সারাদেশে ১৬ লাখ চালকের লাইসেন্স নেই

Barishal Accident- PBA
বাস দুর্ঘটনা। ফাইল ছবি

পিবিএ ডেস্ক: বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে এখন পর্যন্ত গাড়ির লাইসেন্স দেয়া হয়েছে ৩৮ লাখ। ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়েছেন মাত্র সাড়ে ২২ লাখ চালক। সেই হিসেবে প্রায় সাড়ে ১৬ লাখ চালক কোনো লাইসেন্স ছাড়াই গাড়ি চালান।

ফিটনেসবিহীন গাড়ি এবং অবৈধ-অদক্ষ ও অপ্রশিক্ষিত চালকরাই মূলত সড়কে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়াও রুটের অনুমতি না নিয়ে বাস চালানোসহ অন্যান্য পারিপার্শ্বিক অবস্থা এবং আইন প্রয়োগের সমস্যাসহ বেশকিছু কারণে সড়কে দুর্ঘটনা কমছে না।

ফলে সড়কে এক প্রকার পাল্লা দিয়ে দুর্ঘটনা, প্রাণহানি এবং আহতের সংখ্যা বাড়ছে। বড় বড় ঘটনার পর জনতা ফুঁসে উঠলে কয়েকদিন সংশ্লিষ্টদের টনক নড়ে। ইস্যু থেমে গেলে ফের ফিরে যায় পুরনো চেহারায়।

সড়কে নৈরাজ্যের সর্বশেষ দৃষ্টান্ত হয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি। শুক্রবার সকালে রাজধানীর বনানীতে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে একটি যাত্রীবাহী বাস ধাক্কা দেয় এই সংসদ সদস্যের গাড়ি। ওই ঘটনায় মেনন প্রাণে বেঁচে গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার গাড়িটি।

ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা আফজাল হোসেন পিবিএ’কে জানান, দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বাসের চালক আমানউল্লার কোনো লাইসেন্স নেই। বাসটির ফিটনেস সনদ নেই । এমনকি বাসেরও রেজিস্ট্রেশনসহ অন্য কোনো কাগজপত্র নেই। একইদিন দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৩ জন ।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান পিবিএ’কে বলেন, পরিবহন খাতে বিশেষ করে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় বেশকিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হচ্ছে বিদ্যমান আইন ও বিধির প্রয়োগ। আমরা কমিটি গঠন করে দিয়েছি।

ওই কমিটি কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে গত বৃহস্পতিবার সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভা হয়েছে। সভায় বেশকিছু সুপারিশ এসেছে, যা আগামী ২৭ মার্চের পরবর্তী সভায় চূড়ান্ত হবে। তখন বেপরোয়া বাস চালনা বন্ধসহ সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় দৃশ্যমান ফলাফল পাওয়া যাবে।

পরিবহন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, চুক্তিতে বাস চলায় ঢাকার সড়ক বেশি প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে। এটা আশু বন্ধ করা দরকার। কেননা যখন কোনো চালক বাস চুক্তিতে নেয় তখন তাকে খরচ তুলে লাভের মুখ দেখার চিন্তা করতে হয়।

একটি বাসে দৈনিক এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকা কেবল চাঁদার খরচই আছে। এর মধ্যে আছে, সকালে পথে নামতে গেট পাস (জিপি) ১০০ টাকা, যে কোম্পানির অধীনে বাস চলে, তার নাম ব্যবহারের জন্য ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। এছাড়া আছে টার্মিনালভিত্তিক সমিতির নির্দিষ্ট অঙ্কের চাঁদা। অনেক সময় পথ খরচের নামে ঘুষ দিতে হয় ট্রাফিককে।

আর মালিককে চুক্তি হিসেবে দৈনিক দেড় থেকে দুই হাজার টাকা জমা দিতে হয়। এর বাইরে তেল বা গ্যাস খরচ এবং কন্ডাক্টর ও হেলপারের খরচও চালককে দিতে হয়। সুতরাং বেতনভিত্তিক পরিবহন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

পিবিএ

আরও পড়ুন...