পিবিএ,ঢাকা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদকে খোঁজা হচ্ছে। তাকে আত্মসমর্পণ করতে হবে, অন্যথায় গ্রেফতার করা হবে। তার বিদেশ যাওয়ার সুযোগ নেই।
রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
‘সাহেদ এখন কোথায় আছেন’ জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথম কথা সাহেদ কোথায় সেটা সাহেদ জানে। আমাদের পুলিশ এবং র্যাব সে (সাহেদ) কী ধরনের অন্যায় করেছে সেগুলো ইনকোয়ারি করছে। তদন্ত রিপোর্ট আসলে আমি আপনাদের জানাতে পারব তার অন্যায়ের গভীরতাটা কতটুকু।’
তিনি বলেন, সে যে অন্যায় করেছে তার জন্য ইতোমধ্যে র্যাব ব্যবস্থা নিয়েছে। তাকে খোঁজা হচ্ছে। সে যেখানেই থাকুক তাকে আত্মসমর্পণ করতে হবে, না হয় পুলিশ তাকে ধরে ফেলবে।
‘সে বিভিন্ন পত্রিকা বের করার অনুমতি নিলে সেক্ষেত্রে সিটিএসবি (নগর পুলিশের বিশেষ শাখা) রিপোর্ট দেয়। সেক্ষেত্রে একটা দুর্বলতা ছিল কি-না। তাছাড়া অভিযোগ রয়েছে, উত্তরা থানা সবসময় তাকে শেল্টার দিয়ে আসছিল। এগুলো আপনারা আমলে নিচ্ছেন কি-না’- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমাদের এ উদ্ঘাটনের পর কেউ তাকে শেল্টার দেয়নি। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী তাকে ধরেছে। সে কী করেছে সেগুলো র্যাব ও পুলিশ তদন্ত করছে। তাকে অবশ্যই আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসব।’
‘সে কি দেশে আছে নাকি বাইরে চেলে গেছে’ এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের বাইরে যাওয়ার তো কোনো উপায় নেই। তার পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে, বর্ডার যাতে ক্রস করতে না পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা খুঁজছি। আশা করি, শিগগিরই তাকে ধরতে সক্ষম হবো।’
নানা অনিয়ম, প্রতারণা, সরকারের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ, করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট, চিকিৎসায় অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের প্রধান কার্যালয়, উত্তরা ও মিরপুর শাখা সিলগালা করে দিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এরপর থেকে গাঢাকা দিয়েছেন হাসপাতালের মালিক সাহেদ। সাহেদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে র্যাব। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ।
সাহেদ নিজেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য বলে পরিচয় দিতেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সাহেদ একসময় বিএনপি করতেন। এছড়া বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে তার তোলা ছবি ভেসে আসছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ নিয়ে চলছে নানামুখী আলোচনা- সমালোচনা।
গত ৬ জুলাই উত্তরায় রিজেন্ট হাসপাতালে র্যাবের অভিযানে নানা অনিয়মের সত্যতা পাওয়া যায়। পরে সেখান থেকে আটজনকে আটক করে র্যাব হেফাজতে নেয়া হয়।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৭ জুলাই) রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় ১৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়। এতে সোমবার রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা শাখা থেকে আটক আটজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এছাড়া রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদসহ ৯ জনকে পলাতক আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা ও আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার নামে প্রতারণা করা রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মো. সাহেদের পাসপোর্ট জব্দ করেছে তদন্তকারী দল। হদিস মিলেছে তার বিরুদ্ধে আরও ২৩ মামলার। মোট ৫৬টি মামলার আসামি প্রতারক সাহেদ।
পিবিএ/এসডি