনে তিনি ফেসবুক পোস্ট দিলেও সাম্প্রতিক প্রতিবাদে প্রতীয়মান হয়েছে যে তা যথেষ্ট ছিল না। যারা প্রতিবাদ করছে তাদেরও তা করার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে।’
ক্রীড়া উপদেষ্টা আরও বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশের মধ্যকার সিরিজটা নির্বিবাদে আয়োজন এবং কোনোরকম অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতেই শেষ মুহূর্তে সাকিবকে ঢাকা আসতে না করে দেয় হয়েছে।
তাই তিনি বলেন, ‘কোনপ্রকার অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতেই আপাতত তার (সাকিবের) দেশে খেলতে আসার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করে বিসিবিকে পরামর্শ দিতে হয়েছে।’
আসিফ মাহমুদ আরও জানান, আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে গিয়েই সাকিবকে না আসার কথা বলা হয়েছে। তাই তার শেষ কথা, ‘খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার আশু ব্যবস্থা হিসেবেই এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তবে সকলেরই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত বলে মনে করি। কোন অভিযোগ থাকলে আইনি প্রক্রিয়ার আশ্রয় নিয়েই তার সমাধান খোঁজা যেতে পারে।’